অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

অ্যামনেস্টি বলছে, যুদ্ধ আর নতুন প্রযুক্তির প্রভাবে বিশ্বে আন্তর্জাতিক আইন হুমকির মুখে 


অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মহাসচিব অ্যাগনেস ক্যালামার্ড। ফটোঃ ২৪ এপ্রিল, ২০২৪।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মহাসচিব অ্যাগনেস ক্যালামার্ড। ফটোঃ ২৪ এপ্রিল, ২০২৪।

প্রযুক্তি ও কৃত্রিম মেধার দ্রুত উন্নতির মাধ্যমে আন্তর্জাতিক আইনের শাসনের ভাঙন ত্বরাণ্বিত হচ্ছে যা মানবাধিকার লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে “প্রবল” ঝুঁকিপূর্ণ। চলতি বছরের ২৪ এপ্রিলে প্রকাশিত অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের বার্ষিক প্রতিবেদনে এমনটাই বলা হয়েছে।

অ্যামনেস্টির মহাসচিব অ্যাগনেস ক্যালামার্ড ভিওএ-কে বলেন, “আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন বস্তুত ব্যাপকভাবে বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে ক্রমবর্ধমান সশস্ত্র সংঘাতের কারণে। অপরাধীরা শুধু আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনই করছে না, বরং আত্মরক্ষা, জাতীয় নিরাপত্তা বা সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলার নামে সেই লঙ্ঘনকে ন্যায্য প্রমাণ করতে চাইছে।”

গাজায় আইন লঙ্ঘন

অ্যামনেস্টি গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে সংঘাতের বিষয়টি তুলে ধরেছে। গাজার হামাস-পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, ৩৪ হাজারের বেশি মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। এদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। এই পরিসংখ্যানের মধ্যে নিহত হামাস যোদ্ধাদেরও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এই পরিসংখ্যান স্বতন্ত্রভাবে যাচাই করা যায়নি

প্রতিবেদন বলছে, “এটা এমন এক সংঘাত যা ২০২৩ সালকে প্রতিনিধিত্ব করে, যার থামার কোনও লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না এবং যেখানে যুদ্ধাপরাধের প্রমাণ বেড়েই চলেছে। ইসরায়েলের সরকার গাজায় আন্তর্জাতিক আইন নিয়ে মস্করা করছে।”

অ্যামনেস্টির ক্যালামার্ড বলেছেন, গাজার সংঘাত প্রত্যক্ষ করেছে “সর্বোচ্চ সংখ্যক সাংবাদিকের হত্যা এবং সর্বোচ্চ সংখ্যক মানবিক কর্মীদের হত্যা।”

নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ ভবন। ফাইল ফটোঃ ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৭।
নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ ভবন। ফাইল ফটোঃ ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৭।

জাতিসংঘ নিষ্ক্রিয়

অ্যামনেস্টির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের পশ্চিমা মিত্ররা রক্তপাত বন্ধ করতে ব্যর্থ হয়েছে। উল্লেখ করা হয়েছে, “জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে পঙ্গু করতে যুদ্ধবিরতির জন্য একান্ত প্রয়োজনীয় প্রস্তাবে কয়েক মাস ধরে যুক্তরাষ্ট্র তাদের ভিটো প্রয়োগ করেছে, এবং ইসরায়েলের শক্তি বাড়াতে তারা অস্ত্র দিয়ে চলেছে। এই অস্ত্র ব্যবহার করে যা ঘটানো হচ্ছে তা যুদ্ধাপরাধের সমতুল।”

যুক্তরাষ্ট্র বারবার ইসরায়েলের প্রতি তাদের সমর্থনের পক্ষে সওয়াল করেছে এবং জোর দিয়ে বলেছে যে, ৭ অক্টোবরে হামাসের সন্ত্রাসী হামলার পর তাদের মিত্রের আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে। এই হামলায় ১১০০-র বেশি মানুষকে হত্যা করা হয়েছে এবং গাজায় এখনও কয়েক ডজন জিম্মিকে আটকে রাখা হয়েছে।

ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণ

এই প্রতিবেদনে রাশিয়া কীভাবে ইউক্রেনে তাদের অবৈধ আক্রমণে ব্যাপক হারে মানবাধিকারের অপব্যবহার ও আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করছে তা তুলে ধরা হয়েছে।

পাশাপাশি “ঘন জনবহুল বেসামরিক এলাকা এবং বিদ্যুৎ ও খাদ্যশস্য রপ্তানি অবকাঠামোয় নির্বিচারে হামলা; যুদ্ধবন্দিদের নিগ্রহ বা তাদের সঙ্গে অন্যান্য দুর্ব্যবহারে”র কথাও তুলে ধরা হয়েছে এই প্রতিবেদনে। মস্কো এমন অভিযোগগুলিকে প্রত্যাখ্যান করেছে।

বৃহৎ প্রযুক্তি ও কৃত্রিম মেধা

অ্যামনেস্টি মানবাধিকারের অপব্যবহার ও কৃত্রিম মেধা বা এআই-সহ প্রযুক্তির ক্ষতিকর সন্নিবেশ সম্পর্কে সতর্ক করেছে।

প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, “এক ক্রমবর্ধমান অনিশ্চিত বিশ্বে জেনারেটিভ এআই, ফেসিয়াল রিকগনিশন ও স্পাইওয়্যারের মতো প্রযুক্তির অনিয়ন্ত্রিত বিস্তার ও ব্যবহার ক্ষতিকারক শত্রু হয়ে উঠতে পারে।”

অ্যামনেস্টি বলেছে, ২০২৪ সালে বিশ্বজুড়ে নির্বাচনে বিপুল সংখ্যক মানুষ ভোট দেওয়ার কারণে বিভিন্ন প্রযুক্তি উল্লেখযোগ্য ঝুঁকি তৈরি করছে

XS
SM
MD
LG