অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণেই সুন্দর জীবন ।


ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণেই সুন্দর জীবন ।

মানব দেহে গ্লুকোজ একটি অতি প্রয়োজনীয় উপাদান । রক্ত থেকে গ্লুকোজ কণা দেহ কোষে পৌছে দেয়ার কাজটি করে ইনসুলিন । কিন্তু প্রক্রিয়াটি ঠিকমত না হলেই দেখা দেয় বিপত্তি,রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বাড়তে থাকে যার ফলে দেহে তৈরি হয় নানা অসামঞ্জস্যতা ।

বারডেম হাসপাতালের এন্ডোকার্ডিওলজিস্ট প্রফেসর তৌফিক আহমেদ বললেন, রক্তে উচ্চ গ্লুকোজ জনিত সমস্যার এই রোগের নামই হচ্ছে ডায়াবেটিস বা বহুমূত্র । যার লক্ষণ হিসেবে তিনি উল্লেখ্য করেন ঘন ঘন প্রস্রাবের বেগ-বিশেষ করে রাতে,ঘন ঘন তৃষ্ণা,খুব দ্রুত ক্লান্ত হয়ে পড়া,হঠাৎ করে দ্রুত ওজন হ্রাস,যৌনাঙ্গে চুলকানি এবং ফাঙ্গাল ইনফেকশান দেখা দেয়া,ধীরে ক্ষত শুকানো কিংবা ঝাপসা দৃষ্টি ইত্যাদিকে ।
সিডিআইসি এর অতিরিক্ত সমন্বয়ক ড. সামিনা তৈয়ব বললেন ডায়বেটিস যে শুধু বড়দেরই হয় তা নয় ।
বাচ্চারাও ঝুঁকিপূর্ণ এই রোগে । ইন্টারন্যাশনাল ডায়েবেটিক ফেডারেশনের ২০১৩ সালের সমীক্ষা মতে , মোট জনসংখ্যার মধ্যে শূন্য থেকে ১৪ বছরের ১.৯বিলিয়ন শিশু ডায়বেটিসে আক্রান্ত হচ্ছে এবং বর্তমানে প্রতি হাজারে ৪.২ শতাংশ শিশু ডায়বেটিস এর শিকার । হিসাবটি মোটেও সুখকর নয় আমাদের জন্য । কিন্তু কেন তারা আক্রান্ত হচ্ছে ? ড.সামিনার ভাষ্যমতে, শিশুদের অতিরিক্ত কম্পিউটার নির্ভরতা,শারীরিক খেলাধুলার প্রতি অনীহা,ফাস্ট-ফুডের প্রতি ঝোঁক এই সমস্ত কারন গুলোই শিশুদের ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিচ্ছে ।
পৃথিবীতে এখনো প্রতি ১০ সেকেন্ডে একজন ডায়াবেটিসের রোগীর মৃত্যু হয় । ডায়েবেটিস নিয়ন্ত্রন কিংবা সচেতনতা তৈরীর লক্ষ্যে ১৯৯১ সাল থেকে ১৪ নভেম্বর আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিক ফেডারেশন ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যৌথভাবে দিনটিকে বেছে নেয় বিশ্ব ডায়াবেটিক দিবস হিসেবে । বাংলাদেশ ডায়বেটিস সমিতির উপদেষ্টা ডা.ওয়াজেদুল ইসলাম বললেন,ডায়বেটিস রোগীদের জন্য থ্রি ডি খুবই গুরুত্বপূর্ন । ডায়েট-ডিসিপ্লিন এবং ড্রাগ হচ্ছে এই থ্রি ডি । একজন ডায়বেটিক রোগী যদি এই থ্রি ডি মেনে চলে তাহলে রোগী হয়ে বাচতে হবে না তাকে ।

২০১৫ সালে ডায়বেটিস দিবসের স্লোগান নির্ধারণ করা হয়েছে ‘স্বাস্থ্যসম্মত খাবারই ডায়েবেটিস প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রনের অন্যতম উপায়’ ।
ডায়বেটিস ছোঁয়াচে রোগ না এবং বেশী মিষ্টি কিংবা চিনি খেলে যে এই রোগ হয় না তা নিশ্চিত করলেন ড.সামিনা । শিশু বয়সে বেশী মিষ্টি খেলে কিংবা চিনি খেলে অথবা বাবা-মায়ের ডায়বেটিস থাকলেই যে শিশু বা প্রাপ্ত বয়স্ক কেউ এই রোগে আক্রান্ত হবে তা ভুল ধারণা ।
রোগে আক্রান্ত হবার চেয়ে আগেই সচেতন হয়ে তা প্রতিরোধ হচ্ছে উত্তম পন্থা ।

শরীফ উল হক ।
ঢাকা রিপোর্টিং সেন্টার।
সহযোগিতায়- ইউএসএআইডি এবং ভয়েসব আমেরিকা ।

XS
SM
MD
LG