অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

পাকিস্তান নিজেই নিজেকে বিচ্ছিন্ন করছে ঃ লিসা কার্টিস


পাকিস্তান নিজেই নিজেকে বিচ্ছিন্ন করছে ঃ লিসা কার্টিস
পাকিস্তান নিজেই নিজেকে বিচ্ছিন্ন করছে ঃ লিসা কার্টিস

বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তান সম্পর্ক যে কোন সময়ের চাইতে – একটা জটিল পর্যায়ে পৌঁছেছে । কাবুলে যুক্তরাষ্ট্র দুতাবাসের ওপর হামলা । সেইসঙ্গে আফগানিস্তানের দুজন বিশিষ্ট নেতার হত্যাকান্ডের পর, পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে । বিশ্লেষকরা অনেকে মনে করছেন যুক্তরাষ্ট্রের আরও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত ।

ওয়াশিংটনে হেরিটেজ ফাউণ্ডেশনের সিনিয়ার রিসার্চ ফেলো লিসা কার্টিস আমাদের সঙ্গে এক সাক্ষাতকারে যুক্তরাষ্ট্র – পাকিস্তান – আফগানিস্তান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছেন । পাকিস্তান উগ্রবাদী হাক্কানী নেটওয়ার্কের সঙ্গে জড়িত, যার সঙ্গে আবার আল কায়দার সম্পর্ক রয়েছে । হাক্কানী গ্রুপ পাকিস্তান-আফগান সীমান্তে সকল কাজে বিভিন্নভাবে তার প্রভাব খাটায় । লিসা কার্টিস মনে করেন, পাকিস্তানের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। তিনি বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি যে ১৩ই সেপ্টেম্বর কাবুলে যুক্তরাষ্ট্র দুতাবাসের ওপর হামলাকারীদের সঙ্গে আই এস আই-এর সরাসরি যোগাযোগ ছিল । তাই আমি মনে করি যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা ছাড়া আর কোন বিকল্প নেই । যুক্তরাষ্ট্র মুল দায়িত্ব হচ্ছে তার নাগরিকদের রক্ষা করা । আমরা এই পরিস্থিতিতে নীরব থাকতে পারি না । তাই আমি বলেছি যে, পাকিস্তান সরকারকে জানাতে হবে যে তারা হামলাকারীদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নিলে, এবং হাক্কানী নেটওয়ার্কে মোকাবেলা না করলে, যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানের জন্য সকল সহায়তা কার্য্ক্রম বন্ধ করে দেবে’ ।

অনেকেই বলেন হা্ক্কানী নেটওয়ার্কর সঙ্গে আল কায়দার যোগাযোগ আছে । ওদিকে সম্প্রতি পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রী হিনা রব্বানী খার মন্তব্য করেছেন যে, যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তান অথবা তার জনগনকে বিচ্ছিন্ন করতে পারে না । এ ক্ষেত্রে লিসা কার্টিস বললেন, ‘আমি মনে করি পাকিস্তান নিজেই নিজেকে বিচ্ছিন্ন করছে । তারা সেই সন্ত্রাসীদের সমর্থন করছে, যারা কিনা তার মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের ওপর হামলা চালিযে যাচ্ছে । যুক্তরাষ্ট্র বরাবরই সে দেশে সংশ্লিষ্টতার নীতি অনুসরণ করে এসেছে, পাকিস্তানের উদ্বেগ মেটানোর লক্ষ্যে সামরিক আলোচনা করেছে । যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানের জন্য অসামরিক সাহায্য সহায়তা দেবার কথা বলেছে, কৃষি, জ্বালানী খাতে সাহয্যের কথা বলেছে যা পাকিস্তানীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু দূর্ভাগ্য যে পাকিস্তান তাদেরই সমর্থন করছে, যারা যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে হামলা চালাচ্ছে । তাই যুক্তরাষ্ট্রের পাকিস্তানের ক্ষেত্রে শাস্তিমুলক ব্যবস্থা নেওয়া ছাড়া আর কোন গত্যন্তর নেই’ ।

ওয়াল স্ট্রিট জর্ণালে বলা হয়েছে, বিশ্ববাসী বা আমেরিকানরা যাতে মনে না করে যে আফগানিস্তানে যে সব আমেরিকান নাগরিক নিহত হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র সে দিকে ঠিকমত নজর দিচ্ছে না । এই মন্তব্যের বিষয়ে লিসা কার্টিস বললেন, ‘আমি মনে করি এই বিষয়টি হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের বিবেচনার বিষয় এবং তার নিজের নাগরিকদের রক্ষা করার বিষয় । এবং বিশ্বে নেতৃত্ব দেবার তার যে ভুমিকা, সে দিকে নজর দেওযা উচিত । আমরা কোন সরকারকেই সাহায্য করতে পারি না, যে সরকারের একটি অংশ আমাদের নাগরিকদের বিরুদ্ধে হামলা চালাচ্ছে । এটা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের শক্তিমত্তা ও মান সম্মানের বিষয় । যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানের সম্পর্কের বিষয়’ ।

এই পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের পরিকল্পনা অনুযায়ী আফগানিস্তান থেকে সৈন্য প্রত্যাহার করা উচিত কি না । এ প্রশ্নের জবাবে লিসা বললেন, ‘আমি মনে করি ওই পরিকল্পনা পরিবর্তন করা উচিত । সাম‌্প্রতিক কয়েকটি হামলা এবং বিশেষ করে কান্দাহারে ২জন বিশিষ্ট নেতার হত্যাকাণ্ড, গত সপ্তাহে প্রফেসার রাব্বানীর হত্যাকাণ্ড, এসব ঘটনা থেকে প্রতীয়মান হয় যে তালেবান নেতারা বা তার মিত্রদের কোন ধরণের আপোষ বা আলোচনা ইচ্ছা নেই । তাই সেখানে কোন পরিবর্তন না আসা পর্যন্ত, সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের শক্তিশালী সামরিক উপস্থিতির প্রয়োজন । ওবামা প্রশাসনের সে দেশ থেকে সামরিক প্রত্যাহারের বিষয়টি বিবেচনা করে দেখা উচিত, তাদের সামরিক মিশন পূরণ করা উচিত বলে আমি মনে করি’ ।

লিসা কার্টিজের সাক্ষাতকার নিয়েছেন রোকেয়া হায়দার।

XS
SM
MD
LG