অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

যাদেরকে গুম করা হয়েছে, তারা নিজ এলাকাতে খুবই ভালো সংগঠক ছিলেন- মায়ের ডাকের সানজিদা ইসলাম


মায়ের ডাক আয়োজিত এক প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখছেন সমন্বয়ক সানজিদা ইসলাম তুলি
মায়ের ডাক আয়োজিত এক প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখছেন সমন্বয়ক সানজিদা ইসলাম তুলি

“ঢাকাসহ বাংলাদেশের সবখানে দেখেন, যাদেরকে তুলে নেয়া হয়েছে, গুম করা হয়েছে, যাদেরকে খুন করা হয়েছে, তারা নিজ নিজ এলাকাতে খুবই ভালো সংগঠক ছিলেন। আর তাদেরকে টার্গেট করেছে এবং এ মানুষগুলোকে আমরা পাচ্ছি না। শুধুমাত্র ক্ষমতায় থাকার জন্য, 'ফ্যাসিবাদ' প্রতিষ্ঠা করার জন্যে এ সরকার তা করেছে। বাংলাদেশের রাজনীতি কখনোই এমন ছিলো না,” আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে ভয়েস অফ আমেরিকা বাংলার সাথে সাক্ষাৎকারে গুমের শিকার পারিবারদের সংগঠন মায়ের ডাক-এর সমন্বয়ক সানজিদা ইসলাম তুলি একথা বলেন।

সানজিদা ইসলাম তুলি গুমের শিকার পরিবারের গড়ে তোলা সংগঠন মায়ের ডাকের একজন সমন্বয়ক। তিনি একই সঙ্গে মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের কার্যনির্বাহী পরিষদের একজন সদস্য। কাজ করেছেন জাতিসংঘের ওয়ার্কিং গ্রুপ অফ এনফর্সড ডিসএপিয়ারেন্স । প্রায় ১৯ বছর টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে দেশি ও বহুজাতিক সংস্থায় কাজ করার পাশাপাশি গত ১০ বছর ধরে মানবাধিকার কার্যক্রমের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত হয়েছেন এবং একই সঙ্গে কাজ করে চলেছেন গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বন্ধের দাবিতে।

তার ভাই সাজেদুল ইসলাম সুমন ২০১৩ সালের ডিসেম্বর মাসে ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে নিখোঁজ হওয়ার পর তাকে খুজে পেতে তাদের পরিবারের যে সংগ্রাম সেই সংগ্রামে তিনি কাজ করেছেন ক্রীড়ানক হিসাবে।

ভয়েস অফ আমেরিকার পক্ষ থেকে সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন মো মুক্তাদির রশীদ।

ভয়েস অফ আমেরিকা: মায়ের ডাক কি এবং কেন এ আন্দোলন?

সানজিদা ইসলাম তুলি: মায়ের ডাক একটি প্ল্যাটফর্ম ( মঞ্চ)। যে প্ল্যাটফর্মটির প্রত্যেক সদস্য ক্ষতিগ্রস্ত। অর্থাৎ, প্রত্যেকটি পরিবারের কোনো না কোনো সদস্য গুমের শিকার হয়েছে অথবা বাংলাদেশের আইন শৃঙ্খলাবাহিনী তুলে নিয়ে গেছে। অর্থাৎ এটি গুমের শিকার পরিবারগুলোর একটা প্লাটফর্ম, এই মায়ের ডাক। আমরা দক্ষিন আমেরিকার আর্জেন্টিনায় গুমের শিকার সন্তানদের জন্যে যে মায়েদের আন্দোলন গড়ে উঠেছিলো, তারই ভাবধারা নিয়ে আমরা এ সংগঠনটির নাম দিয়েছি 'মায়ের ডাক'। সমগ্র বাংলাদেশে যারা গুমের শিকার বা যতগুলো পরিবার, যাদের সন্তানদেরকে বা যাদের পরিবারের সদস্যদেরকে গুম করা হয়েছে এবং গুমের পরবর্তী সময়ে যারা বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছে, অথবা ফিরে এসেছে তাদের বা তাদের পরিবারকে নিয়ে এই প্ল্যাটফর্ম করা হয়েছে।

ভয়েস অফ আমেরিকা: বাংলাদেশে তো গুমের ঘটনা নতুন নয়। তবে কেন আপনাদের আন্দোলন এ গড়ে ওঠছে? এর কী কোন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে?

