ফরাসি নির্বাচনে অনেক নাটকীয়তা অপেক্ষা করছে। ভোটের প্রাথমিক গতিধারা দেখে রাষ্ট্র বিজ্ঞানীরা এমন ধারণাই করছেন। রিচার্ড ক্লেস্কমেজি ফ্রান্সের একজন প্রখ্যাত রাষ্ট্র বিজ্ঞানী। তিনি বলছিলেন, বিপুল সংখ্যক ভোটার সিদ্ধান্তহীন থাকার কারণে বিপদের আশঙ্কাই করা হচ্ছে। আমরা জানি না আসলে কি হতে যাচ্ছে। আসলে এটা একটি লটারির টিকিটের মতো। আর সেই টিকিট যদি হন ম্যারিন লি পেন।
কড়া নিরাপত্তার মধ্যে সকাল আটটা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। রাত আটটায় শেষ হবে। ১১ জন প্রার্থী। চার কোটি ৭০ লাখ ভোটার। জরুরি অবস্থার মধ্যেই নির্বাচন হচ্ছে। ৫০ হাজার পুলিশ আর সাত হাজার সেনা সদস্য টহল দিচ্ছেন। বড় ধরণের গোলযোগের খবর নেই। তবে বেলা দেড়টার সময় বেসনকন নামের একটি কেন্দ্রে অল্প সময়ের জন্য ভোট গ্রহণ স্থগিত ছিল। একটি গাড়ি নিয়ে দুই যুবক পোলিং স্টেশনে ঢুকে পড়েছিল। নিরাপত্তা কর্মীদের উপস্থিতির কারণে তারা গাড়ি রেখে পালিয়ে যায়। গাড়ির ভেতর থেকে একটি রাইফেল উদ্ধার করা হয়েছে।
এবারের নির্বাচনের ইস্যু ছিল দুটি। বেকারত্ব আর নিরাপত্তা। বেকারত্বের হার হচ্ছে ১০ ভাগ।জঙ্গি হামলা নিরাপত্তা ইস্যুটিকে সামনে নিয়ে এসেছে। আর এটা লুফে নিয়েছেন ন্যাশনাল ফ্রন্ট নেত্রী ম্যারিন লি পেন। তিনি বরাবরই অভিবাসন বিরোধী। ইউরোপ থেকে বেরিয়ে আসার ব্যাপারেও তার অবস্থান পরিস্কার।
প্যারিসের উত্তরে একটি কেন্দ্রে ভোট দেয়ার পর লি পেন বলেন, সব বিদেশীরাই সন্ত্রাসী হিসেবে চিহ্নিত। তাই এদেরকে ফ্রান্স থেকে তাড়াতে হবে। তিনি বলেন, এরা এক একটি বোমা। এই বোমা আমাদের দেশে রাখব কেনো? তিনি মসজিদ বন্ধ করার কথাও ঘোষণা করেন।
ফ্রান্সের রাজনীতি বরাবরই বাম আর মধ্যপন্থির মধ্যে সীমাবদ্ধ। ‘ফার রাইট’ নয়া চ্যালেঞ্জ ছুড়েছে। আধুনিক ফরাসি ইতিহাসে এই নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ব্রেক্সিটের ফলাফলের মধ্যেই অনুষ্ঠিত মার্কিন নির্বাচনে ট্রাম্পের জয়লাভের পর অনেক পর্যবেক্ষক একমত হন যে এর ঢেউ গোটা ইউরোপে আছড়ে পড়তে পারে। ব্রেক্সিট ও মার্কিন নির্বাচনের পর সবার দৃষ্টি এখন ফ্রান্সের নির্বাচনের দিকেই।