অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

ব্যাংক সঙ্কটঃ আইএমএফ অনাদায়ী ও ঝুঁকিপূর্ণ ঋণের পূর্ণাঙ্গ তথ্য প্রকাশের পরামর্শ দিয়েছে


আইএমএফ। প্রতীকী ছবি।
আইএমএফ। প্রতীকী ছবি।

জনস্বার্থে অনাদায়ী ও ঝুঁকিপূর্ণ ঋণের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংককে বিস্তারিত ও পূর্ণাঙ্গ তথ্য প্রকাশের পরামর্শ দিয়েছে ঢাকা সফররত আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) প্রতিনিধি দল।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, রবিবার (২৮ এপ্রিল) বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সফররত আইএমএফ প্রতিনিধি দল এ পরামর্শ দেয়।

বৈঠকে আইএমএফ ব্যাংকগুলোর আর্থিক অবস্থা ও পরিদর্শন প্রতিবেদন গ্রাহকদের জন্য উন্মুক্ত করতে বলেছে বলে বৈঠক সূত্র জানায়। একই সঙ্গে অনিয়ম-দুর্নীতি ও ঋণ কেলেঙ্কারি রোধে, পরিদর্শনের সংখ্যা বাড়ানোর তাগিদ দেয় প্রতিনিধি দল।

বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, বড় ধরনের ঋণ কেলেঙ্কারিসহ নানা অনিয়মের কারণে ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণ বা ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদ বাড়ছে। আর বেশ কয়েকটি ব্যাংক দুর্বল হয়ে পড়েছে বলে ইতোমধ্যেই স্বীকার করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর।

তাই সংকটে পড়া ব্যাংকগুলোতে মানুষের আমানত ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে বলে মনে করছে আইএমএফ। এমন পরিস্থিতিতে, ব্যাংকগুলোর ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন গ্রাহকদের সামনে প্রকাশ করার পরামর্শ দিয়েছে এই বৈশ্বিক ঋণদাতা সংস্থা।

আইএমএফ কর্মকর্তাদের মতে, এসব প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে গ্রাহক তাদের আমানত রাখার বিষয়ে সুচিন্তিত সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন।

বৈঠকে আইএমএফ ব্যাংকগুলোর আর্থিক অবস্থা নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিদর্শন অব্যাহত আছে কি না, তা জানতে চেয়েছে। পরিদর্শন প্রতিবেদনগুলো গ্রাহকদের কাছে প্রকাশ করা হয় কি না সে সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা চাওয়া হয়েছে।

সূত্রটি বলছে, অনিয়ম, দুর্নীতি ও ঋণ কেলেঙ্কারি রোধে গুণগত মান ও পরিদর্শনের সংখ্যা বাড়ানোর পরামর্শও দিয়েছে আইএমএফ প্রতিনিধি দল।

বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক বলেন, আইএমএফের সঙ্গে বৈঠক চলছে। আগামী ৮ মে পর্যন্ত ধাপে ধাপে এই বৈঠক চলবে। তিনি এর বাইরে অন্য কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে তিনি বলেন যে ভবিষ্যতে বিস্তারিত জানানো হবে।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক ঘোষণা দেন, “এখন থেকে ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করতে সাংবাদিকদের সুনির্দিষ্ট অনুমতি নিতে হবে। এর মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কোনো বিভাগে সাংবাদিকদের অবাধে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।”

বাংলাদেশ ব্যাংক সাংবাদিকদের প্রবেশের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশের বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠন।

আর, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) বলেছে, বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকারে বিধিনিশেষ আরোপ করা, একটি স্বেচ্ছাচারিতার ও গোপনীয়তার নিন্দনীয় উদাহরণ। এ ধরনের পদক্ষেপে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে টিআইবি। আর, জনস্বার্থে এমন বিধিনিষেধ অবিলম্বে প্রত্যাহারের আহবান জানিয়েছে।

XS
SM
MD
LG