শরীফ-উল-হক
ঢাকা রিপোর্টিং সেন্টার
সহযোগিতায়- ইউএসএআইডি এবং ভয়েস অব আমেরিকা
‘টেকসই উন্নয়ন, প্রযুক্তি প্রসারণ’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ৩ ডিসেম্বর ২৩তম আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস পালিত হল বাংলাদেশে। জাতিসংঘ ঘোষিত এই দিবসটি ১৯৯২ সাল থেকে সারা বিশ্বব্যাপী পালিত হয়ে আসছে। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা আই, এল, ও’র মতে একজন প্রতিবন্ধী হচ্ছেন তিনি, যার স্বীকৃত শারীরিক ও মানসিক ক্ষতিগ্রস্ততার কারণে যথোপযুক্ত কর্মসংস্থানের প্রত্যাশা কমে যায়। এমনই একজন শারিরীক প্রতিবন্ধী মোশারফ হোসেন। এসি মেরামতের কাজ করতেন। একটি রেস্টুরেন্টের এসি ঠিক করতে গিয়ে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিটে তার হাত দুটো মারাত্মকভাবে পুড়ে যায় এবং কব্জির নিচ থেকে কেটে ফেলতে হয়। কিন্তু অদম্য মনোবলে মোশারফ আজ স্বাবলম্বী। নিজে দোকান দিয়েছেন এবং কর্মচারীও রেখেছেন।
বর্তমান বিশ্বের মোট জনসংখ্যার প্রায় ১৫ শতাংশ মানুষ কোন না কোন ভাবে প্রতিবন্ধীতার শিকার। তারা অসমানুপাতিক ভাবে পৃথিবীর সবচেয়ে দরিদ্রতম এবং মৌলিক সম্পদ যেমন শিক্ষা, চাকরী, স্বাস্থ্য, সামাজিক ও আইনগত সুযোগ-সুবিধা হতে বঞ্চিত।
আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতিতাঁর বাণীতে বলেন, উন্নত ও সুখী বাংলাদেশ গড়ে তুলতে প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীকে প্রযুক্তি জ্ঞানে সমৃদ্ধ করে মূল স্রোতধারায় সম্পৃক্ত করা জরুরি। তিনি বলেন, প্রতিবন্ধীরা আমাদের সমাজেরই অংশ।
প্রধানমন্ত্রী তাঁর বাণীতে বলেন, প্রতিবন্ধীদের উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের সঙ্গে সম্পৃক্ত করে প্রতিবন্ধকতা জয় করতে হবে। প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠী উপযুক্ত শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নিজেদের দক্ষ ও যোগ্য করে গড়ে তুলতে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা পেলে তারা দেশের বোঝা না হয়ে সম্পদে পরিণত হবে। তিনি আরো উল্লেখ করেন, প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে ‘প্রতিবন্ধীদের অধিকার ও সুরক্ষা আইন-২০১৩’ এবং ‘প্রতিবন্ধী সুরক্ষা ট্রাস্ট আইন-২০১৩’ প্রণয়নসহ বর্তমান সরকার বেশকিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ নিয়েছে।
দিবসের কর্মসূচীর অংশ হিসেবে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ব্যবস্থাপনায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে প্রতিবন্ধী মেলার উদ্বোধন করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। এছাড়াও মিরপুর জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন চত্বরে ৩ থেকে ১০ ডিসেম্বর মেলা, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।