অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

তাপপ্রবাহ: স্কুল-কলেজ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বন্ধ রাখাতে হাইকোর্টের নির্দেশ


গরমের কারণে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
গরমের কারণে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।

বাংলাদেশের ওপর দিয়ে বয়ে চলেছে তাপপ্রবাহ। প্রচণ্ড গরমের কারণে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বৃহস্পতিবার (২ মে) পর্যন্ত বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। তবে যেসব প্রতিষ্ঠানে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র রয়েছে, সেগুলো এই আদেশের বাইরে থাকবে।

বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ সোমবার (২৯ এপ্রিল) স্বপ্রণোদিত হয়ে এ আদেশ দেন।

যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এয়ার কন্ডিশনার রয়েছে এবং, বিশ্ববিদ্যালয় ও যেসব প্রতিষ্ঠানে 'ও' লেভেলের পরীক্ষা এবং পাবলিক পরীক্ষা রয়েছে সেসব প্রতিষ্ঠান এ আদেশের আওতাবহির্ভূত থাকবে।

সারাদেশে তাপ সতর্কতার মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পর শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ মানুষের মৃত্যু ও অসুস্থ হওয়ার খবরের বিষয়ে আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মনির উদ্দিন।

এরপর আদালত স্বপ্রণোদিত হয়ে এ আদেশ দেন।

এর আগে, তীব্র তাপ প্রবাহের মধ্যে রবিবার (২৮ এপ্রিল) থেকে, রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়। খুলে দেয়া হয় অন্যান্য বিদ্যালয়।

শনিবার (২৭ এপ্রিল) প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার মাহবুবুর রহমান তুহিন স্বাক্ষরিত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, চলমান তাপপ্রবাহের কারণে কোমলমতি শিশুদের স্বাস্থ্যঝুঁকি বিবেচনায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শিশুকল্যাণ ট্রাস্ট পরিচালিত প্রাথমিক বিদ্যালয় ও উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর লার্নিং সেন্টারগুলোয় শ্রেণি কার্যক্রম চালুর বিষয়ে কিছু সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

সিদ্ধান্তের মধ্যে রয়েছে, ২৮ এপ্রিল থেকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শ্রেণি কার্যক্রম চলমান থাকবে। ১ শিফটে পরিচালিত বিদ্যালয়গুলো প্রতিদিন সকাল ৮ থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত চলবে।

প্রজ্ঞাপনে আরো উল্লেখ করা হয়; ২ শিফটে পরিচালিত বিদ্যালয়গুলোয় ১ম শিফট সকাল ৮ টা থেকে সকাল সাড়ে ৯টা এবং ২য় শিফট সকাল পৌনে ১০টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত চলবে।

আর, প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণির কার্যক্রম পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বন্ধ এবং তাপদাহ সহনীয় পর্যায়ে না আসা পর্যন্ত অ্যাসেম্বলি বন্ধ থাকবে বলে প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়।

এদিকে, রবিবার থেকে মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজে ক্লাস শুরু হয়। এর আগে এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ থেকে সারাদেশে তাপপ্রবাহের কারণে ঈদুল ফিতরের পর ছুটি বাড়ানো হয়েছিলো।

তাপপ্রবাহ পরিস্থিতির পরিবর্তন না হলেও, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ায় অভিভাবকরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। বিশেষ করে প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা বেশি উদ্বিগ্ন।

ঈদের ছুটি শেষে, ২১ এপ্রিল স্কুল-কলেজ খোলার কথা থাকলেও, তীব্র তাপপ্রবাহ বিরাজ করায়, ছুটির মেয়াদ ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো হয়।

চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪৩ ডিগ্রি

সোমবার (২৯ এপ্রিল) চুয়াডঙ্গার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে ২০১৪ সালের ২১ মে ৪৩ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করে এই জেলার তাপমাত্রা। দশ বছর পর, তাপমাত্রা ৪৩ ডিগ্রিতে পৌঁছালো চুয়াডাঙ্গায়।

সেমাবার বিকাল ৩টায় তাপমাত্রা ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।তখন বাতাসের আর্দ্রতা ছিলো ১৩ শতাংশ।

এর মধ্যে গত ২৪ এপ্রিল মধ্যরাতে কালবৈশাখীর প্রভাবে ঝড়-বৃষ্টি হলেও কমেনি তাপমাত্রা। এপ্রিলের শুরুর দিকে তাপমান ছিলো ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রির মধ্যে। মাসের মাঝামাঝি থেকে ৪০-৪২ ডিগ্রি পার হয়ে যায়। অতি তীব্র তাপপ্রবাহ শুরু হয় জেলায়।

চুয়াডাঙ্গার প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ইনচার্জ জামিনুর রহমান জানান, আগামী দু-একদিন বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। তাপমাত্রা কিছুটা বাড়তে পারে বা একইরকম থাকবে।

এদিকে আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে যশোর ও রাজশাহী জেলায় অত্যধিক তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং খুলনা বিভাগ, টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, নওগাঁ, পাবনা ও নীলফামারী জেলার কোথাও কোথাও তীব্র তাপপ্রবাহ চলছে।

বরিশাল বিভাগ, ঢাকা, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের কিছু অংশ, ময়মনসিংহ, মৌলভীবাজার, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও বান্দরবান জেলায় মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।

আর্দ্রতা বেড়ে যাওয়ায় ভ্যাপসা গরম থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। রবিবার (২৮ এপ্রিল) দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো যশোরে ৪২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

XS
SM
MD
LG