অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

১১ই সেপ্টেম্বর টুইন টাওয়ার হামলার স্মৃতিতে এখনও শিউরে ওঠেন প্যারামেডিক মোতাছিম বিল্লাহ


বাংলাদেশী আমেরিকান প্যারামেডিক মোতাছিম বিল্লাহ
বাংলাদেশী আমেরিকান প্যারামেডিক মোতাছিম বিল্লাহ

আমেরিকার ইতিহাসে ১১ই সেপ্টেম্বর এক মর্মান্তিক দিন। আজ থেকে প্রায় দুই দশক আগে ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর জঙ্গি সংগঠন আল-কায়েদার সঙ্গে জড়িত ১৯জন জঙ্গী চারটি উড়োজাহাজ ছিনতাই করে যুক্তরাষ্ট্রের তিনটি জায়গায় আত্মঘাতী হামলা করেছিল। নিউইয়র্কের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার বা টুইন টাওয়ার, পেন্টাগন এবং পেনসিলভানিয়ায়। এই ঘটনায় মোট ২ হাজার ৯৯৬ জন নিহত হন যার মধ্যে ১৯ জন হামলাকারী অন্তর্ভুক্ত। ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে দুটি বিমান হামলায় মারা যান ২ হাজার ৭৬৩ জন। আটকে পড়া লোকজনকে উদ্ধার করতে গিয়ে ৩৪৩ জন উদ্ধারকর্মী এবং ৬০ জন পুলিশ সদস্য প্রাণ হারান। ঐ চারটি হামলায় ৭৮টি বিভিন্ন দেশের মানুষ নিহত হন।যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন পার্ল হার্বার আক্রমণের পর এই একমাত্র আক্রমণ। টুইন টাওয়ার আক্রমণের ঘটনায় আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দানকারীদের প্যারামেডিক টিমের মধ্যে ছিলেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মোতাছিম বিল্লাহ। ঐ সময় তিনি মেট্রো কেয়ারের প্যারামেডিক ছিলেন,বর্তমানে তিনি এম্বুল্যানজ Ambulnz কোম্পানির সঙ্গে কর্মরত। ১১ই সেপ্টেম্বরের সেই মর্মান্তিক দিনের কথা তিনি স্মরণ করলেন ভয়েস অফ আমেরিকার সঙ্গে।

ভয়েস অফ আমেরিকার পক্ষ থেকে এ সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন তাহিরা কিবরিয়া।

ভয়েস অফ আমেরিকাঃ ১১ই সেপ্টেম্বর ২০০১ সালে আমেরিকার বুকে বিংশ শতাব্দীর সম্ভবত সবচেয়ে বর্বরোচিত আক্রমণ ঘটেছিল। নিউইয়র্ক সিটির দুইটি আইকনিক ভবন টুইন টাওয়ার ধ্বংস হয়ে যায়। সেদিনের ঘটনায় প্যারামেডিক টিমের সঙ্গে প্রাথমিক চিকিৎসা দান করেছিলেন আপনি। সেই সময়কার কিছু কথা বলবেন কি?

মোতাছিম বিল্লাহঃ২০০১ সনে, দিনটি ছিল মঙ্গলবার। আমার অফ ডে। সকালে আমার আম্মার ডাকে ঘুম ভাঙ্গে। তিনি ঢুকে বলেন টিভি অন করতে। ঠিক একই সময় আমার তখন নেক্সটেল ফোন ছিল... ওটাতে (কল করেন) আমার সুপার ভাইজার জেরেড রিং। সে আমাকে বলল যে, "আমারা সবাই ডাউন টাউনে চলে আসছি তুমি চলে এসো।" So, আমি তাড়াতাড়ি কাপড় পরলাম বোধ হয় ইউদিন দুই মিনিটসে ঘড় থেকে বেরিয়া আসতেছি--- আমার মাকে শুধু বললাম “আমি তোমাকে পরে ফোন করে জানাব।” আমি তখন জামাইকা থাকতাম, কুইন্সে। ওখান থেকে ম্যানহ্যাটেনে গেলাম। রাস্তাতো প্রায় খালি, তখন সব ব্রিজ এবং টানেল going to Manhattan ব্লক করে দেয়া হইছে শুধু মাত্র এমার্জেন্সি ভেহেকেলস ছাড়া এবং এমার্জেন্সি রেস্পন্ডারদের ছাড়া। তো আমরা যখন ঢুকলাম ফার্ষ্ট আমি যাই Vassey and ওয়েস্ট পর্যন্ত। তখন অলরেডি প্রথম টাওয়ারটা পড়ে গেছে। তারপর সেকেন্ড টাওয়ার আমি যাওয়ার পর পড়ে।এটা ওখানে না থাকলে আমি এটি বলব যে বোঝানো সম্ভব না... এরকম দিন যেন আর দেখতে না হয়।

