অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

৫২ কোটি বছর পুরোনো চিংড়ী জাতীয় প্রাণীর জীবাশ্ম


আন্তর্জাতিক এক গবেষণা দল আবিস্কার করেছেন যে প্রায় ৫০ কোটি বছর আগে চিংড়ীর মতো দেখতে এক ধরণের প্রাণীর শরীরে কার্ডিওভাস্কুলার সিস্টেমের মতো হৃদযন্ত্র ও রক্ত চলাচলের জন্য শিরা ধমনী ছিল। ভয়েস অব আমেরিকার রোজান স্কারবেল এ বিষয়ে রিপোর্ট করেছেন।

দক্ষিন পশ্চিম চীনের ইউনান প্রদেশ বিপুল পরিমাণে জীবাশ্ম মজুদের শহর হিসাবে পরিচিত। গবেষকরা আশা করেন নাই, কোনো জীবাশ্ম এ্যাতো চমৎকারভাবে সংরক্ষিত অবস্থায় থাকতে পারে, যাতে ৫২ কোটি বছর পুরোনো চিংড়ী জাতীয় প্রাণীর অস্তিত্বের ধারণা মেলে এবং যা পাওয়া গেছে এখানে।

ইউনান ল্যাবোরেটরী ফর পেলিওবায়োলজি’র গবেষক পেইয়ুন কং এই জীবাশ্ম আবিস্কার করেছেন। ইউনিভার্সিটি অব আরিজোনার নিউরো-বিজ্ঞানী এবং টিম মেম্বার নিকোলাস ষ্ট্রসফেল্ড বলেন এটি সেই প্রাণীর রক্ত সঞ্চালন পদ্ধতির ধারণা দেয়।

তিনি বলেন, “জীবাশ্মটি একটি চমৎকার কার্বন অস্তিত্ব। এটি দ্বিপাক্ষিকভাবে সমপর্যায়ের। এতে পৃষ্ঠদেশের রক্ত সঞ্চালনের শিরা, এবং পাশের নালীর মত উপাদান, ধমনী এবং মস্তিস্ক পর্যন্ত সঞ্চালিত, যাতে ধমনীর অস্তিত্ব বোঝা যায়”।

একই ধরণের জীবাশ্ম নিয়ে পূর্বের গবেষণায় বিজ্ঞানীরা মস্তিস্ক, অন্ত্র ও নার্ভতন্ত্রের অস্তিত্ব পেয়েছিলেন।

ষ্ট্রসফেল্ড বলেন দাঁত, খোসা এবং হাড় দেখে সব জীবাশ্ম একই রকম লাগে। কারণ প্রাণীটি মারা যাওয়ার পর এগুলো দ্রুত ক্ষয় হতে থাকে। তিনি ব্যাখ্যা করেন কিভাবে আভ্যন্তরীন অঙ্গ জীবাশ্মে রূপান্তরিত হয়।

তিনি বলেন, “আমরা ধারণা করছি যে নমুনাসমূহ পানির নীচের ভূমিধ্ধস অথবা সুনামী-জাতীয় দৈবাৎ ঘটা কোন কারণে সমাহিত হয়েছিল অথবা হয় তা হয়েছিল প্রবল ঝড়ে প্রচন্ড ধুলি জমে। এবং তখন আভ্যন্তরীণ কোষের এই রাসায়নিক সংরক্ষণ ঘটে”।

এই প্রাচীন সামুদ্রিক নমুনা ক্যাম্ব্রিয়ান যুগের, যখন পৃথিবীর ইতিহাসে নানা আকার আকৃতির বৃহদাকারের প্রাণী ছিল। ষ্ট্রসফেল্ড বলেন এই গবেষণায় পাওয়া ফলাফলের সাথে এখনকার চিংড়ী জাতীয় প্রাণীর মধ্যে মিল পাওয়া যায়।

তিনি বলেন, “এ থেকে এই বোঝা যায় যে ৫২ কোটি বছর আগেই রক্ত সঞ্চালনের মূল কাঠামো ছিল যা বিবর্তিত হয়”।

এই প্রাচীন চিংড়ী-জাতীয় প্রানীকে যদি আধুনিক দৃষ্টিকোন থেকে দেখি, তবে ষ্ট্রসফেল্ড প্রশ্ন রেখেছেন যে, কে হতে পারে আমাদের পূর্ব পুরুষ যার কাছ থেকে অঙ্গ প্রত্যঙ্গের এই চমৎকার কাঠামো এসেছে?

তিনি বলেন, “এর উত্তর এ্যাতো সহজ নয়; কারন আমাদের অতো প্রাচীন কোনো উপাদানের অস্তিত্ব নেই। ফলে এই চেংজিয়াং জীবাশ্ম থেকে আমরা যা পেতে পারি তা হচ্ছে প্রাণীর অঙ্গ প্রত্যঙ্গের কাঠামোর একটা ক্ষুদ্র সূত্র”।

ভিওএনিউজ ডট কমে আপনি ৫০ কোটি বছর আগের অমেরুদন্ডী এই প্রাণীর আভ্যন্তরীণ অঙ্গ প্রতঙ্গ সম্পর্কে জানতে পারেন।
XS
SM
MD
LG