বাংলাদেশে সম্প্রতি ব্লগার নিলাদ্রি চট্টোপাধ্যায়ের হত্যাকান্ড আবারও সবাইকে হৎচকিত করে দিয়েছে। নিলয় নীল নামে এই ব্লগার হচ্ছেন এ রকম চতুর্থ ব্যক্তি যাদেরক নির্মম ভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এই অমানবিক ঘটনায় দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জন্য যেমন সোচ্চার হয়েছেন মানবাধিকার কর্মী সহ সকলেই , তেমনি দাবি উঠেছে মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে । Human Rights Watch ও এক বিবৃতিতে বলেছে যে বাংলাদেশ সরকারকে মত প্রকাশের স্বাধীনতা সুনিশ্চত করতে হবে। আবার সরকারের মন্ত্রীরা স্ব-আরোপিত নিষেধাজ্ঞা বা Self –imposed Censorship এর কথা বলছেন ।
এ সব প্রসঙ্গেই ভয়েস অফ আমেরিকার বাংলা বিভাগের আনিস আহমেদকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক, ড. মিজানুর রহমান বলেন যে সবার আগে প্রয়োজন মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা। তিনি মন্তব্য করেন যে যারা স্ব-আরোপিত সেন্সারশিপের কথা বলছেন , তাঁরা কার্যত অপরাধীদের অপরাধকে হাল্কা করে দেখছেন।
ব্লগার হত্যার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের আটক করার ব্যাপারে প্রশাসনের ধীর গতি সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক রহমান বলেন যে সাধারণ ভাবে বাংলাদেশে আইন ও বিচার প্রক্রিয়া অত্যন্ত ধীর গতিতে এগোয় কিন্তু মৌলবাদীদের সঙ্গে প্রশাসনের কোন রকম সংযোগ আছে কীনা সেটা ও ভেবে দেখার বিষয়।
মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান , এই সাক্ষাৎকারে বলেন যে কারও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়া অনুচিত এ কথা ঠিক কিন্তু ব্লগারদের মধ্যে কেউ যদি কোন বিশেষ ধর্মের অনুসারী নয় বলে ঘোষণা করে , এমন কী যদি নিজেদের নাস্তিক ও বলে , তাতে কোন ধর্মের অবমাননা করা হয় না। তা ছাড়া তিনি আরও বলেন যদি সত্যি সত্যিই কেউ কোন ধর্মের অবমাননা করেই থাকে , তা হলে তো সে জন্য দেশে প্রচলিত আইন আছে । কোন ঘাতকের কোন অধিকার নেই , এ সব অজুহাতে কারও প্রাণ নাশ ঘটানোর মত মানবতাবিরোধী কর্মকান্ডে লিপ্ত হবার।