অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

মেয়েদের রক্ষায় গণমানুষের আন্দোলনের মাধ্যমে জাতিয় প্রচারণা গড়ে তুলতে চান মোদী


ভারতে হাসিমুখের বাবাদের সঙ্গে কন্যাদের সেলফি আপলোড করা ছবিতে ভরে গেছে সামাজিক মাধ্যমসমূহ। এর কারন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্রো মোদীর একটি আহবান। প্রধারনমন্ত্রীর ধারণা, বাবা কন্যাদের এ ধরণের হাসিমুখের ছবি ভ্রুণহত্যা প্রতিরোধে জাতিয় প্রচারণার জন্যে সহায়ক হবে। এ বিষয়ে নয়াদিল্লি থেকে রিপোর্ট করেছেন আঞ্জনা পাচরিচা; শোনাচ্ছেন সেলিম হোসেন।

রোববারের ঘটনা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্রো মোদী তার রেডিও ভাষণ শেষ করেছেন মাত্র। ভাষণে তিনি পিতা কন্যার হাসিমুখের সেলফি সামাজিক মাধ্যমে আপলোড করার আহবান জানান। হাজার হাজার পিতা তাদের কন্যাদের সঙ্গে তোলা সেলফি টুইট করেন।

সামাজিক মাধ্যম ব্যাবহারে পটু এই ভারতীয় নেতা জোর আশাবাদ প্রকাশ করে বলেন এভাতে তিনি দেশের মেয়েদের রক্ষায় জাতিয় প্রচারণা গড়ে তুলতে চান মানুষের আন্দোলনের মাধ্যমে।

মেয়ে বাচ্চা ভ্রুণ হত্যা প্রতিরোধের লক্ষ্যে এ বছরের গোড়ার দিকে ‘সেভ ডটার টিচ ডটার’ নামে আরেকটি প্রচারণা শুরু করেছিল সরকার। মোদীর ঐ আহবানে শুধুমাত্র ভারতীয় পিতারাই নয়- সুইযেনসহ বিভিন্ন দেশের পিতারা তাদের কন্যাদের সঙ্গে ছুবি পাঠিয়েছিল।

মোদী জানেন একটি ভালো ছবি কতো বড় প্রভাব ফেলতে পারে। বেজিং এ সাম্প্রতিক সফরে চীনা প্রধানমন্ত্রী লি কেকুইয়াঙ এর সঙ্গে তোলা এক সেলফিতে ৩ কোটি হিট পড়েছিল।

প্রধানমন্ত্রী বলেন হারিয়ানা রাজ্যের বিবিপুরের এক গ্রামপ্রধানের সেলফি উইথ ডটার শিরোনামের ছবি থেকে তিনি অনুপ্রেরণা পান। আর হারিয়ানা হচ্ছে ভারতের লিঙ্গ বৈষম্যের বিচারে সবচেয়ে বাজে অঞ্চল।

গ্রাম প্রধান সুনিল জাগলান ঐ অঞ।চলে নারীর মর্যাদা বৃদ্ধির লক্ষ্যে নানা কাজকর্ম করে চলছিলেন। ঐসব কাজকর্মের অংশ হিসাবে গত মাসে সেলফি উইথ ডটার নামে একটি প্রতিযোগিতার ঘোষণা দেন।তিনি তার সাড়ে তিন বছরের কন্যার সঙ্গে তোলা ছবি আপলোড করেন।

তিনি বলেন তিনি যখন তার নবজাতক কন্যারজন্যে মিস্টি বিতরন করেন তার সহপাঠিরার ও অন্যান্যরা ভেবেছিল যে ছেলে হওয়ার আনন্দে মিস্টি খাওয়াচ্ছি। তারা বিশ্বাস করতে পারেনি যে কেউ মেয়ে হওয়ার আনন্দে মিস্টি খাওয়াতে পারে।

জাগলান বলেন নার্সরা পর্যন্ত টিপস নিতে চায়নি। নার্সরা বলে যে এ্যাতো ভালো টিপতো শুধু ছেলে জন্মের সময় দেয়া হয়, মেয়ে হলে কি কেউ টিপস দেয় নাকি।

দুই মেয়ের বাবা জাগলান বলেন তিনি তার কন্যাদেরকে এমন পরিবেশে বড় করতে চান না। তাই তিনি মেয়েদের মর্যাদা বাড়ানোর চেষ্টা করে চলেছেন। তার প্রচেষ্টা কাজ হচ্ছে। ওই গ্রামে লিঙ্গ বৈষম্য কমতে শুরু করেছে। মেয়েদেরতকে নিয়ে শত শত বছরের কুসংস্কার পরিবির্তিত হচ্ছে।

প্রধামন্ত্রী মোদী বলেছেন বিবিপুরের মতো অঞ্চলে লিঙ্গ বৈষম্য কমার লক্ষন খুবই ইতিবাচক ব্যপার।

তিনি বলেন সরকারের যে দায়িত্ব তা যখন কোনো ব্যাক্তি বিশেষ, সমাজ, কোনো বিশেষ গ্রাম, করে দেয়, তখন তা সত্যিই খুব শক্তিশালি হয়”।

সামাজকর্মীরা আশা করেণ সর্বসাম্প্রতিক এই উদোগ প্রচেষ্টা শুধুমাত্র ছবি তোলা আর আপলোড করার সুযোগ নয়, বরং তা ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েদের সমান মর্যাদা প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টায় একটি ইতিবাচক ও সফল পদক্ষেপ।

XS
SM
MD
LG