অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

কিভাবে নির্বাচিত হন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট-৯: ৫৩৮টি ইলেক্টোরাল কলেজ


এ বছর ৮ই নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। সেই নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে বর্তমান প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার উত্তরসূরী নির্বাচিত হবেন। তবে নির্বাচনে যিনি জিতবেন, প্রেসিডেন্ট হিসাবে দায়িত্বে পেতে তাঁকে আরো একমাস অপেক্ষায় থাকতে হবে; ইলেক্টোরাল কলেজ সদস্যরা চুড়ান্তভাবে নির্বাচিত না করা পর্যন্ত।

সাধারন ভোটারদের দ্বারা যিনি নির্বাচিত হন, সাধারণত ইলেক্টোরাল কলেজ তাকেই চুড়ান্তভাবে প্রেসিডেন্ট হিসাবে নির্বাচিত করেন। তবে গত ২০০০ সালে এই নিয়মের ব্যাতিক্রম হয়েছিল।

ইলেক্টোরাল কলেজে রয়েছে মোট ৫৩৮ সদস্য। এটি কোনো ছাত্র শিক্ষকের কলেজ নয়। এঁরা একদল মানুষের সমষ্টি যাঁরা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তাঁদের রাজ্যের প্রতিনিধিত্ব করেন।

প্রতিটি রাজ্যে প্রতিনিধি পরিষদ বা কংগ্রেসে যে ক’জন প্রতিনিধি থাকেন; সেই রাজ্যে ইলেক্টোরাল কলেজ সদস্যও হন সেই একই সংখ্যায়। আর সংখ্যাটি নির্ধারিত হয় সেই রাজ্যের জনসংখ্যার ওপর।

যে রাজ্যের জনসংখ্যা যতো বেশী সেই রাজ্যের ইলেক্টোরাল কলেজ সদস্য ততো বেশী। আবার যে রাজ্যের জনসংখ্যা কম সে রাজ্যের ইলেক্টোরাল কলেজ সদস্যও কম।

যেমন আলাস্কা ও ভার্মন্ট রাজ্যের জনসংখ্যা সবচেয়ে কম বলে তাদের ইলেক্টোরাল কলেজ সদস্য ৩টি করে। আবার ক্যালিফোর্নিয়ার মতো বড় রাজ্যের ইলেক্টোরাল কলেজ সদস্য সংখ্যা ৫৫ করে।

ইলেক্টোরাল কলেজ পদ্ধতি তৈরী করেছে যুক্তরাষ্ট্রের যে সংবিধান, তাতে যে সকল রাজ্যে সাধারণ ভোটে কোনো প্রার্থী জিতে যান, তার ইলেক্টোরাল কলেজ ভোট দরকার হয় না। কিন্ত তা সবসময় মানা হয় না।

ফলে বেশিরভাগ রাজ্যেই প্রার্থীরা সাধারণ ভোটারদের যতো বেশী ভোটই পান না কেনো তাতে কোনো লাভ হয়না। ধরা যাক ক্যালিফোর্নিয়ায় ৯৯ শতাংশ ভোটার হিলারী ক্লিনটনকে ভোট দিয়েছেন, তিনি ঐ রাজ্যের পুরো ৫৫টি ইলেক্টোরাল কলেজ ভোট পাবেন। যদি তিনি ঐ রাজ্যের ৫১ শতাংশ ভোটও পান, তবুও তিনি ৫৫টি ইলেক্টোরাল কলেজ ভোট পাবেন।

দুটি রাজ্য ছাড়া কোনো প্রার্থী এক শতাংশ ভোটে জিতলেই ঐ রাজ্যের সবগুলো ইলেক্টোরাল ভোট তিনি পাবেন।

এখন এই ইলেক্টোরাল কলেজ কিভাবে নির্বাচনী প্রচারণায় প্রভাব রাখে?

ইলেক্টোরাল কলেজ পদ্ধতির অর্থ হচ্ছে: ধরা যাক-সম্ভাব্য রিপাবলিকান প্রার্থী ডনাল্ড ট্রাম্প এবং সম্ভাব্য ডেমোক্রেটিক দলীয় প্রার্থী হিলারী ক্লিনটন। তারা যদি জানেন কোন কোন রাজ্যে তারা জিতবেন; তাহলে সেই রাজ্যে তারা প্রচারণা চালাবেন না।

উদাহরনস্বরূপ: ডনাল্ড ট্রাম্প সম্ভবত আলাস্কা, আইদাহ এবং আরো ৭টি রাজ্যে জিতবেন যেখানে ১৯৬৮ সাল থেকে রিপাবলিকান প্রার্থীরা জিতে আসছেন।

অপরদিকে হিলারী ক্লিনটন মিনেসোটা, নিউইয়র্ক এবং আরো ৬টি রাজ্যে জিতবেন। ১৯৮৮ সাল থেকে এসব রাজ্যে ডেমোক্রেট প্রার্থীরা জিতে আসছেন।

এবারের নির্বাচনে ৯টি রাজ্যকে মনে করা হচ্ছে অনির্ধারিত ফলাফলের রাজ্য। এ্যামেরিকান এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটের বিশেষজ্ঞরা বলছেন রাজ্যগুলো হচ্ছে: কলোরাডো, ফ্লোরিডা, আইওয়া, নেভাদা, নিউ হ্যাম্পশায়ার, ওহাইও, পেনসেলভেনিয়া, ভার্জিনিয়া এবং উইসকনসিন।

এর মধ্যে ওহাইও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন। ১৯৬৪ সাল থেকে এই রাজ্যের ভোটেই প্রেসিডেন্ট প্রার্থী নির্ধারিত হয়ে আসছে। ফলে ওহাইও রাজ্যের প্রতি জোর সকল দলের প্রার্থীদের।

XS
SM
MD
LG