অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

উগ্রবাদে নারী এবং ছাত্রীদের জড়িয়ে পড়ার একটা বড় কারন অর্থ সাহায্য


উগ্রবাদে নারী এবং ছাত্রীদের জড়িয়ে পড়ার একটা বড় কারন অর্থ সাহায্য
উগ্রবাদে নারী এবং ছাত্রীদের জড়িয়ে পড়ার একটা বড় কারন অর্থ সাহায্য

উগ্রবাদে নারী এবং ছাত্রীদের জড়িয়ে পড়ার একটা বড় কারন অর্থ সাহায্য
উগ্রবাদে নারী এবং ছাত্রীদের জড়িয়ে পড়ার একটা বড় কারন অর্থ সাহায্য

বাংলাদেশে উগ্রবাদে নারীর অংশ গ্রহণ নিয়ে পত্রপত্রিকা ইলেকট্রনিক মিডিয়াতে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে প্রায় সকল ক্ষেত্রেই গরীব বা নিম্ন বিত্ত পরিবারগুলো থেকে আসা নারীকেই বিশেষ করে উগ্রবাদী দলগুলো বেছে নিচ্ছে, এখানে অর্থ সাহায্যের ভুমিকা খুবই উল্লেখযোগ্য। এমনকি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতেও একই ধারা লক্ষনীয়।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে উগ্রবাদী ছাত্রসংগঠনগুলোর তত্পরতা খুবই সক্রিয়। রাজশাহী মেট্রোপলিটান পুলিশ বাহিনীর কমিশনার নওশের আলির বক্তব্যে তা আরও স্পষ্ট। তিনি বলেন “রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রীদের একটি বড় অংশ দরিদ্র ও নিম্ম মধ্যবিত্ত শ্রেনীভুক্ত মানুষের সন্তান সেটা ছাত্রই হোক আর ছাত্রীই হোক। এখানে ইসলামী ছাত্র শিবির ঠিক ঐ দারিদ্রকেই টার্গেট করে বেছে নেয় প্রথমেই যখন নতুন ছাত্রছাত্রী এখানে ভর্তি হয় এদের মহিলা শাখাগুলো ছাত্রীদেরকে ঠিক ঐভাবেই ইসলামের দোহাই দিয়ে অনুপ্রাণিত করার চেষ্টা করে এবং এদের একটা অন্যতম স্ট্র্যাটেজি হল সেখানে প্রচুর পরিমাণ অর্থ এই সমস্ত দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ছাত্রীদের পেছনে ব্যয় করে।”

রাজশাহীর আত্রাই এলাকা যেখানে উগ্রবাদী দল জে এমবি’র উত্থান হয়েছিল, সেই এলাকার সংসদ সদস্য ইস্রাফিল আলমও বলছেন ধর্মীয় উগ্রবাদের নারী অংশ গ্রহণের পেছনে অন্যতম কারন অর্থ। তিনি বলেন, “এই ধরণের কার্যক্রমের সংগে নারীদের সম্পৃক্ততা লক্ষ করার মতো কারণ নারীর অংশীদারিত্ব সমাজ জীবনে ও জাতীয় জীবনের প্রতিটি গুরুত্বপুর্ন কর্মকান্ডে খুব দৃশ্যমান হয়ে উঠছে। রাষ্ট্র পরিচালনা বলেন উন্নয়ন বলেন সকল কর্মকান্ডেই নারী দৃশ্যমান সমাজের একটা অংশ। আর এ ধরনের মেয়েরা সাধারনত যারা ধরা পড়ছে হয় স্ত্রী না হয় বোন কিংবা দলীয় ক্যাডার। আবার অনেকে দারিদ্রের কারনেও আসছে। টাকা পয়সার জন্যে মেয়েরা এ ধরনের কাজে জড়িয়ে যাচ্ছে।”

পুলিশ কমিশনার নওশের আলি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, যেখানে ধর্মীয় উগ্রবাদী ছাত্রসংগঠন অত্যন্ত সক্রিয় সেখানে এই সব সংগঠনের ছাত্রীদের অংশ গ্রহন তারা কিভাবে দেখছেন, সে বিষয়ে বলেছেন “ছাত্রীরা এখন যে কাজগুলো করে তাদের ছাত্রবন্ধুদের মানে ইসলামী ছাত্র শিবিরের যারা ছাত্র ক্যাডার তাদের অস্ত্র লুকানো, লিফলেট লুকানো লিফলেটগুলো নিরাপদে এক জায়গা থেকে আর এক জায়গায় বোরখার মধ্যে করে পাচার করা এ সমস্ত কাজ তারা সুকৌশলে সুনিপুণভাবে করে যাচ্ছে। তারা এই ধরনের বড় ধরনের উগ্রবাদী কর্মকান্ড যে গুলো ঘটছে যেমন বোমাবাজী বা হত্যাকান্ড সে সমস্ত এখনো সরাসরি ছাত্রীরা অংশগ্রহণ করে নাই কিন্তু এ অবস্থা যদি চলতে থাকে তাহলে ভবিষ্যতে হয়তো মেয়েরাও এ সমস্ত হত্যাকান্ড বা বোমাবাজী সুইসাইড স্কোয়াড আসতে পারে। এটা অনুমান করা যায়।”

