অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

মানুষ এবং যক্ষা রোগের উতস আফ্রিকা


মানুষ এবং যক্ষা রোগের উতস আফ্রিকায়
তাহিরা কিবরিয়ার

বলা হয়ে থাকে মানুষের জীবনের উৎস আফ্রিকায় আর একই সংগে টিবি রোগের উত্তসও সেখান থেকেই। নতুন একটি গবেষণা দেখা গিয়েছে জীবনের ক্রমোবিবর্তন এবং যক্ষা রোগ, সেই পুরাকাল থেকে পাশাপাশি বিকাশ লাভ করেছে।

৭০ হাজার বছর আগে থেকে আফ্রিকাতে প্রথম যক্ষা রোগের ব্যাক্টেরিয়া ছিল। সুইস ট্রপিক্যাল এন্ড পাবলিক হ্যালথ ইনিষ্টিটিউট এর অধ্যাপক স্যাবেষ্টিয়ান গ্যানিয়ুর নেতৃত্বে পরিচালিত একটি গবেষণাদল এই তথ্যটি আবিষ্কার করেছেন।
গ্যানায়ু বলেন, “যক্ষা রোগের উতপত্তি নিয়ে একদিকে যেমন দীর্ঘ দিনের ধরে আলোচনা চলছে তেমনি বিশেষ ধরনের ঐতিহাস সব প্রশ্নেরও অবতারনা হয়েছে। তবে অন্যদিকে অতীত থেকে আমরা যদি জানতে পারি, সময়ের সংগে সংগে এই রোগের সংক্রমণ কিভাবে বিবর্তিত হয়েছে? তা’হলে ভবিষ্যতে ঐ সব যোগসূত্র থেকে আগে ভাগে মহামারীর সম্ভা্ব্যত আমরা আঁচ করতে পারব।

গবেষকরা মূলত যক্ষা রোগের মূল উতস খোঁজার জন্য যক্ষার জেনেটি উপাদান বা বংশানুক্রমিক ধারা যে জীন বহন করে তার উপাদানের ওপরেই নির্ভর করছেন।

গ্যানায়ু বলেন, “বর্তমানে যেসব ব্যক্টেরিয়া জীবন্ত তার বংশানুক্রমিক উপাদানের তথ্য আমরা গ্রহণ করেছি। মানুষসহ সব ধরণের জীবসত্বার বংশানুক্রমিক উপাদানের খোঁজ করা হয় সেই পদ্ধতিই ব্যবহার করা হয়েছে ”।

গ্যানায়ু বলেন, মানুষের বিবর্তনধারা এবং যক্ষা রোগের বিবর্তন সম্ভাবত পাশাপাশিই বেড়েছে।

তিনি বল্লেন, “আমার মতে একে এভাবে বল্লে ভাল হয় যে একটি অপরটির মাঝে অন্তর্নিহিত। ভেবে দেখুন যক্ষার ব্যকটেরিয়া আসলে আপনার দেহের ভেতরে বাস করছে। হ্যাঁ পাশাপাশি এবং একটি আরেকটির ভেতরে।”

মানবদেহর ভেতরেই ব্যাকটেরিয়া বাস করে এবং এগুলো কিন্তু সব সময়ই থাকে। এটাও সত্যি যে এগুলো আমাদের বাঁচিয়ে রাখতে সাহায্য করে। গবেষকেরা এটাই নির্ধারণ করার চেষ্টা করছেন যে যক্ষা রোগের ব্যাকটেরিয়া কি সব সময়ই মানুষের জন্য খারাপ ছিল কিনা।
please wait
Embed

No media source currently available

0:00 0:03:50 0:00
সরাসরি লিংক


মানুষের মধ্যে এক ধরণের সংক্রমণ লুকিয়ে থাকতে পারে অর্থাৎ মানুষ ঐ সব ব্যাক্টেরিয়া বহন করে, এক কথায় একে ল্যাটেন্সি বা ল্যাটেন্ট সংক্রমণ বলা হয়। মানুষ এই সংক্রমণ বহন করবে কিন্তু কোন রকম অসুখ বা অসুস্থ ও হবে না। যারা এই ব্যাক্টেরিয়াগুলো বহন তাদের মধ্যকার বেশির ভাগ মানুষের কিন্তু যক্ষা রোগ হতে দেখা যায় না।


এই গবেষণায় এটাই নিশ্চিত করার চেষ্টা করা হয়েছে যে প্রায় দুই’শো কোটি মানুষের দেহে যক্ষার ব্যাক্টেরিয়া থাকলেও শুধুমাত্র ৫ থেকে ১০ শতাংশ মানুষ এই রোগে কেন ভুগছে।

তবে কি মানুষ কোন একসময় এই ব্যাক্টেরিয়া থেকে উপকৃত হত? এই প্রশ্নটি উঠে এসেছে।

গবেষক বললেন, “৫ থেকে ১০ শতাংশ মানুষের এই রোগ হয়ার পেছনে বিশেষ কিছু থাকলেও থাকতে পারে তবে এমন হতে পারে যে কোন কারন ছাড়াই তারা সংক্রমিত হয়েছেন। আরেকটি ক্ষেত্রে যখন কারো দেহে এই ব্যাক্টেরিয়া সুপ্ত অবস্থায় থাকে এবং তারা যদি বহুমুত্র রোগ, এইচ আই ভি বা অপুষ্টিতে ভোগেন তাহলে তাদের টিবি হবার ঝুঁকি মারাত্মক ভাবে বেড়ে যায়। তবে এই ব্যাক্টেবিয়া মানব দেহে সুপ্ত অবস্থায় থাকার কারনে সম্ভাবত অন্য রোগ থেকে দেহকে রক্ষা করে। এই নিয়ে অনেক আঁচ অনুমান চলছে যা পুরোপুরি অবহলা করা যায়না।”

গ্যানায়ু বলেন ৬৫-৭০ হাজার বছর আগে মানুষের সংগে যক্ষা রোগও আফ্রিকার বাইরে আসে। ১০ হাজার বছর আগে মানুষ চাষাবাদ এবং গৃহপালিত পশুপালন শুরু করে। তখন মনে করা হত যে কোন এক সময় গৃহপালিত পশুপাখী থেকেই প্রথমে ব্যাক্টেরিয়া মানুষের মধ্যে ছড়ায়।

গবেষকেরা বলেন যক্ষা রোগের বিবর্তনের ইতিহাস জানা গেলে নতুন অষুধ এবং টিকা উদ্ভাবনে সাহায্য করবে।
XS
SM
MD
LG