অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

প্রেসিডেন্ট ওবামার ভাষণের প্রতিক্রিয়া এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী কেরির মধ্যপ্রাচ্য সফর


বুধবার প্রেসিডেণ্ট ওবামা ইসলামিক স্টেট জঙ্গীদের দমনের জন্যে তাঁর নীতিকৌশল ঘোষণা করেন। এই কৌশলের অংশ হিসেবে তিনি ইউরোপীয় এবং আরব রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে একটি ব্যাপক কোয়ালিশন তৈরির কথা বলেছেন। ওদিকে এই পরিকল্পনা অংশ হিসেবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি এখন তুরস্কে রয়েছেন।

প্রেসিডেন্টের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া, মধ্যপ্রাচ্যে মিঃ কেরির সফর সম্পর্কে Al Pessin ও Scott Stearns-এর রিপোর্ট থেকে বিস্তারিত শুনুন শতরূপা বড়ুয়া ও সেলিম হোসেনের কাছে।

প্রেসিডেন্ট ওবামা তাঁর বক্তব্যে স্পষ্ট করে বলেছেন, তাঁর নীতিকৌশলের একটা বড় অংশ হলো শরীকদের সঙ্গে একটি ব্যাপক কোয়ালিশন।

গত সপ্তাহে নেটো সম্মেলনে এই প্রচেষ্টা শুরু হয়। সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী ১০টি দেশ ইরাক ও সিরিয়ায় জঙ্গী দমনের ব্যাপারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়। এবং আশা করা হচ্ছে, অবসরপ্রাপ্ত বৃটিশ বৃগেডিয়ার Ben Barry বলেন, এবারের ইরাক বিরোধী পদক্ষেপে ইউরোপীয় সরকারবৃন্দের কাছ থেকে গতবারের তুলনায় বেশি সমর্থন পাওয়া যাবে. তিনি এখন কাজ করছেন, International Institute of Strategic Studies-এ।

মিঃ ব্যারি বলেছেন, আমি নিশ্চিত এই আলোচনা হতো না, যদিনা, ঐ দেশগুলোর সরকারপ্রধানদের আত্মবিশ্বাস না থাকত যে নিয়ন্ত্রিত অংশগ্রহণের প্রশ্নে রাজনীতিক, জনগণ এবং মিডিয়ার পক্ষ থেকে সমর্থন পাওয়া যাবে।

জনমত জরিপেও এরই প্রতিফলন দেখা গেছে। ওদিকে ফ্রান্স আগামী সপ্তাহে একটি আলোচনার ব্যবস্থা করছে, যার লক্ষ্য এই প্রচেষ্টার আরো সমন্বয় সাধন এবং জনসমর্থন আদায় করা।

অবশ্য একটা মাত্রা বাইরে ইউরোপীয়রা অগ্রসর হবে না, বললেন, Henry Jackson Society’র Robin Simcox.

তিনি বলেছেন, যদি স্থলবাহিনী পাঠানো হয়, তাহলে হয়তো সমর্থনের মাত্রা কম হবে। অবশ্য দুঃখজনক হলেও সত্যি, শেষ পর্যন্ত হয়তো ISISকে দমন করতে হলে স্থলবাহিনীরই প্রয়োজন হবে।

সাম্প্রতিক বিমান হামলার পাশাপাশি, স্থানীয় ইরাকী বাহিনীকে প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দেবার জন্যে প্রেসিডেণ্ট ওবামা ৪৭৫জন সেনাসদস্য পাঠাচ্ছেন। তারা গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদান করবে, এবং যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি মিত্রদেশ ইরাক সরকারকে সামরিক সরঞ্জাম বিক্রি করবে।

