চার জন ব্লগার, একজন প্রকাশক, দুজন বিদেশী নাগরিক এবং অসংখ্য হত্যার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে ২০১৫ সালে নতুন জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটেছে। বাংলাদেশে ২০১৫ সালে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপরও হমলা হয়।
ব্লগার, নিরাপত্তা বিশ্লেষক সহ বিশিষ্ট কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলেন আমাদের ঢাকা সংবাদদাতা আমীর খসরু।
বাংলাদেশে ২০১৫ ছিল ধর্মীয় উগ্রবাদ, জঙ্গিবাদের রক্তাক্ত পথে নতুন উত্থান, বিস্তার এবং হত্যাকান্ড, হামলার ঘটনার বছর। এতোদিন স্থানীয় জঙ্গী গ্রুপগুলোর কার্যক্রম চললেও এ বছরই ইসলামিক স্টেট বা আইএস, আল কায়েদার ভারতীয় শাখা এবং আনসার আল ইসলামের উপস্থিতি ও সক্রিয়তার কথা শোনা যায়। এসব আন্তর্জাতিক জঙ্গী সংগঠন ঘটনা ঘটার পরে এর দায় স্বীকারও করেছে।
২০১৫-তে ব্লগার অভিজিৎ রায়, ওয়াশিকুর রহমান, অনন্ত বিজয় দাস ও নীলয় নীল এবং প্রকাশক ফয়সাল আরেফীন দীপনকে হত্যা করা হয়। একজন প্রকাশক ও কয়েকজন ব্লগারের উপরের সশস্ত্র হামলার ঘটনাও ঘটে। ইতালীয় নাগরিক তাভেলা সিজার ও জাপানি নাগরিক কোনিও হোশিকে হত্যা এবং খ্রিস্টান চার্চের ফাদার ইতালীয় নাগরিক ড. পেয়েরো পারলারিকে হত্যার উদ্দেশ্য হামলা চালানো হয়। হত্যাচেষ্টা করা হয় অপর এক খ্রিস্টান ফাদার লুক সরকারকে। শিয়া সম্প্রদায়ের উপরে গ্রেনেড হামলা, হিন্দু মন্দিরে বোমা হামলা, খ্রিস্টান ধর্ম যাজকদের হুমকি দেয়াসহ নানা রক্তাক্ত ঘটনা ঘটে এ বছরটিতে।
ব্লগারদের হত্যা ও হামলার পরে তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। অনেকে বিদেশে চলে গেছেন এবং প্রায় সবাই নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছেন। ব্লগারদের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে জানিয়েছেন, ব্লগার ভাস্কর আবেদীন।
জঙ্গিবাদী অব্যাহত কার্যক্রমের প্রেক্ষাপটে দেশে আইএস আছে কি নেই সে প্রশ্নে ব্যাপক বিতর্ক রয়েছে। সরকার বলছে, দেশে আইএস-এর উপস্থিতি নেই। তবে অনেকেই জঙ্গিবাদ দমনে সরকারের সক্রিয় ভূমিকার অনুপস্থিতির কথা বলছেন। এ সম্পর্কে বলেছেন, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশ গুপ্ত।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় হাদিস ও ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক এবং লেখক ড. আবদুল্লাহ জাহাঙ্গীর বলেন, জঙ্গীবাদ নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করার মতো গণতান্ত্রিক প্রথা প্রতিষ্ঠান না থাকার কারণেই এদের উত্থান ঘটেছে।
বিশিষ্ট নিরাপত্তা বিশ্লেষক অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল মুনীরুজ্জামান মনে করেন, ২০১৫ ছিল জঙ্গীবাদী কার্যক্রমের কারণে উদ্বেগের বছর। জেনারেল মুনীরুজ্জামান মনে করেন, জঙ্গীবাদ দমনে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে একযোগে কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হবে। জঙ্গিবাদ দমন একক উদ্যোগে কখনোই সম্ভব নয়।