সানজিদা ইসলাম তুলি: ২০১৪ সালের নির্বাচন ঘিরে আমরা বহু সংখ্যক গুমের ঘটনা দেখতে পাই। যেটা অনেকটা গনহত্যার মতো ঘটনা । এতো সংখ্যক গুমের ঘটনা পূর্বে কখনো বাংলাদেশে এভাবে হয়নি। আগে ঘটনা ঘটেছে। তবে একটা, দুটা করে এসব ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু একসাথে এতটা নয়। এর আগে বিএনপির ঢাকা মহানগরের নেতা ও ঢাকা সিটি করপোরেশনের রমনা-শাহবাগ এলাকার সাবেক কমিশনার চৌধুরী আলম নিখোঁজ হয়েছেন। কিন্তু ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের পূর্ববর্তী যে বহু সংখ্যক গুম ও বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ডের মত ঘটনাগুলো ঘটেছে। এবং এই সংখ্যাটা ছিল অনেক। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে আমরা এমন ঘটনা আসলে দেখিনি এবং আশাও করিনি। সেই প্রেক্ষিতেই আসলে মায়ের ডাক, একটি প্ল্যাটফর্ম দাঁড় করানোর কাজ করে। এবং যদি বলেন যে, যারা গুমের শিকার তাদের অধিকাংশ বিরোধী রাজনৈতিক দলের সমর্থক অথবা কর্মী... এখানেই রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা চলে আসে। অন্যথায় এটা একটি প্লাটফর্ম যেখানে শুধুমাত্র ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যরা একত্রিত হয়ে সংগঠিত করেছে।

ভয়েস অফ আমেরিকা : আপনাদের জন্য এ আন্দোলনটা শুরু করাটা কেমন অভিজ্ঞতা ছিল?

সানজিদা ইসলাম তুলি : এই আন্দোলনটা শুরু হয় কারন যখন আমরা দেখতে পাই যে বাংলাদেশের কোন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে আমরা কোন ধরনের সাহায্য সহযোগিতা পাচ্ছিলাম না। এই রাষ্ট্র কর্তৃক এমন ঘটনা ঘটানোর কারণে যখন আমরা মামলা করতে যাই, যখন আমরা জিডি করতে চাই, উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হই, এবং প্রত্যেকটা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে আমরা আবেদন করি এবং সেটা বছরের পর বছর কোন সদুত্তর আসে না এবং কোনো তদন্ত হয়না বরং উল্টো যেমন হয় যে, এই ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে হয়রানি করা হয়। বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন ভাবে। তখন বাধ্য হয়ে আমাদেরকে এ ক্যাম্পেইন শুরু করতে হয়। কারন আমরা কোন সদুত্তর পাচ্ছিলাম না। জোরপূর্বক গুমের শিকার পরিবারের সদস্যদেরা, মায়েরা, তাদের স্ত্রীরা, বোনেরা আমরা সকলে মিলে এ প্ল্যাটফর্মে একসাথে কাজ করি। আমরা যখন প্রথমে দাঁড়াই, তখন ঢাকায় ১৯ জনের, যারা গুমের শিকার হয়, তাদের পরিবার এক সাথে করে আমরা এ প্রচারণা শুরু করি। সেটা দেখার পর সারা বাংলাদেশের যে সব ভুক্তভোগী পরিবার ছিলেন তারা আমাদের সাথে যোগাযোগ করেন। এবং নেটওয়ার্ক তৈরি হয়। সেই নেটওয়ার্ক ভিত্তিতেই আজ এতো দূর আমরা পৌঁছেছি।

ভয়েস অফ আমেরিকা : সরকার বা রাষ্ট্রীয় সংস্হাগুলো কি গুমের ঘটনার তদন্তে করছে বা করেছে? বিচারের সুযোগ সৃষ্টি করেছে?

