অর্থনীতির তত্ব বলে, যতই মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটে ততই কমতে থাকে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার। কেননা, কেবল দরিদ্র মানুষই বেশি সন্তানের মধ্যেি খোঁজে ভবিষ্যতের আর্থ-সামাজিক নিরাপত্তা। এই তত্ব প্রমাণিত হয়েছে ষাট ও সত্তরের দশকে ইওরোপ, জাপান ও অন্যান্য উন্নত দেশের অভিজ্ঞতায়। কিন্তু অন্তত পশ্চিমবঙ্গের বেলায় ঘটেছে ঠিক উল্টোটি। জনগণনা রিপোর্ট দেখাচ্ছে, এ রাজ্যে ২০০১-২০১১-র দশকে আর্থিক উন্নয়ন যতই হতাশাব্যঞ্জক হোক না কেন, জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কিন্তু ভারতের অধিকাংশ রাজ্যের চেয়েই কম। ওই দশকে সর্ব-ভারতীয় জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার যেখানে ১৭.৭%, এ রাজ্যে তা ১৩.৮% মাত্র। কিন্তু আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন? রাজ্যের ৬০% পরিবারেরই কাঁচা বাড়ি, ৭০ শতাংশের তো নিজস্ব জমি নেই, ঠিকে কাজই আয়ের ভরসা ৫৮ শতাংশ পরিবারের। পশ্চিমবঙ্গের ৩৪% মানুষ নিরক্ষর, মাত্র ৮% পরিবারের সদস্যদের মাস-মাইনের নিশ্চিন্ততা রয়েছে। মোবাইল ফোন রয়েছে কেবল ৫৫ শতাংশ মানুষের। এই শোচনীয় আর্থিক পরিস্থিতি সত্বেও কোন রাজ্যের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কোন ম্যাজিকে বাকি দেশের অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় নিম্নমুখী, তা এক ধাঁধা। ব্যাখ্যা নেই অর্থনীতিবিদদের কাছেও।জানাচ্ছেন কলকাতা থেকে গৌতম গুপ্ত।