আমরা বাংলাদেশের পোশাক তৈরীর কারখানায় প্রায়ই আগুন ধরেছে বলে খবর পাই। এতে দরজা বন্ধ থাকা এবং আগুন নেভানোর পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকার কারণে শ্রমিক কর্মীরা কারখানার অগ্নিকাণ্ডে প্রান হারায় সেইসব খবরও পাই। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তার প্রতিকারের কি করা হয় সেটা জানতে পারিনা।
বাংলাদেশের এইসব ঘটনার বহু আগে ১৯১১ সালের ২৫শে মার্চ নিউইয়র্কে ট্রায়াংগল ফ্যাক্টরীতে আগুন লেগেছিল যেখানে অভিবাসী তরুনীরা কাজ করতেন। সেই আগুনে মারা গিয়েছিল ১৪৬জন কর্মী। জনমনে দারুণ ক্ষোভের সৃষ্টি হয়, চারিদিকে প্রতিবাদ বিক্ষোভ দেখা দেয়। কর্তৃপক্ষ ও শ্রমিক সংগঠনের মধ্যে কারখানার নিরাপত্তা নিয়ে দরকষাকষি শুরু হয়ে যায়। প্রফেসার লে বেনিন, ট্রায়াংগল ফ্যাক্টরী ফায়ার সম্বন্ধে বই লিখেছেন তিনি বলেন – ‘শুধু লাভ করার জন্য তাদের যে প্রচেষ্টা, তখন তারা নিরাপত্তার কথা চিন্তা ভাবনাই করেনি। একটি মাত্র বেরোনোর পথ রেখে বহু মানুষকে এক জায়গায় কাজ করাতো। কোন পানির ব্যবস্থা ছিল না আর যখনই এইসব ব্যবস্থার কথা বলা হতো তারা তাতে বাধা দিয়েছে’।
তবে দিনে দিনে যখন অসন্তোষ বেড়ে চললো সরকার আর উপেক্ষা করতে পারলেন না। ক্যাথরিন ওয়েবার ট্রায়াংগল – ‘এ হিস্ট্রী অফ দ্য ফায়ার’ নামে বইটির লেখক। তিনি বলেন, ‘সারা দেশে সকলেই উপলব্ধি করলেন যে কাউকে কিছু একটা করতে হবে। সেই প্রথম সবাই জানিয়ে দিলেন যে - সরকার কেবল ব্যবসার বাণিজ্যের দিক দেখবেন না, যুক্তরাষ্ট্রের মানুষ সোচ্চার হলেন যে সরকারকে মানুষের ভালমন্দের দিকেও নজর দিতে হবে’।
বাংলাদেশেও গার্মেন্ট ফ্যাক্টরীতে অগ্নিকাণ্ড ঘটছে। গত বছরই আগুনে ২১জন শ্রমিক মারা যায়।
শাহনাজ বেগমের মা কারখাণার আগুনে প্রান হারান। শাহনাজের বক্তব্য -
আমার মা রাতের কাজ করতে ডিউটিতে গেছে। কিন্তু মা আর ফিরে আসেনি।কারণ দরজা তালা বন্ধ ছিল।
ঢাকায় আমেরিকান শ্রমিক সংগঠন সলিডারিটির কর্মকর্তা এ্যাডভোকেট এ কে এম নাসিম বললেন – ‘যখন আগুন লাগার ঘটনা ঘটে তখন সবাই কিছু একটা করতে এগিয়ে আসে, তদন্ত হয়, ক্রেতাদের চাপে সে দিকে নজর দেওয়া হয়, কিন্তু পরে আর কিছু হয় না’। ভবিষ্যতে হয়তো কাজের এই পরিবেশের পরিবর্তন হবে সেটাই আশা করা যায়।