অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

“নিখোঁজ” ইরানি বিজ্ঞানীর ওয়াশিংটনে আত্মপ্রকাশ


পরমাণু পদার্র্থবিদ শাহরাম আমিরি
পরমাণু পদার্র্থবিদ শাহরাম আমিরি

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রী হিলারি ক্লিন্টন বলছেন যে ইরানের যে বিজ্ঞানি পাকিস্তানী দূতাবাসে উপস্থিত হয়েছেন, তিনি নিজের ইচ্ছাতেই যুক্তরাষ্ট্রে আছেন এবং তাঁর যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগে কোন বাধা নেই। এই বিজ্ঞানীকে কেন্দ্র করে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আমাদের স্টুডিওতে একটি আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।

আনিস : ইরানের রাষ্ট্র পরিচালিত সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে যে একজন ইরানী পরমাণু বিজ্ঞানী, ওয়াশিংটনে পাকিস্তানের দূতাবাসে আশ্রয় নিয়েছেন এবং অবিলম্বে তাঁর দেশে ফিরে যেতে চাইছেন। আসলে এই যে বিজ্ঞানীর কথা আমরা আলোচনা করছি, সেই তিরিশ বছর বয়সী পরমাণু পদার্থবিদ শাহরাম আমিরির এই বিষয়টিকে নিয়ে পরস্পর বিরোধী সংবাদ পুরো ব্যাপারটা এই সর্বসাম্প্রতিক মাত্রা প্রদান করেছে। একদিকে যেমন এই বিজ্ঞানী নিজেই নাকি দাবী করেছেন যে তাকে অপহরণ করা হয়েছিল এবং যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা তার ওপর তাঁর কথায় নির্যাতন চালিয়েছে অন্যদিকে বলা হচ্ছে যে যুক্তরাষ্ট্রে নিছক তিনি পড়াশোনার জন্যে এসছেন।

রোকেয়া : আপনি ঠিকই বলেছেন যে এক ধরণের পরস্পর বিরোধীতা এবং খানিকটা বিভ্রান্তি রয়েছে এই ব্যক্তিটি সম্পর্কে। একদিকে ইরান বলছে যে এই ব্যক্তিটি সৌদী আরব সফরের সময়ে, তাকে আটক করা হয় এবং যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থার কাছে হস্তান্তরিত করা হয়।

আনিস : তবে যুক্তরাষ্ট্র পরিস্কার করেই এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে অবশ্য মজার ব্যাপার কি জানেন, এই বিষয়টিকে আরো খানিকটা ঘোলাটে করে তুলেছে কয়েকটি ভিডিও বার্তা। সব শেষ যে বার্তাটি গত মাসে ইরানের একটি টেলিভিশনে প্রদর্শন করা হয়, তাতে আমিরি বলে যে লোকটিকে সনাক্ত করা হয়, তিনি বেশ নাটকীয় গল্পই বললেন।

রোকেয়া : যা বলেছেন ...। নাটকীয়ই বটে। তিনি বলছেন যে তিনি আমেরিকান গোয়েন্দাদের হেফাজত থেকে পালিয়ে লুকিয়ে ছিলেন। এ মাসের গোড়ার দিকে আরো দুটি বার্তা পাওয়া যায় ভিডিও তে। মনে করা হচ্ছে যে এগুলো ও আমিরির।

আনিস : এখানে এই প্রথম বার্তায় তিনি বলছেন যে তাকে গত বছর আমেরিকা -সৌদি আরব যৌথ অভিযানের সময়ে অপহরণ করা হয়। আবার পরের দিনই আরেকটি ভিডিওতে আমিরি বলছেন যে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের চিকিৎসা সম্পর্কিত পদার্থ বিজ্ঞান পড়ছিলেন এবং পারমানবিক অস্ত্র গবেষণার সঙ্গে তার কোন সম্পর্ক নেই।

রোকেয়া : আমেরিকার এ বি সি টেলিভিশন জানিয়েছে যে এই দ্বিতীয় ভিডিওটি তিনি ধারণ করেন কারণ তিনি ইরানের পক্ষ ত্যাগ করে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে চলে আসেন। বস্তুত তিনি ইরানের পারমানবিক কর্মসুচির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রকে সাহায্য করতে চাইছিলেন।

আনিস : এবং সেই অবস্থায় ইরান সরকার এই বিজ্ঞানীর আত্মীয় স্বজনকে হুমকি দেয় যে তিনি দেশে ফিরে না গেলে পরিণতি ভাল হবে না।

রোকেয়া : একটা বিষয় বোধ হয় এখানে উল্লেখ করা দরকার যে যেহেতু যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে কোন কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই, পাকিস্তান দূতাবাসই ওয়াশিংটনে ইরানের স্বার্থের দিকে নজর রাখে, সুতরাং তিনি পাকিস্তানী দূতাবাসেরই শরণাপন্ন হয়েছেন।

আনিস : আপনি একদম ঠিক বলেছেন। এই স্টুডিও তে আসার একটু আগেই আমরা জানলাম, পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রকের একজন মুখপাত্র আব্দুল বাসেত ইসলামাবাদ থেকে ভয়েস অফ আমেরিকার দিওয়া পশতু বিভাগকে এক সাক্ষাৎকারে জানান যে এই বিজ্ঞানী শাহরাম আমিরি ওয়াশিংটন সময়ে গতকাল সন্ধ্যে সাড়ে ছটায় পাকিস্তান দূতাবাসের ইরানী বিভাগে প্রবেশ করেন এবং তাঁরা এখন তাকেঁ ইরানে ফেরৎ পাঠানোর চেষ্টা করছেন। আর ঠিক এর আগেই তো যুক্তরাষ্ট্রের তরফ থেকে এ ব্যাপারে একটা প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে?

রোকেয়া : যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র পি জে ক্রা্‌উলি বলেছেন যে আমিরি তাঁর নিজের ইচ্ছাতেই যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছেন এবং তিনি মুক্ত মানুষ, যেখানে ইচ্ছে তিনি যেতে পারেন।

XS
SM
MD
LG