ভয়েস অফ আমেরিকাঃ তো আপনি যখন পৌঁছালেন তার পরপরই আপনার চোখের সামনেই দ্বিতীয় টাওয়ারটি ধ্বসে পড়ল... তো ঐ সময় মানুষের কী অবস্থা ছিল বা আপনার নিজের মনের অবস্থাই বা কী ছিল? কী অনুভূতি তখন হয়েছে আপনার?

মোতাছিম বিল্লাহঃ অবিশ্বাস্য মনে হয়েছে,বুঝে উঠতে পারছি না যে এটা রিয়ালিটি নাকি দুঃস্বপ্ন! না আর ভয়,প্রাণের জন্য যেটা আছে সেটা আমাদের ট্রেইনিং-করার সময়... We are being trained in a different way. আমরা তখন সেবায় ব্যস্ত ছিলাম যে কাকে হেল্প করা যায়। আমরা যারা ফার্ষ্ট রেস্পন্ডার থাকি পুলিশ বলেন, ফায়ার ম্যান বলেন, বা এমার্জেন্সি মেডিক্যাল সার্ভিসেস--- যারা কাজ করি প্যারামেডিক্সস ইএমটিস,আমাদের কাজের মধ্যে একটা ট্রেনিং করে দেয়া হয় যে ঐ সময়টা মনে থাকে না। যখন কাজ শেষ করে আসি তখন বলি ওরে বাবারে এটা কেমন করে করলাম আমরা। কিন্তু ঐ সময়টায় We just act.আমি যেটা বলব যে ঐ ভাবে আমরা আসলে চিন্তা করি না। আমাদের চিন্তাটা থাকে যে কিভাবে সেবা করা যায়।

আসলে প্রথমত যে জিনিষটা হচ্ছিল সেটা হচ্ছে যে ঐ মানুষগুলোকে ঐ এরিয়া থেকে ইভাকুয়েট করা হচ্ছিল। ওখান থকে সরিয়ে নেয়া হচ্ছিল। আমরা যেটা করি লাইফ চেইনের মত সবাই দাঁড়িয়ে যাই। মানুষ যাতে আপ-টাউনের দিকে যেতে পারে... তো যেই হাঁটতে পারছে আমারা এগিয়ে দিচ্ছি যারা হাটতে না পারছে আমরা ধরে একটু এগিয়ে দিচ্ছি। যখন ফার্ষ্ট টাওয়ারটা পরে যায় যখন আমরা দেখেছি একটা বিরাট একটা ধোঁয়ার কুণ্ডলীর মত। জিনিষটা ধোঁয়া ঠিক না কারণ ওর মধ্যে বালু রোবো এভ্রিথিংঙ্ক মিশানো ছিল। শ্বাস নেওয়াটা ছিল কষ্টকর।

