ভারতের রাজধানী দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের অন্তর্বর্তী জামিনের আবেদন শুনতে পারে সুপ্রিম কোর্ট। মঙ্গলবার (৭ মে) এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটকে (ইডি) একথা জানিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত।

তবে, ভারতের শীর্ষ আদালত বলেছে, যদি তাকে জামিন দেয়া হয়, তাবে তিনি মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে সরকারি কোনো কাজ করতে পারবেন না। কেজরিওয়ালকে সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, “যদি আপনি জামিন পেয়ে সরকারি কাজ করেন, তাহলে জামিনের উদ্দেশ্য ব্যাহত হবে। আমরা সেটা হতে দিতে পারি না।”

আদালতের দৃষ্টিতে অরবিন্দ কেজরিওয়াল বর্তমানে মুখ্যমন্ত্রী এবং লোকসভা নির্বাচনে তার দলের পক্ষে প্রচার করা জরুরি। এই মামলা কোনো সাধারণ মামলা নয় এবং অভিযুক্ত কোনো সাধারণ অপরাধী নন; মনে করছে আদালত।

এর আগে, মঙ্গলবার কেজরিওয়ালের মামলার শুনানি স্থগিত করে সুপ্রিম কোর্ট। পরে, আগামী বৃহস্পতিবার (৯ মে) পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করে। অন্যদিকে, দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালত (বিচারিক আদালত) কেজরিওয়ালের জেল হেফাজতের মেয়াদ বাড়িয়েছে। বিশেষ বিচারক কাবেরী বাওয়েজা, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর কারা-হেফাজতের মেয়াদ ২০ মে পর্যন্ত বৃদ্ধি করেছেন।

দিল্লি আবগারি দুর্নীতি মামলায় ইডি গত ২১ মার্চ কেজরিওয়ালকে গ্রেফতার করে। তাকে চ্যালেঞ্জ করে আদালতে আবেদন জানান দিল্লির মূখ্যমন্ত্রী।

সুপ্রিমকোর্ট বেঞ্চ বলেছে, “মামলাটি অস্বাভাবিক অবস্থায় রয়েছে। পাঁচ বছর অন্তর সাধারণ নির্বাচন হয়। এটা চাষ করা নয় যে, চার থেকে ছয় মাসের মধ্যে আবার করা সম্ভব। তাকে অন্তর্বর্তী জামিনে মুক্তি দেয়া সম্ভব কিনা আমাদের অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে বিবেচনা করতে হবে।”

এদিকে, ইডির পক্ষে সংস্থাটির আইনজীবীরা বলছেন, এরকম ঘটলে তা ভুল নজির সৃষ্টি করবে। একজন রাজনীতিকের কোনো বিশেষ অধিকার নেই, যাকে সাধারণ মানুষ থেকে আলাদা করে দেখা হবে।

তারা প্রশ্ন তোলেন, যেসব লোকসভা সদস্য বা বিধায়কের বিরুদ্ধে বিচার প্রক্রিয়া চলছে, তাদের সবাইকে কি জামিনে মুক্তি দেয়া সম্ভব?

এরপর, আদালত অরবিন্দ কেজরিওয়ালের পক্ষে বর্ষীয়ান আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভিকে আম আদমি পার্টির প্রধানের পক্ষে ইডির প্রশ্নের জবাব দিতে বলেন। তার জবাব শোনার পর, আদালত তার জামিন শুনানির পক্ষে মত দেয়।

ইডির আইনজীবীরা আদালতে বলেছেন, দেশে প্রায় ৫ হাজার রাজনীতিকের বিরুদ্ধে বিচার চলছে। প্রচারের জন্য তাদের সকলকে কি জামিন দেয়া হবে। আর, অরবিন্দ কেজরিওয়াল ৬ মাসে ৯টি সমন এড়িয়ে গেছেন। ফলে তার গ্রেফতারির সময় নিয়ে প্রশ্ন তোলা যুক্তিসঙ্গত নয়, বলেন ইডির আইনজীবীরা।