এখন শুনবেন আজ নয় সেপ্টেম্বরের স্নরণে ভয়েস অফ এ্যামেরিকার সম্পাদকীয় বিভাগের একটি বিশেষ প্রতিবেদন-এ্যামরিকার জনগনের মন মানসিকতা-আদর্শের প্রতিফলন রয়েছে এতে।
আজ শুক্রবার ১১ই সেপ্টেম্বর। আজ থেকে চোদ্দ বছর আগে দু’হাজার এক সালের এই দিনটিতে নারী-পুরুষ শিশুসহ ৯০টিরও বেশি দেশের প্রায় তিন হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছিলো যে সন্ত্রাসী হামলায়- সে হামলায় সন্ত্রাসীরা ছিনতাই করা যাত্রি বিমান নিয়ে আঘাত হেনেছিলো নিউ ইয়র্ক সিটির ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে-চড়াও হয়েছিলো ওয়াশিংটন ডি সি’র উপকন্ঠবর্তী প্রতিরক্ষা দফতর পেন্টাগনের কার্যালয়ে। চতুর্থ আরেকটি যাত্রি বিমান সন্ত্রাসীদের তৎপরতায় বিধ্বস্ত হয় পেনসেলভেনিয়ার একটি শষ্যক্ষেত্রে। ছিনতাইকারিরা যে আরেকটি লক্ষস্থলে আঘাত হানতে চাইছে এটা জানতে পেরে বিমানের যাত্রিরা তাদের ঐ কূ অভিসন্ধিতে বাধা দিয়েছিলো। ঐ একটা দিনেই সারা দুনিয়াটাই যেন বদলে গিয়েছিলো।ওটা কেবলই তিন হাজার প্রাণ বিনাশের কারণেই নয়-বা যুক্তরাষ্ট্রের ওপর আঘাত হানা হয়েছিলো তার জন্যেও নয়- বরং একদল সন্ত্রাসী যথেচ্ছভাবে অসামরিক জনগোষ্ঠীর ওপর উপর্যুপরি আঘাত হানার কথা যে চিন্তা করতে পেরেছিলো সেজন্যেই।ঐদিন যাঁরা প্রাণ হারিয়েছিলেন বয়স নির্বিশেষে তাঁরা ছিলেন বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী আর ভিন্ন ভিন্ন ধর্ম সম্প্রদায়ের মানূষজন।ঐ সন্ত্রাসীদেরকে দেবার কিছুই ছিলোনা তাঁদের-তাঁদের হত্যাকারিদের কোনোই অনিস্ট-কোনোই ক্ষতি করেন নি তাঁরা।তাঁদেরকে সেদিন প্রাণ দিতে হয়েছিলো এ কারণে যে, সভ্য জগতজুড়ে সেই যে ত্রাসের সৃষ্টি হয়েছিলো তার বিপরিতে রুখে দাঁড়ানোর অবস্থা-সামর্থ তাঁদের বড়ো একটা ছিলোনা সেদিন।
আর সে কারণেই বাকি বিশ্বের মানব সমাজসহ যুক্তরাষ্ট্র আজ রুখে দাঁড়াচ্ছে – সর্বত্র, ঐ সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে- রুখে দাঁড়াচ্ছে মুক্তি-স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের সমর্থনে , ঘৃণা-বিদ্বেষ ও অবদমনের বিকল্প হিসেবে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতর এবং তাবত এ্যামেরিকার গণমানুষের মন মানসিকতাকে ঝলসিয়ে দিয়েছে ১১ সেপ্টেম্বরের ঐ দিনটি। দু’ হাজার একের ঐ দিনটিতে প্রাণ হারান যাঁরা সেই নারী পুরুষ শিশুর স্মরণে সমবেতভাবে আমরা শ্রদ্ধা জানাই—বলেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরী- তাঁর লিখিত এক বিবৃতিতে।
বন্ধূ-হিতৈশি নির্বিশেষে সব্বারই এটা অনুধাবন করতে হবে, সন্ত্রাসী কখনোই যুক্তরাষ্ট্রকে চোখ রাঙ্গাতে পারবেনা-ভয় দেখাতে পারবেনা।অনেক দু:খযাতনার কারণ ঘটাতে পারবে তারা হয়তোবা- কিন্তু কখনোই তারা আমাদের ইস্পাত কঠিন সংকল্পকে হতোদ্যম করতে পারবেনা- লক্ষভ্রস্ট করতে আমাদের পারবেনা তারা।দেশে-বিদেশে, এ্যামেরিকানরা যেখানেই থাকুক দু:খ-বিষাদে সবাই আমরা একাত্মা-একই চিন্তার অধিকারি।দু:খ-যাতনা আমাদেরকে আরো সজাগ করে তোলে-শুধু ১১ সেপ্টেম্বরই নয় প্রতিটা দিনই আমাদের দৃপ্ত সংকল্প আরো মজবুত-আরো ইস্পাত কঠিন হয়ে ওঠে।