যেমন আমরা গেছি। যেমন আমি গেছি আমার পার্সোনাল ভেহেকেল নিয়ে এবং অনেকে সাথে সাথে চলে গেছেন যেখানে যারা ছিলেন। আমরা তো apparatus use করি না, কাছে থাকে না ফায়ার এপারেটাস, যেটা ব্রিদিং এপারেটাস যেটা রেস্পিউটার।আমাদের কাছে সেটা ছিল না যার জন্য আমাদের শ্বাস নিতে কষ্ট শুরু হয়েছিল। তারপরে আমরা যেটা করেছি যে...কেউ যদি আহত হয়ে থাকে(তাদের) প্রাথমিক চিকিৎসা করে দিয়ে হয়তো ব্লিডিং কন্ট্রোল করতে হয়েছে বা কারু হাত পা ভেঙ্গেছে বা মচকেছে তো দৌঁড়াতে পারছে না তাদেরকে যতটুকু হেল্প করা যায়।এগিয়ে দেয়া towards the staging area. প্রথমে খুব কেয়োটিক ছিল। কারণ আমরা তো কোনো সময় ওভাবে এক্সপেক্ট করি নাই। মানুষের স্রোত বলা যায়--- সেটা হ’লো যে সবাই তখন আপটাউন মুখি যতটুকু ওখান থেকে বেড়িয়ে আসতে পারে। আর আমাদের যারা ফার্ষ্ট রেস্পন্ডার ছিল, আমাদেরকে গাইড করা হচ্ছে ভেতরে যাওয়ার জন্য। ঐ দিকটাতে, যাতে তাদের হেল্প করে বার করে আনা যায় বা আমাদের পাশাপাশি যে ফায়ারম্যানরা ঢুকেছে খুব ইয়াং বয়সী ছেলেরা তারা তো অবশ্য বিল্ডিং-এর উপরে উঠেছে ইভাকোয়েট করার জন্য তারা বেড়িয়ে আসতে পারে নাই। ঐ দিনটা খুব খারাপ গেছে।যখন সেকেন্ড টাওয়ারটা পড়ে যায় আমরা প্রায় বিল্ডিংটার একশ ফুটের কাছাকাছি চলে যাই tosee if there is any survivor। পড়ার পরে,আমি তো তখন নর্থ সাইডে ছিলাম আইল্যান্ডের--- সো ঐ সময় Vassey andWest থেকে তিন ব্লকের মত। তো ফার্ষ্টটা যখন পড়ে যায় তখন বাতাসের জন্য দম নিতে পারছিলাম না।

ভয়েস অফ আমেরিকাঃ আচ্ছা,আপনারা কতজন প্যারামেডিক,চিকিৎসাকর্মী বা পুলিশকর্মী প্রাথমিক ভাবে সেদিন কাজ করেছিলেন এবং উদ্ধার কর্মীদের অনেকেই প্রাণঘাতী পরিস্থিতির শিকার হয়েছিলেন---- এই ঘটনাটি এভাবে মনে করানোর জন্য ক্ষমা চাইছি।

মোতাছিম বিল্লাহঃ থ্যাঙ্কইউ আপনার কন্সিডারেশনের জন্য। যেটা করা হয়,ইমিডিয়েটলি প্রায় তিনশ'র মত ফার্ষ্ট রেস্পন্ডারসকে এসাইন করা হয়। তারপরে সেটা বাড়তে থাকে। একজ্যাক্ট এমাউন্ট বলা যাবে না কারণ আমরা যারা অফ ডিউটি ছিলাম আমরা ওখানে গিয়ে রিপোর্ট করি। At a certain point, আমি বলব যে মনে করেন সাড়ে ১০টার মধ্যে প্রায় ১ হাজারের উপরে উদ্ধার কর্মী একসাথে হয়। পুলিশ,ফায়ার এবং এএমএস মিলে প্রায় তিনশ জন মারা গেছে। উনারা বেড়িয়ে আসতে পারেন নাই। আমরা যারা বাইরের দিকে ছিলাম চেষ্টা করেছি তাদের খুঁজতে কিন্তু যখন বিল্ডিং ধ্বসে পড়ে যায়। Therewas nothing to bedone because এত বড় বড় bolder যা হাত দিয়ে তো সরাতে পারবেন না। So we had to wait to get বড় বড় apparatus, cranes... stuff ওগুলা সরানোর জন্য। আর তারপরে তো শুধু লাশ-ই-লাশ। আর তো কিছু পাওয়া যায় নাই। আমি যার সাথে আগের সপ্তাহে বৃহস্পতিবারে কাজ করছি, শনিবার কাজ করেছি আমার এক ক্লাসমেট ছিল সেও মারা গেছে। ফ্রেন্ডরা ছিল, মারা গেছে।

ভয়েস অফ আমেরিকাঃ নিউইয়র্ক সম্পর্কে বলা হয় যে শহরটি ২৪ ঘণ্টা জেগে থাকে। তো এরকম একটা শহরে এই ধরণের একটা মর্মান্তিক ঘটনার পর ঐ শহরের সার্বিক পরিস্থিতি কেমন ছিল?

