অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের ছাত্র নাজিমুদ্দিনের হত্যাকান্ডে বিশ্বব্যাপী ব্যাপক প্রতিক্রিয়া হয়েছে। প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও পেন। বাংলাদেশেও বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা ফুঁসে উঠেছে।
বুধবার রাত ৯টার দিকে পুরনো ঢাকার সূত্রাপুরের একরামপুরে সামাদকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। হত্যাকারীরা পরে গুলিও ছুড়ে। এ হত্যাকান্ডের দায়িত্ব এখন পর্যন্ত কেউ স্বীকার করেনি।
সামাদ ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে অনলাইনে লেখালেখিতে সক্রিয় ছিলেন। ২৮শে মার্চ এক স্ট্যাটাসে তিনি রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে ইসলামকে বহাল রাখার সমালোচনা করেন। বলেন, রাষ্ট্রধর্ম দেখে কেউ করিস না ভয়, আড়ালে তার ইসলামী জঙ্গি হাসে। নাজিম উদ্দিন সামাদ মঙ্গলবার রাত ৯টা ১০ মিনিটে ফেসবুকে শেষ স্ট্যাটাস দেন। এতে তিনি দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। বলেন, সরকার এবার একটু নড়েচড়ে বস বাবা। দেশের যা অবস্থা, আইন শৃঙ্খলার যা অবনতি তাতে গদিতে বেশিদিন থাকা সম্ভব হবে না। সামাদকে লেখালেখি না করার জন্য পরিবারের তরফে একাধিকবার বারণ করা হয়েছিল।
সুত্রাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তপন চন্দ্র সাহা বলেছেন, অনলাইনে লেখালেখির কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে কিনা এমন খবর তাদের কাছে নেই। ঘটনার একজন প্রত্যক্ষদর্শী বললেন, সামাদ হত্যার প্রতিবাদে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। বাহাদুর সাাহ পার্কে সমাবেশ থেকে সরকারকে আলটিমেটাম দেয়া হয়। জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক রবার্ট ওয়াটকিনস এক বিবৃতিতে তদন্তের মাধ্যমে এই হত্যার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত পিয়েরে মানদুন এক বিবৃতিতে বলেন, মত প্রকাশের স্বাধীনতা একটি মৌলিক মানবাধিকার। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশ বলেছে, এ হত্যা প্রমাণ করে বাংলাদেশের কতৃপক্ষ স্বাধীন মত প্রকাশের চর্চাকারীদের সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ। দ্য রাইটার্স ইন প্রিজন কমিটির চেয়ারম্যান সলিল ত্রিপাঠি এক বিবৃতিতে বলেছেন, সরকার একটি সেক্যুলার পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারেনি, যেখানে মানুষ নিজের মতামত নির্ভয়ে ও স্বাধীনভাবে ব্যক্ত করতে পারে।
ঢাকা থেকে মতিউর রহমান চৌধুরীর রিপোর্ট।