অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

যুক্তরাস্ট্রে আজকের মধ্যমেয়াদি নির্বাচন সম্পর্কে একটি গোলটেবিল আলোচনা


যুক্তরাষ্ট্রে মধ্যমেয়াদি নির্বাচনের দৃশ্য
যুক্তরাষ্ট্রে মধ্যমেয়াদি নির্বাচনের দৃশ্য

যুক্তরাষ্ট্রে মঙ্গলবার মধ্যমেয়াদি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে । কংগ্রেসের নিম্ন কক্ষের ৪৩৫টি আসনের সব কটির জন্যে এবং উচ্চ কক্ষ সেনেটের ১০০টি ৩৭টি আসনের জন্যে এই ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে ভোরবেলা থেকেই। যুক্তরাস্ট্রের এই মধ্যমেয়াদি নির্বাচন এর সম্ভাব্য ফলাফল নিয়ে আঁচ অনুমান এবং এর যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে এর প্রভাব নিয়ে ভয়েস অফ আমেরিকার স্টুডিওতে একটি গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করা হয়। এই আলোচনায় ফ্লোরিডা থেকে যোগ দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের উইসকন্সিন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসার এমিরেটাস ড জিল্লুর রহমান খান । প্রফেসার খান বর্তমানে ফ্লোরিডার রলিন্স কলেজে অধ্যাপনা করছেন । গোড়াতেই ভয়েস অফ আমেরিকার আহসানুল হক ম্যারিল্যান্ড অঙ্গরাজ্যের একটি ভোট কেন্দ্র থেকে ভোটগ্রহণের পরিস্থিতি এবং এই নির্বাচনে সকল ধর্ম-বর্ন নির্বিশেষে সকল শ্রেণীর ভোটদাতাদের ভোটদানের কথা বলেন।

আসলে এই নির্বাচনে ভোটাররা যাতে ভোট দিতে যান , সেটা বেশ গুরুত্বপুর্ণ বিষয় , বিশেষত ডেমক্রেটিক পার্টির জন্যে তো বটেই । প্রেসিডেন্ট ওবামা তাইা বলেন , “ আপনার সমাজকে , আপনার দেশকে বদলে ফেলুন। আর সে জন্যে যা করতে হবে , সেটি হলো ভোট দেওয়া”। অর্থাৎ প্রেসিডেন্ট ২০০৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময়ে চেঞ্জ বা পরিবর্তনের যে উদাত্ত আহ্বান জানিয়ে ছিলেন এবং যাতে তখন আমেরিকানরা বিপুল পরিমাণে সাড়া ও দিয়েছিল সেই ভাবে এবারও পরিবর্তনের ডাক দিয়েছেন।


তবে এখন পরিস্থিতিটা ভিন্ন । প্রতিনিধি পরিষদে ডেমক্র্যাটিক স্পিকার ন্যান্সি পেলসির স্থলাভিষিক্ত হবেন বলে যে রিপাবলিকান নেতা জন বেনার দাবি করছেন যে রিপাবলিকানরা যদি সৌভাগ্যবশত সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে এবং তিনি যদি হাউজ স্পিকার হন , তা হলে কংগ্রেসে বড় রকমের পরিবর্তন আসবে । আসলে পরিবর্তনের কথা দু দলই বলছেন । কিন্তু নির্ভর করছে কি ধরণের পরিবর্তন এই দুটি দল এবং তাদেঁর সমর্থকরা চাইছেন।


এবারের নির্বাচনের যেটুকু পুর্বাভাষ পাওয়া যাচ্ছে , তাতে মনে হচ্ছে যে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের উভয় কক্ষেই ডেমক্র্যাটরা তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারাতে পারে। ২০০৬ সালের নির্বাচনে কংগ্রেসের নিয়ন্ত্রণ এবং ২০০৮ সালে হোয়াইট হাউজের নিয়ন্ত্রণ যে ভাবে ডেমক্র্যাটরা গ্রহণ করেছিল , সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে , এবার রিপাবলিকানরা অনেকটা ১৯৯৪ সালের পর বিপুল ভাবে বিজয়ী হতে পারে যে অনুমান চলছে , সেটার পেছনে অর্থনৈতিক কারণ একটা বড় উপাদান বলে অনেকেই মনে করেন। অধ্যাপক জিল্লুর রহমান খান বলেন যে অর্থনৈতিক কারণেই অতীতেও কয়েকটি নির্বাচনে ফলাফল ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্টের অনুকুলে যায়নি।

তবে এই অর্থনৈতিক অধোগতির বিষয়টিকেই বড় করে দেখছেন রিপাবলিকানরাও। ইন্ডিয়ানার রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান মাইক পেন্স সিবিএস কে বলছেন যে আমেরিকানরা এই অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বড় রকমের পরিবর্তন চান । তাঁর মতে লোকজন একটু অতঙ্কিত বোধ করছে। ফেডারেল সরকারের ঘাটতিতে , সরকারের অর্থনৈতিক পনুরুদ্ধার পরিকল্পনায় এবং সরকার যে স্বাস্থ্য খাতটি গ্রহণ করেছে , ফেডারেল সরকারের ঘাটতি হচ্ছে লক্ষ্ কোটি ডলার । অবশ্য অধ্যাপক জিল্লুর রহমান খান বলেন যে প্রেসিডেন্ট ওবামা স্বাস্থ্য সম্পর্কিত যে নীতি গ্রহণ করেছেন , তাতে তাঁর প্রশংসাই পাওয়া উচিৎ।
তবে আসল কথাটা হচ্ছে অনেকেই মনে করেন যে প্রেসিডেন্ট ওবামার কাছ থেকে প্রত্যাশার পরিমাপটা বড় বেশি। যেমন পেনসিলভেনিয়া অঙ্গরাজ্যের গভর্ণর এড রেন্ডেল বলছেন যে এটাতো বিবেচনায় নিতেই হবে যে তিনি যখন দায়িত্ব গ্রহণ করেন তখন তাঁর সামনে যে সব সমস্যা ছিল , তার কোনটাই তার নিজের তৈরি নয় এবং গত ৫০ বছরে আর কোন আমেরিকান প্রেসিডেন্ট এ রকম সমস্যার মুখে দায়িত্ব গ্রহণ করেননি। রেন্ডেল অবশ্যই এ জন্যে আগেকার ৮ বছরে সৃষ্ট সমস্যাকে দায়ি করেন এবং বলেন যে রাতারাতি তো এই সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়।

XS
SM
MD
LG