মোতাছিম বিল্লাহঃ সার্বিক পরিস্থিতি?জিনিষটা আপনাকে এভাবে বলতে হবে। দুপুর ১২টার পর থেকে সম্পূর্ণ এরিয়া ক্রাইম সিন হিসেবে বলে দেয়া যায়... it was a crimescene। এক নম্বর, চারদিকে পুলিশ লোহার বেষ্টনী তুলে দেয়। দুই নম্বর, রেগুলার সাবওয়ে, ট্যানেলস, রাস্তা ঘাটে extreme caution-এর জন্য আরো পাহারা বসানো হয়। ঐদিন যেটা বলব যে যুদ্ধের মত একটা অবস্থা। কারণ আমরা বুঝে উঠতে পারছিলাম না যে ঐ দু’টোই কি শেষ অ্যাটাক না আরও হবে? সুতরাং আমাদের যেরকম উদ্ধার কাজও চলছিল--- হ্যাঁ, আপনি যে কথাটি বললেন আয়রনিকালি--- আমরা সত্যি ২৪ ঘণ্টা জেগে ছিলাম ঐ সময়।নিউইয়র্ক জেগে ছিল, নিউইয়র্ক জেগে থাকে উৎসব মুখরভাবে।সেদিন আমরা উৎসব মুখরভাবে জেগে ছিলাম না। আমরা ছিলাম,More defensive চিন্তাধারাতে। সবাইকে সব জায়গায় চেক করা হচ্ছে, গাড়ি চলছে না রাস্তায় যেহেতু সাবওয়ে এবং বাস বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। --- আপনারা তো জানেন যে ম্যানহ্যাটেনে ২০ থেকে ৩০ লাখ মানুষ অন্যান্য বোরোর থেকে কাজে আসে। By ten o’clockমনে করেন ১০-১৫ লাখ মানুষ এসেছেন কাজে,কিন্তু ব্যাক করার কোন উপায় ছিল না।

অনেকে হেঁটে অনেকগুলো ব্রিজ পার হয়েছেন। যেমন ব্রুকলিন ব্রিজ পার হয়ে অনেকে হেঁটে ওখান থেকে আবার কোন ভাবে কুইন্সে গেছেন--- এরকম ঘটনাও ঘটছে।

ভয়েস অফ আমেরিকাঃ বাংলাদেশি আমেরিকান এবং একজন মুসলমান হিসেবে প্রবাসীরা কীভাবে এই ঘটনার সাথে নিজেদের মানিয়ে নিয়েছিলেন?আপনার নিজের কী মনে হয়েছিল?

মোতাছিম বিল্লাহঃ কিছুটা Islamaphobiaছিল। এ বলব না যে এটা হয় নাই। আমরা নিউইয়র্কে তো পাঁচ মিশালী মানুষ থাকি এবং We respect each other.Personally আমার উপরে সেরকম প্রভাব আমি দেখি নাই। আমি যেটা মনে করছিলাম যে হয়ত আমার কোলিগস,আমি যাদের সঙ্গে কাজ করি They might look at me in a different way কিন্তু আমি দেখেছি যে আসলে ওরা ওটা করে নাই। I was very fortunate about it. আমার সাথে যারা বেশিরভাগ কাজ করতেন--- আমার সাথে Jews ছিলেন, Catholic ছিলেন। Basically that day we proved that we are Americans. তবে হ্যাঁ কিছু মানুষ আছেন, এটা আপনি যেকোন দেশেই যান হাতে গোনা কয়েকজন তো থাকেই। পাঁচ আঙ্গুল তো আর সমান না। তবে ইন জেনারেল যে জিনিষটি হয়েছে যেমন আমি একটা জিনিষ আপনাকে বুঝিয়ে বলি, এই ঘটনার সাথে সাথে ইউদিন থ্রী আওয়ার্স প্রতিটি মসজিদে একটা করে পুলিশের গাড়ি পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। মসজিদের সামনে। যাতে কিনা মসজিদের উপর কোন আক্রমণ না আসে। So,I have to give kudosto George Pataki, Governor at that time, Rudi Giuliani, Mayor at that time. তারা যেভাবে জিনিষটাকে হ্যান্ডেল করেছে, যে অপারেশনগুলো করা হয়েছে বা রেসকিউ অপারেশন---শুধু তাই না তারা সব দিকে খেয়াল রেখেছেন। এবং হ্যাঁ, কিছু কিছু ঘটনা ঘটেছে very isolated, very isolated.

