অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

হাজার হাজার অসুস্থ শরনার্থীর অস্ত্রপচার প্রয়োজন; কিন্তু হচ্ছেনা


সংঘাত, বিচারহীনতা ও মানবাধিকার লংঘনের কারনে নিজ দেশ থেকে পালিয়ে শরনার্থী হয়েছেন সারা বিশ্বে, ৬ কোটি মানুষ। নতুন এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, শরনার্থীদের কারনে সৃষ্ট মানবিক সংকট এখন জরুরী স্বাস্থ্য সংকটে রুপ নিয়েছে; যার প্রতি আমাদের নজর কম। জো ডি কাপুয়ার রিপোর্ট শোনাচ্ছেন রোকেয়া হায়দার ও সেলিম হোসেন।

সরাসরি লিংক

হাজার হাজার অসুস্থ শরনার্থীর অস্ত্রপচার প্রয়োজন; কিন্তু নানা সমস্যার কারনে তা সম্ভব হচ্ছেনা। জনস হপকিনস ব্লুমবার্গ স্কুল অব পাবলিক হেল্থের গবেষণায় দেখা যায় অসুস্থ শরনার্থীদের জন্যে বছরে ২৮ লক্ষ অস্ত্রপার প্রয়োজন। কেনো, সে প্রশ্নের উত্তর দিলেন এ বিষয়ক গবেষণার নেতা ড. এ্যাডাম কুশনার।

“অস্ত্রপচারকে সাধারণভাবে গণস্বাস্থ্যের বা বৈশ্বিক স্বাস্থ্যের অংশ ধরা হয়না। এটাকে সেই অবস্থানে আনতে গত কয়েক বছর ধরে প্রচেষ্টা চলছে। এর পক্ষে অনেকেই কথা বলছেন। এই গবেষণায়ও বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়া হয়”।

তিনি বলেন শরনার্থীদের জন্যে ছোটোখাটো কাটাছেড়া চিকিৎসায় মৌলিক অস্ত্রপচার সুবিধা দরকার।

“সিজারিয়ান সেকশন, হার্নিয়া বা একশিরা, এ্যাপেন্ডিসাইটিস, হাড় মচকানো বা ভাঙ্গা, এসব ক্ষেত্রে অস্ত্রপচার প্রয়োজনীয়। অঙ্গ প্রতিস্থাপন বা হৃদরোগের মত জটিল অস্ত্রপচারের কথা আমরা বলছি না। ছোটখাটো অস্ত্রপচার যেমন বাচ্চারা আছাড় খেয়ে হাত পা ভেঙ্গে যাওয়া কিংবা কোথাও কেটে যাওয়া, যাতে সেলাই দরকার, এসব ছোটখাটো অস্ত্রপাচারের সুবিধা তাদেরকে দেয়া দরকার”।

ড. এ্যাডাম কুশনার বলেন শুধু সংকটের মধ্যে যারা রয়েছেন তারা নয়, উন্নয়নশীল দেশে এই সুবিধা কম লোকই পান।

“আমরা সিয়েরা লিওন এবং নেপাল ও রুয়ান্ডায় গবেষণা চালিয়ে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অবস্থা দেখেছি। সিয়েরা লিওনে ইবোলা মহামারীর আগে ২৫ শতাংশ মানুষ বলেছে তাদের সার্জিক্যাল সুবিধা দরকার। সোমালিয়া, কেনিয়া এবং ইথিওপিয়ার অবস্থাও একই রকম। এর সঙ্গে শরনার্থী জনসংখ্যা যুক্ত হয়ে এ সংকট আরো ঘনীভূত হয়েছে”।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে ১৫ শতাংশ গর্ভবতী নারী, জটিলতায় ভোগেন এবং তাদের অস্ত্রপচার দরকার হয়। আর শরনার্থীদের মধ্যে তা আরো বেশী।

গবেষণায় দেখা যায় শরনার্থীরা কাগজপত্রের অভাব, অর্থসংকটসহ নানা কারনে অস্ত্রপচার সুবিধা থেকে বঞ্চিত হন।

“অনেকেই মনে করেন অস্ত্রপচার খুব ব্যায়বহুল; এর দরকার নেই। বিকল্প খোঁজেন। কিন্তু ধরা যাক একটি বাচ্চার এ্যপেন্ডিসাইটিস কিংবা একজন প্রাপ্ত বয়স্কের হার্নিয়া; অস্ত্রপচার না করলে তারা হয়ত এতে মারা যাবেনা। কিন্তু অস্ত্রপচার করলে ভালো হবে, কাজ করেতে পারবে যা অর্থনৈতিকভাবে উৎপাদনশীল”।

ফলে কি করা উচিৎ?

“এটি বড় প্রশ্ন। বহু ধরনের স্বাস্থ্য সেবা রয়েছে। সরকারী, আন্তর্জাতিক, ব্যাক্তিগত সেবা গোষ্ঠী, তারা এতে সহায়তা করতে পারে। তাদেরকে প্রথমে বুঝতে হবে, মানতে হবে যে এই সংকটে সহায়তা করা দরকার। তারপর তা ক্রমে সফল করতে হবে”।

ড. কুশনার বলেন শরনার্থীদের জন্যে যেভাবে অন্যান্য স্বাস্থ্য সেবা দেয়া হয়, সার্জারীও সেভাবেই সহজ্যলভ্য করে তুলতে হবে। এই গবেষণা রিপোর্টটি ছাপা হয় World Journal of Surgery তে।

XS
SM
MD
LG