অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

উৎপাদন থেকে পণ্যভোগ- শিশুশ্রম বন্ধ হোক


বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অফ লেবার স্টাডিজ- বিলসের তথ্য অনুসারে, বাংলাদেশে ১৮ বছরের নীচে প্রায় ৭০ লাখ শিশু শ্রমে নিয়োজিত রয়েছে। এদের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করছে প্রায় ২০ লাখ শিশু। এমন বাস্তবতায় ‘উৎপাদন থেকে পণ্যভোগ, শিশুশ্রম বন্ধ হোক’ এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ১২ জুন অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশও সরকারি ও বেসরকারি নানা আয়োজনে ‘বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস’ পালন করছে।

উৎপাদন প্রক্রিয়ার সকল স্তরে শিশুশ্রম নিরসন করার উপর গুরুত্ব দেয়াটি বেশ সময়োপযোগী হয়েছে বলে মনে করেন বিলসের সহকারী নির্বাহী পরিচালক সুলতান উদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, সাধারণত কারখানায় কর্মরত শিশুশ্রমের কথা জানি। কিন্তু উৎপাদন প্রক্রিয়ার বিভিন্ন স্তরে শিশুরা ব্যবহৃত হয় সেটি কিন্তু নজরে আসে না। যেমন, ইলেকট্রনিক্স কোম্পানীর মূল কারখানায় হয়তো শিশুশ্রম নেই বা থাকলেও তা নিরসনে চেষ্টা করা হয়। কিন্তু সেই পণ্য পরিবহন, বিক্রয়ের সঙ্গে শিশু কাজ করছে, অথচ সেটি নজড় পাচ্ছে না।

শিশুশ্রম নিরসনে কৃষি ও গ্রামীন অর্থনীতির উপর বেশি গুরুত্ব দিতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, যে সকল প্রতিষ্ঠান-শিল্পে বৈদেশিক চাপ আছে, যেগুলো চোখে দেখা যায় সেখান থেকে শিশুশ্রম নিরসন করা যায়। কিন্তু অধিক ঝুকিঁপূর্ণ শিশুশ্রম থেকে শিশুদের রক্ষা করতে হলে কৃষি, গ্রামীন অর্থনীতি, বর্জ্য কুড়ানো, মুটে এসব কাজে নিয়োজিত শিশুদের দিকে নজর দিতে হবে।

শিশুশ্রম নিরসনের জন্য রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রাতিষ্ঠানিক সুরক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের শিশুশ্রম নিরসনের প্রক্রিয়াটা মূলত শহরভিত্তিক ও প্রচারণাভিত্তিক। আসলে হওয়া উচিত শিশুর দক্ষতা বৃদ্ধি এবং পড়াশুনার ক্ষেত্র তৈরী করা যা নিয়ে তেমন উদ্যোগ নেই। সরকরিভাবে, রাষ্ট্রীয়ভাবে এবং আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান সম্মিলিতভাবে এমন একটি ব্যবস্থা থাকা উচিত যেখানে শিশু ১৮ বছর পর্যন্ত শিক্ষার পাশাপাশি বিশেষ কোন কাজেরও প্রশিক্ষণ পাবে। যাতে পরে সে একটি কাজ পায়। কারণ কাজ না পেলে তাকে আমরা শিশুশ্রম থেকে কখনোই বের করে আনতে পারবো না।

জাতীয় শিশু নীতি ২০১১ অনুসারে ৫ থেকে ১৮ বছরের শিশু কোন ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করতে পারবেনা। আর শ্রম আইন বলছে, ৫ থেকে ১৪ বছর পর্যন্ত শিশুদের কাজে নিয়োগ দেয়া্ দন্ডনীয় অপরাধ। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিশুশ্রম নিরসনে আইন প্রণয়নই যথেষ্ট নয়, প্রয়োজন আইনের বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা।

আঙ্গুর নাহার মন্টি, ঢাকা রিপোর্টিং সেন্টার

সহযোগিতায় - ইউএসএআইডি ও ভয়েস অফ আমেরিকা

please wait

No media source currently available

0:00 0:02:53 0:00

XS
SM
MD
LG