অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

হ্যালো ওয়াশিংটন - যুক্তরাষ্ট্রে “ মধ্যবর্তী নির্বাচন” ও রাজনীতির ওপর এর প্রভাব


হ্যালো ওয়াশিংটন - যুক্তরাষ্ট্রে “ মধ্যবর্তী নির্বাচন” ও রাজনীতির ওপর এর প্রভাব
হ্যালো ওয়াশিংটন - যুক্তরাষ্ট্রে “ মধ্যবর্তী নির্বাচন” ও রাজনীতির ওপর এর প্রভাব

২ রা নভেমবর ২০১০ সালে যুক্তরাষ্ট্রে হয়ে গেল মধ্যবর্তী নির্বাচন ।

নিয়ম অনুসারে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দু বছর পর সিনেট ও প্রতিনিধি পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সেনেট সদস্যদের নির্বাচন হয় প্রতি ছ বছর পরপর, আর প্রতিনিধি পরিষদের সদস্যদেরকে প্রতি দু বছর পর পর জনগনের কাছে যেতে হয় পুন:নির্বাচিত হওয়ার জন্যে।

যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসে প্রতিনিধি পরিষদে রিপাবলিকান দলের বিপুল বিজয়কে অভূতপুর্ব বলছেন অনেক বিশ্লেষক। অন্যদিকে সেনেটে ডেমোক্র্যাটদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে তবে তা খুব কম সংখ্যক আসনে । এ নির্বাচনের কি প্রভাব পড়বে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতির ওপর , সেটাই এই হ্যালো ওয়াশিংটন-এর আলোচনার বিষয়।

এই আলোচনার প্যানেলে অতিথি আলোচক ছিলেন যুক্তরাষট্রের ইলিনয় স্টেইট ইউনিভার্সিটির সরকার ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ড: আলী রীয়াজ। এবং ইরাক নির্বাচনে সাবেক উপদেষ্টা ড: এহতেশাম চৌধুরী। রিপাবলিকান দলের সদর দফতরে কাজ করেছেন এবং রিপাবলিকান দলের সক্রিয় কর্মী।

হাউজ অফ রিপ্রেজেন্টটেটিভে ৬০ টিরও বেশি আসন রিপাবলিকান দল পাওয়ায় প্রেসিডেন্ট ওবামা মুসলিম বিশ্বের দিকে বন্ধুত্বের যে হাত বাড়িয়েছিলেন, তা ব্যাহত হবে কি্না, একজন শ্রোতার এই প্রশ্নের জবাবে ড: রিয়াজ বলেন, এই নির্বাচনের ফলে সরকারের নীতিমালায় খানিকটা পরিবর্তন ঘটবে তবে তা আর্ন্তজাতিক নয় প্রধানত অভ্যন্তরীন নীতিমালায়। তবে প্রকারান্তরে গত আঠারো মাসেরও বেশি সময় ধরে ওবামা প্রশাসন নিয়েছে তা টিকিয়ে রাখার জন্যে তাদের যতটা সময় দিতে হবে তাতে করে হয়তো পররাষ্ট্র বিষয়ের প্রতি নজর দেওয়ার সময় খানিকটা কমবে। তবে পররাষ্ট্র নীতির ক্ষেত্রে ব্যাপক কোন পরিবর্তন ঘটবে বলে তিনি মনে করেন না।

আলোচনা প্যানেলের অতিথি আলোচক ড: এহতেশাম চৌধুরী বলেন, প্রশাসনের পররাষ্ট্র নীতি অনেক বছরের কাজের ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়। কাজেই প্রেসিডেন্ট ওবামা মুসলিম বিশ্বের সংগে যোগাযোগের যে নীতি নিয়েছেন কংগ্রেস তাতে অতটা বাঁধা দেবে না। বরং সমস্যা হবে বাজেটের ক্ষেত্রে। রিপাবলিকানরা বলছে বাজেটে ঘাটতির পরিমান বেশি । বিদেশী সম্পর্কের ক্ষেত্রে বাজেটের ব্যাপারে সমস্যা হবে ওবামা প্রশাসনের।

গণমাধ্যমের ভূমিকা ও বিপুল পরিমান অর্থ ব্যয় ছাড়াও ডেমোক্র্যাটিক পার্টির বড় রকমের বিপর্যয়ের আরো কতগুলো কারণের কথা বলছেন অধ্যাপক আলি রিয়াজ। তিনি বলছেন একটা কারণ হল মধ্যবর্তী নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট-এর পার্টি সবসময়ই খারাপ করে। ক্লিনটনের সময় সিনেট ফিরে গিয়েছিল রিপাবলিকানদের হাতে। কারণ অর্থনৈতিক পরিস্থিতির জন্যে জনগণের মধ্যে একটা ক্ষোভ আছে। গত দুবছরেরও বেশি ধরে সিনেট, হাউজ অফ রিপ্রেজেন্টটেটিভ, প্রেসিডেন্ট ছিলো ডেমোক্র্যাটিক পার্টির। তার স্বাভাবিক ভাবেই ক্ষোভ প্রকাশিত হয়েছে তাদের ওপর। দ্বিতীয় কারন, ওবামা প্রশাসন ঐতিহাসিক কতগুলো কাজ করেছে, স্বাস্থ্য বীমা সংস্কার, ক্রেডিট কার্ডের বিষয়টি, ফাইনানশিয়াল ইনসটিটিউশনগুলোর নিয়ন্ত্রণ, স্টুডেন্ট লোন, নারীর সমানাধিকারের বিষয়ে কিছু পদক্ষেপ, শিশু স্বাস্থ্যের বিষয়ে কিছু পদক্ষেপ, টোবাকো কোমপানীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ফলে এর সংগে যাদের গোষ্ঠী স্বার্থ আছে তাদের আঘাত লেগেছে। তারা সংগত কারনেই ডেমোক্র্যাটিক পার্টির কংগ্রেসের ক্ষমতা যতটা সম্ভব কমিয়ে আনার চেষ্টা করেছে। রিপাবলিকান পার্টির সংগে তাদের একটা আদর্শিক মিল আছে তাই রিপাবলিকান পার্টিকে তারা সমর্থন দিয়েছে। এছাড়া রিপাবলিকান পার্টির মধ্যে “টিপার্টি”র সমর্থক বলে পরিচিতরা অনেক বেশি প্রচারাভিযান চালিয়ে সবাইকে সংঘবদ্ধ করতে পেরেছে। যা ডেমোক্র্যাটরা পারেনি।

ড: এহতেশাম চৌধুরীও এই বক্তব্যের সমর্থন করেন। তিনি আরো বললেন যে জনগণ চায় অন্য পার্টি বাজেট নিয়ন্ত্রন করুক। জনগন ক্ষমতাটা এক পার্টিকেই সব দিতে চায় না, তারা মনে করেছে রিপাবলিকানরা বাজেট ঘাটতি কমাতে পারবে। তিনি আরো বলেন, প্রেসিডেন্ট ওবামা এত জনপ্রিয়তা নিয়ে আসার পর এবং এত ভালো ভালো কাজ করার পরও জনগণের কাছে তা কার্যকরভাবে প্রকাশ করতে পারেননি। এটা ডেমোক্র্যাটদের একটা বড় ব্যর্থতা।

XS
SM
MD
LG