ভয়েস অফ আমেরিকাঃ আপনি কি মনে করেন যে সেই দিনটি সম্পর্কে আরও বেশি লোকের জানা উচিত?

মোতাছিম বিল্লাহঃ জানা উচিত বলতে কি ইতিহাস এক নম্বর আর দুই নম্বর,আপনার ঐ ভাবে চিন্তা করতে হবে যে ২০০১ সনের ঘটনা যার তুলনা করা যায় সেটা হলো পার্ল হার্বার। যেখানে প্রায় তিন হাজারের মত নাবিক এবং সোলজাররা মারা যান। আর এটা তো আরও বলবো খারাপ,বলবো এই জন্য আমি ঠিক বাংলা শব্দটা পাচ্ছি না, নিন্দনীয় খারাপ। এখানে সিভিলিয়ানদের মারা হয়েছে এবং অনেক ফার্ষ্ট রেস্পন্ডার্স তারা মারা গেছেন। জিনিষটা এভাবে দেখেন যে আরেক বারের ঘটনা দিয়ে আমরা কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে প্রবেশ করছি। এবারের ঘটনাতে আমরা আরও অনেক বেশি আক্রান্ত হয়েছি। আমাদের কয়েক বছর লেগে গেছে ২০০১ সালের ঘটনাটার শোকটা কাটিয়ে উঠতে। কয়েক বছর পর্যন্ত ঐ ডাউন টাউন এরিয়াটা সম্পূর্ণ বন্ধ ছিল। যেটা আপনি বলেছেন একটু আগে,“যে ২৪ ঘণ্টা জেগে থাকে” ---সেখানে জেগে থাকছে শোকের প্রদীপ জ্বালিয়ে। কারণ জাস্ট rubble-গুলি সরাতে এবং রাবলের ভেতর থেকে আপনি যে একটা যে ফুলবডি It was very hard to find এই যে আমাদের এই সময়টা গেছে --- ঐ যে আপনি বললেন না যে ভয় এটা তখন আমাদের থাকে না। তবে এটার এফেক্ট খুব খারাপ থাকে । কী হচ্ছে বা কী বলছেন,আপনি কী চিন্তা করছেন সেটা 'আপনি' আর থাকে না। আপনি শুধু কাজ করে যাচ্ছেন। You just have to have it done. হ্যাঁ--- এটা বলব যে আফটার মেথ থেকে যায়। আমি এখনও স্তূপ করা গার্বেজ দেখলে--- কালো ব্যাগগুলা আছে না, স্তূপ করা থাকে ঐ রকম দেখলে আমি ফ্রিজ হয়ে যাই। হাঁটতে পারিনা। কারণ ঐ সময় মানুষদেরকে যখন পাওয়া গেছে ঐ ভাবে রাখা হয়েছে।

গ্রাউন্ড জিরো ওয়াজ ভেরি বীভৎস। এই একটা শব্দই ব্যবহার করা যায় There was no other word. কোনো খাওয়া নাই-দাওয়া নাই ঐ জায়গাতে আমরা যখন কাজ করছি একটানা ১৪ ঘণ্টা পানি পর্যন্ত ঐ জায়গায়ে পাওয়া যচ্ছিল না। Weare just working.

