অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

চারটি ঋতুর দেশ


চারটি ঋতুর দেশ
চারটি ঋতুর দেশ

চারটি ঋতুর দেশ আমেরিকা। শীত, বসন্ত, গ্রীষ্ম আর হেমন্ত---কালের এই সময়গুলোকে চাইলেও উপেক্ষা করা যায় না। প্রতিটি ঋতুর রুপ, রস, গন্ধ আমেজ এত ভিন্ন যে ধরত্রী অশেষ সর্বত্রই।

আমেরিকার পূর্ব উপকূলে শীতকাল দীর্ঘ হয়। এই সময় প্রকৃতির জীর্ণশীর্ণ অবস্থা। প্রায় প্রতিটি গাছের পাতা ঝরে যায় বিশেষ করে পূর্ব উপকূলের রাজ্যগুলোতে যেমন ম্যারিল্যান্ড, ওয়াশিংটন ডি সি, নিউ ইয়োর্ক, পেনসিলভ্যানিয়া, ম্যাসেচুসেটস এবং ওহায়তে। তবে পাতা ঝারার আগে পাতায় পাতায় রঙ লাগতে শুরু করে। এই সময় গাছে গাছে লাল, হলুদ, সবুজ, বাদামী, খয়রী, কমলা নানা রং-এর খেলা। প্রকৃতিকে তখন অপরুপা। সে চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না!

আমেরিকার মানুষ পাতার রঙ দেখার জন্য দূর দূরান্ত গাড়ী চালিয়ে যায়। ওয়াশিংটন ডি সি-এর অদূরে স্যানেনডোয়া ভ্যালী। আর ঐ পাহাড়ী পথটি আঁকাবাকা হয়ে প্রায় এক হাজার ফুট উপরে উঠে গিয়াছে প্রায় একশ পাঁচ মাইল। এই পাহাড়ী পথে চলতে চলতে দেখা যায় পাতার রং-এর খেলা। “ফল কালার” দেখার জন্য ভীড় জমে দর্শণার্থীদের।

তারপর শুরু হয় তুষার পাত---টুপি, হাত মোজা, বুট আর ওভার কোট পরার সময়। সেও চলেতে থেকে কয়েক মাস। আকাশের প্রায়ই ধমধমে গম্ভীর। মাটিতে একটু আধটু বরফ জমে থাকতে থাকতেই ছোট্ট ছোট্ট নরম লাল, বেগুনী, হলুদ নীল রং-এর ক্রকাস ফুল শীতের কঠিন ফুড়ে উঁকি দিয়ে স্বাগত জানায় বসন্তকে।

আর তখনই গাছের শুকনো ডালে ডালে সবুজ পাতার কুচি দেখতে পাওয়া যায়। প্রকৃতি বলে দেয় বসন্ত সমাগম। এপ্রিলের মাঝামাঝিতে প্রকৃতি যে সবুজে সেজে ওঠে সে দেখার মত। মনে হয় শিল্পী তার তুলি দিয়ে জল রং-এর ছবি এঁকেছেন। প্রকৃতির মত পশুপাখীও এ সময় চঞ্চল হয়ে ওঠে। বাড়ী থেকে বেরুলেই চোখে পরে কাঠ বেড়ালীর পুটুশ-পাটুশ চাওয়া, দল বেধে বেরিয়ে আসে হরিণের দলও। প্রকৃতি এত চঞ্চল যে পশুপাখীরা মানুষের উপস্থিতিকে অনেক সময় গ্রাহ্যই করে না।

তারপর আসে গ্রীষ্ম, গ্রীষ্মের তাপদাহ খুব একটা অনুভূত হয়না পূর্ব উপকূলে, তবে পশ্চিম উপকূলে যেমন ক্যালিফোর্নীয়া, এরিজোনা বা নিউ ম্যাক্সিকো রাজ্যে প্রায় প্রতি বছর বনাঞ্চলে আগুন ধরে। পুড়ে ছাড়খার হয় হ্যাক্টোকের পর হ্যাক্টোর জমি বা পাহাড়। ধরিত্রীর সুধা বর্ষণ না হ’লে সে আগুন নেভানো প্রায় অসম্ভব। এই গরম বাংলাদেশের গরমের মত অসহনীয়। তারপর প্রকৃতি শান্ত হয় বর্ষণে।

পরিষ্কার মেঘমুক্ত আকাশে নরম সূর্যের পরশ বলে দেয় হেমন্ত এসেছে। খেলাধূলো-মেলা, বনভোজনে সরোব হয়ে ওঠে সব। আনন্দ উল্লাস যেনো আনাচে কানাচে। কারন? এরপর ছুট দিয়ে বাড়ীর বাইরে যাওয়াটা বেশ কঠিন, শীত যে এসে গেল।

XS
SM
MD
LG