দুই হাজার ষোলো সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রধান দুই দলের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী রেপাবলিকান দলের ডনাল্ড ট্রাম্প আর ডেমোক্র্যাটিক পার্টীর হিলারী ক্লিনটনের মধ্যে প্রথম বিতর্ক অনুষ্ঠিত হচ্ছে সোমবার। টেলিভিশনে প্রচারিত এ বিতর্ক আনুমানিক দশ কোটি দর্শক অবলোকন করবেন- শুনবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এবং এভাবে ঐ দর্শক-শ্রোতারাও দুই প্রার্থীকে পাশাপাশি দেখে-তাঁদের বক্তব্য শুনে তাঁদের সম্পর্কে মোটামুটি একটা মূল্যায়ন খাড়া করতে পারবেন বলে মনে করা হচ্ছে।
দুই প্রার্থীর জন্যেই এ বিতর্কের গুরুত্ব যে অপরিসীম, কোনো সন্দেহ নেই তাতে। দর্শক-শ্রোতারা কেবলই যে তাঁদের বক্তব্য-বিষয়বস্তুর মূল্যায়ন করবেন তাই নয়- কে কিভাবে কথা বলছেন, একে অন্যের বক্তব্যের জবাব কিভাবে-কতোখানি শক্তপোক্ত যুক্তির ভিত্তিতে তা খন্ডন করছেন, পাল্টা বক্তব্য কতোখানি চমৎকারিত্বের সঙ্গে তুলে ধরছেন – খুঁটিনাটি সেসব নিয়ে চুল চেরা বিচার বিশ্লেষন যে হবে- বলাই বাহুল্য।
মনে করা হচ্ছে, এ বিতর্কে ট্রাম্প তুলনামুলকভাবে অনেক সংযত রইবেন- আগের প্রাইমারীর সময়কার বিতর্কের তুলনায়, অনেক বেশি ভারিক্কি ভাবমুর্তি তুলে ধরবেন বলে মনে করা হচ্ছে- অন্তত: তাঁর সমর্থকেরা তেমনটিই আশা করছেন মনে মনে। আর ওভাবেই, তাঁর ঐ যে শ্লোগান “We will make America strong again. We will make America safe again, and we will make America great again!” – সে শ্লোগান বিতর্কের মধ্যে দিয়ে ধ্বনিত-প্রতিধ্বনিত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
অন্যদিকে, হিলারী ক্লিনটনের বক্তব্যে সামুদয়িক-সাকল্য বানীর শ্বাস্বত আবেদন মুর্ত করার প্রয়াস শোনা যবে বলে ধারণা করা হচ্ছে- এই যে মহান দেশ-বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ এই যে রাষ্ট্র- যুক্তরাষ্ট্র আমাদের, এর মূল্য অপরিসীম In the United States of America, the greatest country in the world, we believe everyone is created equal!” – আমরা বিশ্বাস করি জন্মসূত্রেই সকল মানুষ এক সমান আমরা, এখানে।
সাধারনত: প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীদের মধ্যেকার মোট তিনটি বিতর্কের মধ্যে প্রথমটির আকর্ষনই সবচেয়ে বেশি- এটার দর্শক শ্রোতাই সাধারনত: সবচেয়ে বেশি হয়ে থাকে। টেলিভিশনে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীদের মধ্যে বিতর্ক অনুষ্ঠানের সূচনা হয়েছিলো- প্রথম সেই ১৯ শো ষাইট সালে- রিচার্ড নিক্সান ও জন কেনেডীর মধ্যে। তারপর থেকেই, সবগুলোর ক্ষেত্রে সমানভাবে প্রযোজ্য না হলেও প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এর প্রভাব পরিলক্ষিত হয়ে থাকে বিশেষভাবে।
বিতর্ক নিয়ে অল্প বিস্তর মহড়া-মকশো চলছে দু’পক্ষেই। ক্লিনটন শিবিরে যেমন চলছে-মহড়া বিতর্ক, ট্রাম্পের পক্ষেও আগের প্রাইমারীর সময়কার মতো না করে ভিন্ন কিছু করার ব্যাপারেও মহড়া হচ্ছে বলেই মনে করা হচ্ছে।
দুই প্রার্থীরই ভোটার অননুমোদন বা ডিস্আ্যাপ্রুভাল মাত্রা বেশ চড়া – এবং বলাই চলে, ঐ নেতিবাচক ভোটার মনোভাবকে ইতিবাচক করতে এ বিতর্ক বেশ গুরুত্বপুর্ণ ভুমিকা পালন করতে পারে।
প্রসঙ্গত: ইতিহাসের দু’টি বিতর্ক- জন কেনেডী – রিচার্ড নিক্সন এবং জেরাল্ড ফোর্ড-জিমি কার্টার – বিশেষ করে এই দু’টি বিতর্কের যে প্রভাবের কথা ইতিহাস হয়ে রয়েছে নির্বাচনী ধারাবাহিকতায়, তেমনটি যে হবে না – বা হবেই-- হলপ করে বলা যাবে না মোটে।