ফ্রান্স কেন বার বার সন্ত্রাসী হামলার শিকার হচ্ছে এ নিয়ে রীতিমতো গবেষণা হচ্ছে। ২০০৩ সাল থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত ১৩টি ছোট বড় হামলার শিকার হয়েছে ফ্রান্স। নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা সামাজিক বৈষম্য ও অন্য ধর্ম সম্পর্কে ব্যঙ্গ করার অধিকারকে দায়ী করছেন।
বিখ্যাত টাইম ম্যাগাজিন তিনটি কারণ সামনে এনেছে। তাদের মতে পাশ্চাত্যের অন্যান্য ঔপনিবেশিক শক্তি তার সাবেক ঔপনিবেশ থেকে সম্পূর্ণই হাত গুটিয়ে নিয়েছে। কিন্তু ব্যতিক্রম শুধু ফ্রান্স। সে তার সাবেক ঔপনিবেশ আলজেরিয়ার মতো আফ্রিকা ও নিকটপ্রাচ্যের মুসলিম দেশগুলোতে অর্থনৈতিক ও সামরিকভাবে নিজেকে যুক্ত রেখেছে। এছাড়া আধুনিক ফ্রান্স যা এখন জোরালোভাবে সংগঠিত ধর্মের বিরুদ্ধে তার প্রকাশটা প্রধানত তাদের গির্জার প্রভাবেই। আর এ কারণে গির্জা আইএসের চক্ষুশুল। তৃতীয়ত হামলার ঘটনায় ফ্রান্সসহ গোটা ইউরোপে উগ্র ডানপন্থিদেরও উত্থানের সম্ভাবনা বৃদ্ধি করবে। ফ্রান্সের সন্ত্রাসবাদ বিশেষজ্ঞ ফ্রাঁসোয়া বার্নাড ফরাসি দৈনিক দ্য লোকালকে বলেছেন, আইএস মনে করে, ক্রুসেডের দেশ ফ্রান্সের দ্বারা তারা নিপীড়িত। তাই গির্জায় হামলা তাদের অধিকার। বার্লিনের কাউন্টার টেররিজম সংস্থার প্রধান নির্বাহী ইয়েন পিয়েরে মনে করেন, বৈষম্য অন্যতম কারণ। ফ্রান্সের মুসলিম তরুণদের মধ্যে প্রচ- হতাশা। তাদের চাকরি-বাকরি নেই, উপরন্তু নেই কোন স্বীকৃতি।
সেন্ট লুইস ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটির নৃতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক জন আর আওয়েন মনে করেন, ফ্রান্স তাদের দশক পুরনো পররাষ্ট্রনীতি পাল্টাবে না। আর ব্যঙ্গ করার অধিকারের চর্চাও মিলিয়ে যাবে না। তবে এর মূল প্রভাব হতে পারে ইসলাম ও অভিবাসনকেদোষারোপ করার জন্য হামলাগুলোকে ব্যবহার করা। আর এমন একটি বিভ্রান্তি শুধু ডানপন্থিদেরকেই শক্তিশালী করে তুলবে।
লন্ডন থেকে মতিউর রহমান চৌধুরীর রিপোর্ট।