আমার এক বন্ধু ছিল। মজার ছেলে, ইয়াং ছেলে ছিল তখন। কলেজ থেকে মেডিক্যাল স্কুলে ভর্তি হবে। এ অবস্থাতে ছিল। আমাদের কাজ করতো মেট্রো কেয়ারে এবং আমার মনে হয় বোধ হয় মাস খানেক আগে অগাস্টের দিকে কাজ ছেড়ে দেয়। কারণ স্কুলে যাবে। ও চলে এসেছিল, off duty ছিল। কিন্তু ও আর বের হতে পারে নাই। ওকে আমরা--- ওর মা-বাপ খুঁজছিল তার দুই তিনদিন পরে আমরা খুব চিন্তাতে ছিলাম যে কোথায় ছিল। ছেলেটা মুসলিম। খামদানি ওর নাম ছিল। Believe he was a Pakistani descendent. তখন আমার মনে আছে যে একটা কথা উঠেছিল যে ওতো মুসলিম, ওকি সেই সাথে জড়িত আছে কিনা? একটা রিউমার উঠছিল এক সময়। কিন্তু আমি দেখেছি এখানকার পুলিশ অফিশিয়াল, এখানকার এফবিআই and they were so courteous and generous. তারা ঐগুলাতে পাত্তা দেয় নাই। They did their investigation---ইনভেস্টিগেশন তো করতেই হবে।কিন্তু, They were notin a certain way--- একটা মুখ ফসকে যে একটা রুড কথা বলবে সেটা বলে নাই। এসে জিজ্ঞেস করেছে,আমাদের সবাইকে জিজ্ঞেস করেছে ঐ ছেলেকে যে যে চিনত।But after like four days we found his body. চারদিন পরে তখন ওরাই বলেছে, “আমরা বলছিলাম না যে আমাদের ইনভেস্টিগেশনে বলছে যে ও রেস্কিউ কাজে ছিল। এবং ওর জানাযা নিউ ইয়র্ক পুলিশ কমিশনার এটেন্ড করেছেন।"

ভয়েস অফ আমেরিকাঃ আজ দুই দশক পরে বর্তমান প্রজন্ম এই আক্রমণকে কিভাবে স্মরন করে?

মোতাছিম বিল্লাহঃ এখানে এভাবে হয়,যেরকম স্কুল-কলেজেতো এ সমস্ত ব্যাপারে আলাপ তো হয়ই, সেমিনার হয়।এখানে ৯-১১ মেমোরিয়াল ডে-তে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট যেই থাকুক না কেন সে তো সম্মান প্রদর্শন করতে আসেন টুইন টাওয়ারে।এবং ছোট করে হোক, বড় করে হোক মোটামুটি সব বোরোতেই অনুষ্ঠান করা হয়, আনুষ্ঠানিক ভাবে তাদেরকে স্মরণ করা হয়।আমাদের এখানে ব্রোংসে,আমরা নিজেরা একটা অনুষ্ঠান করি, গত বছরও করেছিলাম।এখনে ফায়ার, ইএমএস,পুলিশ ডিপার্টমেন্ট,এখানকার ইলেকশন অফিশিয়ালস, তারা সবাই এসে সম্মান জানান, শোক জানান ঐ দিনে। এইভাবে আমরা স্মরণ করি এই দিনটাকে।

ভয়েস অফ আমেরিকাঃ ১১ই সেপ্টেম্বর নৃশংস হামলায় যারা প্রাণ হারিয়েছেন নিউইয়র্কের টুইন টাওয়ারে এবং ভার্জিনিয়ার পেন্টাগনে তাদের স্মরণ করছি এবং যারা ঐ হামলার শিকার হয়েছেন তাদেরও স্মরণ করছি শ্রদ্ধাভরেমোতাছিম বিল্লাহ আমাদের সময় দেয়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ

মোতাছিম বিল্লাহঃআপনাদেরও ধন্যবাদ।একটা কথাই বলবো,ভাল থাকেন, বেঁচে থাকেন এবং এই যে বেঁচে থাকাটা, এক সেকেন্ডও বেঁচে থাকা সেটাকে উপলব্ধি করেন। এবং নিজেকে এবং সবাইকে ভালবাসেন।

ভয়েস অফ আমেরিকাঃ ধন্যবাদ

XS
SM
MD
LG