অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে অভিন্ন ও শান্তিপুর্ণ আন্দোলনের সম্ভাবনা কম : ড মাইকেল রাইয়ান


সরকার বিরোধী বিক্ষোভকারীরা ইয়েমেনের পতাকা তুলে ধরেছে
সরকার বিরোধী বিক্ষোভকারীরা ইয়েমেনের পতাকা তুলে ধরেছে

মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিশেষজ্ঞ , ওয়াশিংটনের জেমইস টাউন ফাউন্ডেশানের সিনিয়র রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট এবং মিডল ইস্ট ইন্সটিটিউটের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট ড মাইকেল রাইয়ানের সঙ্গে কথা বলছিলাম । সম্প্রতি মিশর ও তিউনিশিয়ার আন্দোলনের পর , মধ্য প্রাচ্যের অন্যান্য দেশে এই ধরণের আন্দোলন , প্রতিবাদ ও বিক্ষোভের যে প্রবণতা , সেই বিষয়টি কতদূর গড়াবে , তাঁর কাছে এটা জানতে চাইলে , ড মাইকেল রাইয়ান বলেন এই সব প্রতিবাদ বিক্ষোভ হয়ত অনেক দূর গড়াবে তবে এ রকমটি মনে করা ভুল হবে যে মিশরে বা তিউনিশিয়ায় যা হয়েছে , সে সব দেশেও তেমনটি হবে , কারণ তিনি মনে করেন যে প্রতিটি দেশের পরিস্থিতি ভিন্ন ধরণের, ইতিহাস ভিন্ন । তিনি আরও বলেন যে অনেকগুলো দেশ ভিন্ন উদ্দেশ্য দ্বারা পরিচালিত হবে এবং হয়ত ভিন্ন লক্ষে পৌছাবে। মিশরের আন্দোলনের একটি বৈশিষ্টের দিকে দৃষ্টিপাত করে ড রাইয়ান বলেন যে মিশরের আন্দোলনের , এত বড় একটা গণঅভূত্থানের বৈশিষ্ট হচ্ছে যে সেটি ছিল , অহিংস আন্দোলন। ক্ষেত্র বিশেষে মুবারক সমর্থকরা সহিংস হয়েছে কিন্তু সার্বিক ভাবে আন্দোলনকারীরা একটি সুপরিকল্পিত অহিংস আন্দোলন করেছে , যেখানে তারা বিপুল সাড়া পেয়েছে প্রায় সকলেরই।

ড রাইয়ান অবশ্য বলেন যে অন্যান্য দেশের আন্দোলন এবং বিক্ষোভের পেছনে নানান উদ্দেশ্য কাজ করছে। কোথাও ধর্মীয় , কোথাও জাতিগোষ্ঠিগত বিভেদ , সুতরাং সে সব আন্দোলন সহিংস হবার ও সম্ভানা রয়েছে প্রচুর । সেখানে জাতীয় ভাবে অভিন্ন একটা আন্দোলোনের সম্ভাবনা অনেক কম। যেমন ইয়েমেনে আল ক্বায়দার উপাদানটি রয়েছে , বাহরাইনে শিয়া সুন্নির বিভেদ রয়েছে । ইয়েমেনর সঙ্গে মিশরের একটাই বড় মিল সেটা হলো মিশরের মতো ইয়েমেনের শাসক ও দীর্ঘ দিন , বলা যায় আরও বেশি দিন ক্ষমতা আকড়ে রয়েছেন । সেখানে হয়ত কিছু একটা হবে কিন্তু ঠিক কী হবে সেটা বলা মুস্কিল । কারণ ইয়েমেনের সমাজ ও বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠি ও উপজাতিতে বিভক্ত। আর এই সব আন্দোলন সহিংস হলে কিংবা ভিন্ন উদ্দেশ্যে পরিচালিত হলে গোটা ব্যাপরটাই ঘোলাটে হয়ে পড়ে। আল কবায়দা দক্ষিণ ইয়েমেনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হবার চেষ্টা করছে। আর সহিংসতা দেখা দিলে আল ক্বায়দা তার সুযোগ ও নিতে পারে। ইরান প্রসঙ্গে ড মাইকেল রাইয়ান বলেছিলেন ইরানে কিছু দিন আগেই শান্তিপুর্ণ আন্দোলনকে দমিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে তাই বলে সেখানে যে আন্দোলন থেমে গেছে তা নয় । তবে এই আন্দোলন সহিংস হয়ে উঠলে দমননীতি আরো বাড়বে। তিনি পশ্চিমের এই দৃষ্টিভংগির সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন যে প্রেসিডেন্ট আহমেদিনিজাদ নির্বাচনে জয় লাভ করেননি । তিনি বরঞ্চ বলেন যে আহমেদিনিজাদ এখনও গ্রামাঞ্চলে জনপ্রিয় ।

এ দিকে মিশর ও মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশে পরিবর্তন সম্পর্কে ইসরাইল যে সতকর্তা অবলম্বন করছে , তাকে তিনি কোনক্রমেই অমূলক মনে করেন না তিনি বলছেন মুসলিম ব্রাদারহুড এই আন্দোলনে প্রান্তিক ভুমিকা পালন করলেও গোটা মিশর জুড়ে তাদের সংঘটন রয়েছে এবং তারাই একমাত্র সংগঠিত বিরোধী শক্তি এখন মিশরে। হঠাৎ করে কায়রো থেকে কোন আদুনিক তরুণ গিয়ে গ্রামের ভোট পাবে সেই সম্ভাবনা কম। সুতরাং অন্য কোন রাজনৈতিক দল গঠিত এবং সংগঠিত না হলে , মুসলিম ব্রাদারহুড ক্ষমতায় আসতেই পারে এবং ইসরাইলের আশংকাটা সেখানেই।

XS
SM
MD
LG