অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে দেরীতে বিয়ের সুবিধাগুলো দৃশ্যমান করা জরুরি


বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে দেরীতে বিয়ের সুবিধাগুলো দৃশ্যমান করা জরুরি
বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে দেরীতে বিয়ের সুবিধাগুলো দৃশ্যমান করা জরুরি
আঙ্গুর নাহার মন্টি
ঢাকা রিপোর্টিং সেন্টার
সহযোগিতায়: ইউএসএআইডি ও ভয়েস অফ আমেরিকা

বাংলাদেশে দেরীতে বিয়ের কোন সুবিধা বা উপকারিতা সাধারণ মানুষের কাছে দৃশ্যমান নয়। ফলে, বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ আশাব্যঞ্জক হারে বাড়ছে না। আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) এক সাম্প্রতিক গবেষণায় এই তথ্য উঠে এসেছে।

‘বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে কম্যুনিটির ভূমিকা’ বুঝতে ইউএসএআইডি’র অর্থায়নে করা সাম্প্রতিক এই গবেষণাটিতে বাল্যবিয়েকে একটি জটিল সামাজিক সমস্যা হিসেবে উল্লেখ করা হলেও সবচেয়ে চমকপ্রদ তথ্য হচ্ছে, মেয়েদের দেরীতে বিয়ে দেয়ার কারণে ইভটিজিংসহ যৌন হয়রানি, যৌতুক, সামাজিক রীতি ভঙ্গসহ নানা ধরণের সামাজিক নিরাপত্তাহীনতার চাপ বেড়ে যায়। তাড়াতাড়ি মেয়েকে বিয়ে দিতে পারলে এসব চাপ থেকে রেহাই পাওয়া যায় বলে অভিমত অভিভাবকদের। তবে বাল্যবিয়ের শিকার কিশোরী ও তরুণীরা এর কুফল সম্পর্কে যথেষ্ট সচেতন। গবেষণাটিতে বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে ব্যক্তি, পরিবার, স্থানীয় সরকার, আইনী সংস্থা, কাজী, ইমাম, সামাজিক এবং ধর্মীয় নেতাদের ভূমিকা চিহ্নিত করার চেষ্টা করা হয়েছে। দেখা গেছে, ব্যক্তি ও পরিবারের চেয়ে রাজনৈতিক ও ধর্মীয় নেতা (প্রভাবশালী নেতা, কাজী ও ইমাম)গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।

এ প্রসঙ্গে ইউএসএআইডি’র জনসংখ্যা, স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও শিক্ষা বিভাগের উপ পরিচালক গ্রেগ এডামস বলেন, বাল্যবিয়ে এদেশে প্রথাগত চর্চা। এতে শিশু-কিশোরদের মানবাধিকার লংঘন হচ্ছে এবং তা টেকসই উন্নয়নের পথেও নেতিবাচক প্রভাব রাখছে। একারণে, ইউএসএআইডি বিশ্বজুড়ে এমন গবেষণায় সহায়তা দিচ্ছে যেখানে বাল্যবিয়ের অঞ্চলভিত্তিক মূল কারণগুলো শনাক্ত করা হচ্ছে। একইসঙ্গে যারা বাল্যবিয়ের শিকার হয়েছেন তাদের উন্নত জীবন গড়ে তুলতে সহায়তা দেওয়া হবে।

বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের সচিব তারিক উল ইসলাম সরকারের সম্প্রতি চালু করা ১০৯২১ হেল্পলাইনের উল্লেখ করে বলেন, এই হেল্পলাইনে অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা সংশ্লিষ্টদের নিয়ে অনেকগুলো বাল্যবিয়ে বন্ধ করেছি।

বাল্যবিয়ে একটি মেয়ের শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক উন্নয়নকে কেড়ে নিয়ে কম বয়সে গর্ভধারণ, প্রসবকালীন ও প্রসব পরবর্তী জটিলতা এমনকি অকালে মৃত্যুও ঘটায়। দেশের আইনে মেয়েদের বিয়ের বয়স ১৮ থেকে নির্ধারণ করা থাকলেও, সর্বশেষ বাংলাদেশ জনমিতি ও স্বাস্থ্য সার্ভে (বিডিএইচএস) অনুসারে, দুই-তৃতীয়াংশ মেয়ের ১৮ বছরের আগেই বিয়ে হচ্ছে যারা অকালে হারাচ্ছে শৈশব, কৈশোর এমনকি জীবনও। তাই বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে সকলকে সোচ্চার হতে হবে।
সরাসরি লিংক
XS
SM
MD
LG