ওদিকে আরো একটি ধর্মীয় উগ্রবাদী দলের আত্মপ্রকাশ ঘটেছে, এদের নাম হিতবুত তাহরীর। ইত্তেফাকের স্পেশাল করোসপন্ডেন্ট ও ক্রাইম এডিটর আবুল খায়ের বলছেন এই উগ্রবাদী দলটির লক্ষ্য সমাজের উচ্চবিত্ত এবং মেধাবী ছাত্র শিক্ষক ও অন্যান্য দক্ষ পেশাদার লোকজন। তিনি বলেন, “হিজবুত তাহরীর, যেটার নেটওয়ার্ক হলো ইউনিভার্সিটি লেভেলে। এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এদের নেটওয়ার্ক সবচেয়ে বেশি। বিভিন্ন ইনটেলিজেন্সরা এই গ্রুপের বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ শুরু করলো তখন দেখা গেল যে তাদের অবস্থান অন্যান্য জেএমবি’র চেয়ে ব্যতিক্রম। মেধাসম্পন্ন লোকগুলো হল এই সংগঠনের সংগে সম্পৃক্ত। এবং সেখানে ইউনিভার্সিটির শিক্ষক বুয়েটের শিক্ষক এরা হল মূল পরিচালনার দায়িত্বে।”

হিজবুত তাহরীর উগ্রবাদী দলের ছাত্রীদের সনাক্ত করা হয়েছে ঢাকার ঐতিহ্যবাহী ইডেন কলেছে এবং তারা এই দলে কি ভাবে যুক্ত হলো এ বিষয়ে ইত্তেফাকের সিনিয়র রিপোর্টার আবুল খায়ের বললেন “আমরা বিভিন্ন ইনটেলিজেন্সের মাধ্যমে জানতে পারি যে ইডেন কলেজে সম্প্রতিকালে বেশ কিছু হিজবুত তাহরীর নেতা কর্মী অবস্থান করছে নারী সংগঠনে। এদের লেবাস হলো কালো বোরখা, শুধু চোখ দেখা যায় বাকি শরীর তারা ঢেকে রাখে। জ্বিহাদী বই, মানুষকে কিভাবে তাদের লাইনে আনা যায় সেই বই এবং নানা ধরনের লিফলেট উদ্ধার করছে পুলিশ। তারা কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করছে। তাদের স্বীকারোক্তির মাধ্যমে বার হয়ে আসছে যে আরো ২২ জন মেয়ে আছে এটা হল ইনটেলিজেন্সের তথ্য। ওখানে যিনি প্রিনসিপাল ওনার বক্তব্য দেখছেন ইত্তেফাকে ছাপা হয়েছে। উনি নিজেই বলছেন আমি পাঁচ জনকে সরাসরি সনাক্ত করেছি। বিভাগীয় ভাবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছেন।

একজন শিক্ষকের কাছে ছাত্রী সবসময় দুর্ব্বল থাকে যে স্যার যেটা বলেন সেটই বোধহয় সঠিক আর এই দুর্বলতাকেই শিক্ষকরা ব্যবহার করেন । তারা বিভিন্ন কৌশলে এদেরকে নিয়ে আসে এরা যখন একবার এই জঙ্গী উগ্রপন্থিতে চলে আসে তখন নেশাগ্রস্তদের মতো এরা ও নিজেদের লাইন ছাড়তে পারে না। এমনভাবে তাদেরকে মগজ ধোলাই করে নিয়ে আসে। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো এদের পরিবারের অনেকে এই লাইনে। হয়তো দেখা গেছে বাবা এই লাইনে, অথবা ভাই এই লাইনে কোন না কোন আত্মীয় স্বজন এই লাইনে আছে। এটা একটা পরিবার কেন্দ্রিক বিষয় হয়ে গেছে। যদি একজনের হয় সে তার পরিবারের আর একজনকে আনতে বাধ্য। তবে এর পেছনে মোটা অংকের টাকা ব্যায়ও করে।”

সংবাদমাধ্যমের রিপোর্টার, পুলিশের কর্মকর্তা এবং উগ্রবাদের কারন ও উত্থান নিয়ে কাজ করছেন যারা তারা সবাই সমস্বরে বলছেন উগ্রবাদে নারী এবং ছাত্রীদের জড়িয়ে পড়ার একটা বড় কারন অর্থ সাহায্য।

XS
SM
MD
LG