অবশ্য প্রেসিডেন্ট ওবামা চাইছেন আরো দেশ এই প্রচেষ্টায় যুক্ত হোক।

প্রেসিডেণ্ট বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের মত পরাশক্তি একটি বড় পার্থক্য তৈরি করতে পারে। কিন্তু ইরাকীদের যা করার কথা তা তাদেরই করতে হবে, আমরা তা তাদের জন্যে করতে পারি না। তেমনিভাবে, আমরা আরব শরীকদের জন্যে তাদের অঞ্চলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারিনা।

ওদিকে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি, প্রেসিডেন্ট ওবামা প্রস্তাবিত নীতিকৌশল বাস্তবায়নের জন্যে এখন তুরস্ক সফর করছেন। ইসলামিক স্টেটের অর্থ সরবরাহ, তেল চোরাচালান এবং বিদেশী যোদ্ধাদের অনুপ্রবেশ বন্ধে তুরস্ক একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।

তুরস্কের সঙ্গে সিরিয়ার দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে। অনুমান করা হচ্ছে, সম্প্রতি এই সীমান্ত অতিক্রম করেই ইসলামিক স্টেটের নতুন সদস্যরা যুদ্ধে যোগ দিচ্ছে। জেদ্দার বৈঠকে তুরস্কের কর্মকর্তারা বলেছেন্‌, তারা আরো ৬ হাজার নতুন তরুণকে ইসলা্মিক স্টেটে যোগ দিতে বাধা দিয়েছে। এবং প্রায় ১ হাজার তরুণকে ফেরত পাঠিয়েছে।

ভয়েস অফ আমেরিকার সঙ্গে এক সাক্ষাতকারে মিঃ কেরি বলেছেন, তুরস্ক এই চ্যালেঞ্জকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে।

তিনি বলছিলেন, বহু বিদেশী যোদ্ধা তুরস্ক হয়ে এসেছে। সুতরাং, তুরস্ক এ ব্যাপারে কি ভূমিকা পালন করতে পারে, সে বিষয়ে অনেক আলোচনা করতে হবে। অবশ্য তারা তাতক্ষণিকভাবে এই পরিস্থিতির ব্যাপারে স্পর্শকাতর। এবং আমরা তার প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমরা ভবিষ্যত কর্মপরিকল্পনা নিয়ে তাদের সঙ্গে আলোচনা করব।

ইসলামিক স্টেট দমন প্রসঙ্গে প্রেসিডেণ্ট ওবামা বলেছেন, এটি একটি দীর্ঘমেয়াদী প্রচেষ্টা। বেশ কয়েক বছর লেগে যাবে। এরকম দীর্ঘমেয়াদী প্রক্রিয়ায় মাঝেমধ্যেই বিপর্যয় আসতে পারে। তিনি যে কোয়ালিশন তৈরি করতে চেষ্টা করছেন, তা কতদূর টিকবে, তা সময়ই বলে দেবে।

প্রেসিডেন্ট তাঁর ৪ দফা কর্মকৌশলের অংশ হিসেবে, ঐ অঞ্চলের শরণার্থীদের মানবিক সাহায্য সরবরাহ বহাল রাখার কথা বলেছেন।

তুরস্কে পররাষ্ট্রমন্ত্রী কেরি, প্রতিবেশি সিরিয়ায় আরো ৫০কোটি ডলার মানবিক সাহায্য পাঠানোর ঘোষণা দেন। এই নতুন মানবিক অনুদানের লক্ষ্য সিরিয়ায় যে শরণার্থীরা আটকা পড়ে আছে তাদের এবং জর্ডান, তুরস্ক, ইরাক, লেবানন এবং মিশরে যে আরো ৩০ লক্ষ শরণার্থী আছে তাদের সাহায্য করা।

তুরস্কের পর মিঃ কেরি মিশর সফর করবেন। সেখানে, ইসলামিক স্টেটের মোকাবিলা এবং গাযার অস্ত্রবিরতি নিয়ে তিনি মিশরের নতুন সরকারের সঙ্গে আলোচনা করবেন।

সরাসরি লিংক

XS
SM
MD
LG