সানজিদা ইসলাম তুলি : সরকার তদন্তের কোন উদ্যোগ নেয়নি। এমনকি কোন তদন্ত কমিটিও তারা করেননি। এত বছর যাবত তাদের নিয়ে যে প্রশ্নগুলো তুলে আসছেন, তাদেরকে সংখ্যাগুলো দিচ্ছেন, বাংলাদেশের যে সমস্ত মানবাধিকার সংগঠনগুলো আছে তার বাইরেও আন্তর্জাতিক যে সমস্ত মানবাধিকার সংগঠন রয়েছে তারা সরকারের কাছে এ বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তার পরেও কিন্তু গুম-খুনের যে ঘটনাগুলো রয়েছে তাতে সরকারের কোনো সদুত্তর নেই। কোন তদন্ত নেই। এতো বছরে আমরা যে জবাব পেয়েছি তা হতাশাজনক। আপনি যদি দেখেন, হিউম্যান রাইট ওয়াচ যে ৮৬জনের তালিকা করেছে সরকার তার কোন উত্তর দেয়নি। তদন্ত তো করিনি। ২০২২ জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার যে হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেট বাংলাদেশ সফরে করেছেন সেখানেও ৭৬ জনের তালিকা দিয়ে গেছেন সেই তালিকায় কোন সদুত্তর সরকার দেননি। এমনকি তদন্ত করেননি। এই জায়গাটাতেই বোঝা যায় আসলে সরকার কেন নিশ্চুপ। এই পরিবারগুলোর কাছে তাদের কোন উত্তর কেন নাই। এ দায়িত্ব তো সরকারেরই। এটাতো চরম গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন। এর থেকেও বড় মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা কোথা আছে কিনা আমরা জানি না। গুম এবং বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড যে অপরাধ এগুলো সরকার ও তার এজেন্সি দ্বারা সংগঠিত হচ্ছে। একারণেই আসলে আমরা সরকারের পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ দেখতে পাচ্ছি না। একারনেই জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো সরকারকে জবাবদিহিতার আওতায় নিয়ে আসছে। জানতে চাইছে, আসলেই মানুষ গুলো কোথায়। এবং এদেরকে যে সরকারের সংস্হা কর্তৃক তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, বিচারবহির্ভূত হত্যা করা হয়েছে, সেই ঘটনাগুলোর জবাবদিহির জায়গা কোথায়। সাধারণ জনগণের ট্যাক্সের টাকায় যে বাহিনী চলে তাদের তো জবাবদিহি জায়গা আছে।

ভয়েস অফ আমেরিকা : প্রায়ই শুনি সরকার আপনাদেরকে নিয়ে 'কটাক্ষ' করছে। যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতপিটার হ্যাস গত বছর ১৪ ডিসেম্বরে শাহীনবাগে, আপনাদের সাথে দেখা করতে গেলে সরকার দলীয় লোকজন, পুলিশ ও সরকার সমর্থিত মায়ের কান্না সেখানে অপ্রিতীকর ঘটনার সৃষ্টি করে। এরপর থেকে কি আপনারা কোন চাপ বোধ করছেন?

সানজিদা ইসলাম তুলি: সরকার কটাক্ষ করে এবং দায়িত্বশীল পদে থেকে অনেকে হাসি তামাশা করেন। আমাদের সাথে বিদেশী একজন রাষ্ট্রদূত দেখা করতে আসলে সেখানেও একটা অপ্রীতিকর ঘটনার সূত্রপাত হয়। এটা আমার সরকারের দায়িত্ব সম্মানিত একজন ব্যক্তির নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। কিন্তু ঐ জায়গাতেও সরকার শিথিল। তাদের বোধ কি কাজ করে না, যে সেখানেও তারা অরাজকতা সৃষ্টি করেছে। এবং তার রেসপন্স দেখেছেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য দেখেছেন। এমন সব অমানবিক কথাবার্তা উনাদের পক্ষে সম্ভব। কারন হচ্ছে, নিজেদের দোষটা যখন ঢাকতে চাচ্ছেন,এবং স্বীকার করছেন না। (নিখোঁজ) মানুষগুলো কোথায় তার জবাব দিতে পারছেন না, তাদের পরিবারের কাছে ফেরত দিতে পারছেন না। এবং তদন্ত করতে পারছেন না, কেননা তাদের দোষটা বের হয়ে আসবে।

ভয়েস অফ আমেরিকা: আপনাদের আন্দোলনের কি কোন সাফল্য দেখতে পাচ্ছেন? আপনাদের বিষয়ে কি আর্ন্তজাতিক সম্প্রদায়ের মনযোগ বাড়ছে?

সানজিদা ইসলাম তুলি: আমরা দেখতে পাচ্ছি যে গত দুই-তিন বছরে অবশ্যই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বাংলাদেশের প্রতি নজর বেড়েছে। কারন সরকার যে অসম্ভব অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে সেজন্য। এবং গুমের সংখ্যা অনেক বেশি হয় গেছে। গুম ও বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের সংখ্যা এটা কোন সহনশীলতার মধ্যে আর ছিলনা। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সম্পৃক্ততা বেড়ে গেছে, কারন এটা একটা ভীতিকর পরিস্থিতি এবং চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন। সে কারনেই আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর কাছে তাদের জবাবদিহি করতে হচ্ছে।

ভয়েস অফ আমেরিকা: আপনারা কি মনে করেন ভবিষ্যতে আপনার ন্যায় বিচার পাবেন? কী আশা করেন?

