অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

জঙ্গীবাদ উৎখাতে একসঙ্গে কাজ করার পরামর্শ কংগ্রেসম্যান এ্যান্দ্রে কার্সনের


অরল্যান্ডোর ঘটনাকে সন্ত্রাসী ঘটনা আখ্যা দিয়ে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা বন্ধে জঙ্গীবাদ উৎখাতে সমাজের সকল মহলকে একসঙ্গে কাজ করার পরামর্শ দিয়েছেন কংগ্রেসম্যান এ্যান্দ্রে কার্সন। ভয়েস অব আমেরিকার সঙ্গে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা রাখা না রাখার বিষয়ে চলমান বিতর্কসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন। এ নিয়ে এশা সারাই ও শাইস্তা সাদাত লামির রিপোর্ট শোনাচ্ছেন সেলিম হোসেন।

যুক্তরাস্ট্রের কংগ্রেসে দুই মসলমান প্রতিনিধির মধ্যে এ্যান্দ্রে কার্সন হচ্ছেন একজন যিনি হাউজ ইন্টেলিজেন্স কিমিটরও সদস্য। গত রবিবার অরল্যান্ডোর পালস নাইটক্লাবে সমকামীদের ড্যান্স পার্টিতে বর্বর হামলার ঘটনায় ৪৯ জন নিহত ও ৫৩ জন আহত হওয়া সম্পর্কে দেয়া প্রতিক্রিয়ায় কংগ্রেসম্যান কার্সন বলেন, “এটি পরিস্কার যে ঐ যুবক স্বাভাবিক ছিল না। ঘটনাটি একটি হেট ক্রাইম; সন্ত্রাসী ঘটনা। চরম জঙ্গীবাদ নিরসনে হোয়াইট হাউজ যে প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে, সেখানে এ ধরনের ঘটনা দুশ্চিন্তার কারন”।

আফগানিস্তানে যুক্তরাস্ট্রের বাহিনীর অভিযান পরিচালনা এবং আফগান বাহিনীর সঙ্গে অংশীদারিত্ব প্রতিষ্ঠায় স্বাধীনভাবে কাজ করার অনুমোদন দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। আবার নেটো, আফগানিস্তানে সেনা ঘাঁটি রাখার ঘোষণা দিলেও যুক্তরাস্ট্রের ভূমিকা এখনো পরিস্কার নয়। প্রেসিডেন্ট ওবামা এটি পরিস্কার করেননি যুক্তরাস্ট্রের বর্তমান সেনা সংখ্যা ৯,৮০০ থেকে কমিয়ে ৫,৫০০ করা হবে কিনা।

দায়িত্ব গ্রহনের পর থেকেই প্রেসিডেন্ট চেষ্টা করেছেন ইরাক ও আফগানিস্তানে যুদ্ধের অবসান ঘটাতে। কিন্তু তাঁর সে প্রচেষ্টার প্রায় আট বছর পরও, সংঘাত, সংঘর্ষ, আস্থিতিশীলতা শুধু ঐ দুই দেশই নয়; ছড়িয়ে পড়েছে অন্যান্য দেশেও; যেমন সিরিয়া ও লিবিয়া।

প্রেসিডেন্ট ওবামার যুদ্ধ বন্ধের প্রচেষ্টা যুক্তরাষ্ট্রের সকল মহলে প্রশংশিত হয়েছে। কিন্তু তবুও আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা রাখা না রাখা নিয়ে দ্বিধা দ্বন্দ্ব রয়েই গেছে। এ বিষয়েও কথা বলেন ইন্ডিয়ানার ডেমোক্রেট কংগ্রেসম্যান এ্যান্দ্রে কার্সন, “আমরা যারা গোয়েন্দা শাখার সঙ্গে কাজ করি অথবা প্রতিরক্ষা ব্যাবস্থার সঙ্গে যুক্ত; আমরা বুঝি আাফগানিস্তানের বিশেষ কিছু অঞ্চলের নিরাপত্তার জন্যে, সেখানে সন্ত্রাসীদেরকে দমিয়ে রাখার জন্যে; কোনো না কোনো অবস্থায় যুক্তরাস্ট্রের সেনা রাখার প্রয়োজন রয়েছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে তা যেনো না ঘটে সেজন্যে আমরা কতোটুকু বিনিয়োগে প্রস্তুত রয়েছি?”

তিনি বলেন আফগানিস্তানে যুক্তরাস্ট্রের ভূমিকা নিয়ে আমাদের নিজেদের মধ্যেই রয়েছে শংশয় ও বিতর্ক। তা শুধুমাত্র আইনপ্রনেতাদের মধ্যেকার মতানৈক্যের জন্য নয়; সেই দেশে তারা এটাকে কিভাবে নিচ্ছে তাও গুরুত্বপূর্ন।

“একদিকে আমাদেরকে প্রভাব খাটানোর দোষ দেয়া হচ্ছে, অপরদিকে আবার কঠোর সমালোচনা করা হচ্ছে, ভূমিকা না রাখার, আসলে হচ্ছেটা কি? আমাদের আন্তর্জাতিক বন্ধু অংশীদারেরা যারা আমাদের নিরাপত্তা সুরক্ষা থেকে সুবিধা পান তারাও নিশ্চয় আফগানিস্তানকে নিরাপদ রাখার কাজে আমাদের সহয়াতা করবেন”।

বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসী হামলার সংখ্যা মারাত্মকভাবে বেড়েছে আর তার দাবী ইসলামিক স্টেটের নেয়ার প্রবণতাও বেড়েছে। প্যরিস বা ব্রাসেলসের গুলির ঘটনা, থেকে গত সপ্তায় ফ্লোরিডার অরল্যান্ডোয় সর্বশেষ সংঘঠিত বর্বরতম ঘটনা, তার প্রমান।

কার্সন সতর্ক করে বলেন এই সন্ত্রাস বিরোধী যুদ্ধ যুক্তরাষ্ট্রের একার নয়, “আমরা একা এই ভয়াবহ খেলা খেলতে পারি না। এই যুদ্ধে আমাদের প্রয়োজন আমাদের গাল্ফ অঞ্চলের বন্ধুদের, প্রয়োজন আমাদের ইউরোপীয়ন অংশীদারদেরও; যার মধ্যে দিয়ে সর্বোপরি একটি নিরাপদ বৈশ্বিক সম্প্রদায় নিশ্চিত করা সম্ভব হয়”।

আফগানিস্তান এখন বিপর্যস্ত। তালিবানের বিরুদ্ধেতো তারা লড়ে চলেছেই। হাক্কানী নেটওয়ার্ক, আল কায়েদা এবং ইসলামিক ষ্টেটও এখন আফগানিস্তানের সামনে বড় হুমকী।

XS
SM
MD
LG