ইসলামিক ষ্টেট গোষ্ঠির কবল থেকে রামাদির পূন:নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠায় ইরাকি বাহিনীকে সহায়তা করার প্রতিশ্রতি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বাগদাদ থেকে আনবার প্রদেশেরে এ রাজধানী মাত্র ১২৫ কিলোমিটার দূরে এবং কর্মকর্তারা আশংকা করছেন ঐ সন্ত্রাসী গোষ্ঠিকে হঠানো বেশ কঠিন হবে। পেন্টাগন থেকে ভয়েস অব আমেরিকার জাতিয় নিরাপত্তা সংবাদদাতা জেফ সেলডিনের রিপোর্ট থেকে শোনাচ্ছেন সেলিম হোসেন।
ইন্টারনেটে ইসলামিক ষ্টেট জঙ্গী গোষ্ঠির প্রচার করা ভিডিও। ভিডিওটি দেখলে বোঝা যায় যে তারা রামাদি দখল করে নিয়েছে। পেন্টাগন মুখপাত্র কর্নেল ষ্টিভ ওয়ারেনের বক্তব্য হচ্ছে:
“বিষয়টি আমাদের জানা। রামাদি প্রায় বছর খানেক হলো ঘিরে রাখা হয়েছে। এর মানে হচ্ছে এখন ইরাকী বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে রামাদির দখল পূন:প্রতিষ্ঠা করতে হবে”।
ইসলামিক ষ্টেট যোদ্ধাদের তান্ডবে রামাদি ছেড়ে সরে গিয়েছেন ইরাকী বাহিনী। আর তাই এখন ইসলামিক ষ্টেট যোদ্ধাদের হঠানোর দায়িত্ব নিতে হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ও যৌথ বাহিনীকে। ইতিমধ্যেই সোমবার ইসলামিক ষ্টেটের ঘাঁটি লক্ষ্য করে ৮টি বিমান হামলা চালানো হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সেনা কর্মকর্তারা বলেছেন রামাদিতে ইসলামি ষ্টেট এ্যাতো শক্ত ঘাঁটি গেড়েছে যে সেখানে আরো শক্তিশালি আক্রমন চালাতে হবে। ইরাকী বাহিনীর শক্তি নিয়েও প্রশ্ন উটেছে। সেখঅনকার এক সেনা কর্মকর্তা ভয়েস অব আমেরিকাকে জানান সংখ্যায় যথেষ্ট পরিমাণে থাকলেও ইরাকী বাহিনীর সদস্যরা সুযোগ পেলেই পালিয়ে যাচ্ছেন।
সেখানে এখন অনেক শিয়া যোদ্ধা সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। তাদের অনেকেই ইরানের প্রতি সহানুভূতিশীল শিয়া যোদ্ধা। ইরাকী প্রধানমন্ত্রীর ডাকে সাড়া দিয়ে তারা রামাদির আশপাশের নানা স্থান থেকে এসে জড়ো হচ্ছেন।
তবে এতে করে ইসলামিক ষ্টেট যোদ্ধারা বাড়তি সুবিধাও পেয়ে যেতে পারেন। যুক্তরাষ্ট্রের এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা বললেন সুন্নী অধ্যুষিত ওই এলাকায় শিয়াদের বিপুল উপস্থিতিকে ইসলামিক ষ্টেট কায়দা করে সাম্প্রদায়িক সংঘাতকে উষ্কে দিতে পারে; এমন আশংকার কথা বললেন যুক্তরাস্ট্রের সাবেক গোয়েনন্দা কর্মকর্তা মাইকেল প্রেজেন্ট:
“ইসলামিক ষ্টেট বাগদাদের যতো কাছাকাছি আসছে, সেখানে ততো বেশী মাত্রায় ফুসে উঠছে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা এবং বেড়ে চলেছে সুন্নী বিরোধীতা। এতে করে সুন্নীদেরকে শশস্ত্র যুদ্ধে লিপ্ত করাবার একটা সম্ভাবনা রয়েছে। আর তা অবশ্যই আইসিসের বিরুদ্ধে নয়; সরকারের বিরুদ্ধে এবং শিয়া যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে”।
গোয়েন্দা কর্মকর্তারা আরো আশংকা করছেন ইসলামিক ষ্টেট এসব সনাম্প্রদায়িক কোন্দল বাধিয়ে দিয়ে প্রচার প্রচারণা বাড়িয়ে তাদের স্ব-ঘোষিত খালিফঅতের বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে নতুন যোদ্ধা নিয়োগ আকৃষ্ট করার ছেস্টা করতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা বিশ্বাস করেন ভূমিতে ইরাকী বাহিনীর অঅক্রমণ এবং আকাশে যৌথ বাহিনীর বিমান আক্রমন চলতে থাকলে রামাদির দখল পূন: প্রতিষ্ঠা সম্ভব।
তবে পেন্টাগন কর্মকর্তারা স্বীকার করেন রামাদির দখল প্রতিষ্ঠায় অনেক সময় লেগে যাবে এবং অনেক মূল্য দিতে হতে পারে।
“আমরা দেখেছি সেখানে মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়েছে। খুন করা হয়েছে ISIL এর বর্বরতা নৃশংশতা আমরা সেখানে দেখেছি, দেখছি”।
জয়েন্ট চীফস অব ষ্টাফ জেনারেল মার্টিন ডেম্পসি রামাদিতে ইসলামিক ষ্টেটের অবস্থান শক্ত হওয়ার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেও বলেছেন যুদ্ধে এমন ঘটতে পারে। যুদ্ধে রামাদিতে এ পর্যন্ত ৫০০ জন নিহত হয়েছে।
জাতিসংঘ মুখপাত্র ফারহান হক বলেছেন সাড়ে ৬ হাজার পরিবার রামাদি থেকে পালিয়ে ফাল্লুজা ও খালিদিয়ার দিকে গেছেন। জাতিসংঘ ও অপরাপর সংস্থা সেখানে খাদ্য তাবু ওষুধ ইত্যাদি দিয়ে ক্ষতিগ্রস্থদের সহায়তা করছে।