সানজিদা ইসলাম তুলি: আমরা মনে করি, যেভাবে আমরা চাই এমন তদন্তকারী সংস্থার গঠন করা হলে আমরা অবশ্যই আশা করি আমরা ন্যায়বিচার পাবো। অবশ্যই জাতিসংঘ এবং মানবাধিকার সংস্থাগুলোর সমন্বয়ে কোন কিছু আয়োজন হলে আমরা আশা করি বিচার পাবো৷ কেননা স্হানীয়ভাবে যারা আছেন তাদের উপরে কোন ধরনের বিশ্বাস বা আস্থা আমাদের নাই। কেননা তাদের দ্বারাই এই ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘের ঘটনা ঘটে বা অপরাধ কর্মকাণ্ড সংঘটিত হয়, সে সমস্ত সংস্থা বা ব্যক্তি দিয়ে কোন তদন্ত সম্ভব নয় বা তারা কোনো নিরপেক্ষ কোনো তদন্ত করবেন না। সেকারণেই আমরা চাই আন্তর্জাতিক তদন্ত হোক। যেমনটি জাতিসংঘ শ্রীলঙ্কায় করেছে। সেক্ষেত্রে আমরা প্রত্যেক ঘটনার বিচার পাবো। দেশটা আসলে মঘের মুল্লুক না যেটা সরকার এতোদিন ধরে বানিয়ে রেখেছে। আগামীতে দেশটাই এমন থাকবে না। আমরা সেই জায়গাটায় তো খুব শীঘ্রই দেখব যেখানে আমরা ন্যায়বিচার পাবো।

ভয়েস অফ আমেরিকা: সরকার বিরোধী প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি'র পক্ষ থেকে আপনাদের আন্দোলনে কী ধরনের সমর্থন পেয়েছেন? বা আদৌ কোন সমর্থন পেয়েছেন কি?

সানজিদা ইসলাম তুলি: আমাদের প্ল্যাটফর্মের যারা আছে সাথে যদি তাদের দেখেন, সব রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মী আছেন। তবে সেখানে বিএনপির সংখ্যাটা বেশি আমরা সে কারণেই বিএনপিকে আমাদের পাশে পাই। আরো অন্য দল বা সাধারন মানুষ যাদেরকে গুম করা হয়েছে বা খুন করা হয়েছে।

ভয়েস অফ আমেরিকা: গুমের সঙ্গে রাজনীতির সম্পর্কটা কোথায়?

সানজিদা ইসলাম তুলি: আপনি যদি দেখেন, যাদেরকে গুম করা হয়েছে, হয়তো নির্বাচনের পূর্বে এবং পরবর্তী সময়ে, তারা খুব বড় নেতা নন তবে তারা নিজ এলাকাতে, তাদের সমাজে খুবই পরিচিত মুখ এবং জনপ্রিয় মুখ এবং খুবই ভালো সংগঠক। এসমস্ত ব্যক্তিদের তারা লক্ষ্যবস্তুতে পরিনত করেছে। ঢাকাসহ বাংলাদেশের সবখানে দেখেন, যাদেরকে তুলে নেয়া হয়েছে, গুম করা হয়েছে, যাদেরকে খুন করা হয়েছে, তারা নিজ নিজ এলাকাতে খুবই ভালো সংগঠক ছিলেন। আর তাদেরকে টার্গেট করেছে এবং এ মানুষগুলোকে আমরা পাচ্ছি না। শুধুমাত্র ক্ষমতায় থাকার জন্য, 'ফ্যাসিবাদ' প্রতিষ্ঠা করার জন্যে এ সরকার তা করেছে। বাংলাদেশের রাজনীতি কখনোই এমন ছিলো না। সরকার থাকতো। বিরোধী দল থাকতো। আমরা এভাবেই দেখেছি। এভাবে দেখেই বড় হয়েছি। এইবারই দেখলাম, এই সরকার যখন থেকে ক্ষমতায় এসেছে, তারপর থেকে সে নির্বাচনের আগে বা পরে ফ্যাসিবাদ কায়েম করার জন্য এই ধরনের ঘটনা ঘটাচ্ছে।

ভয়েস অফ আমেরিকা: আপনাদের হিসেব অনুযায়ী বর্তমান সরকারের আমলে কতজন গুম হয়েছে? এর মধ্যে পরে কতজনের হদিশ পাওয়া গেছে? তার মধ্যে কতজন জীবিত, কতজন মৃত?

সানজিদা ইসলাম তুলি: আমরা অনেক আন্তর্জাতিক সংগঠনের সাথে একসাথে কাজ করি। যারা আমাদের সহায়তা করেন। আমরা আমাদের নেটওয়ার্কের গুমের শিকার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে তথ্য সংগ্রহ করি। আমরা বলি এ সরকারের সময় ৬৪৫ গুমের ঘটনা ঘটেছ । তবে মনে করি অনেক ঘটনা আছে যেগুলো করা আমাদের কাছে তথ্য আসেনি। সে সংখ্যা অন্তত তিনগুন।

XS
SM
MD
LG