অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

যৌন হয়রানি প্রতিরোধে প্রয়োজন সুনির্দিষ্ট আইন।


যৌন হয়রানি প্রতিরোধে প্রয়োজন সুনির্দিষ্ট আইন

আঙ্গুর নাহার মন্টি, ঢাকা রিপোর্টিং সেন্টার

সহযোগিতায় - ইউএসএআইডি ও ভয়েস অফ আমেরিকা

প্রযোজনায় - রেডিও টুডে প্রাইভেট লিমিটেড

বাংলাদেশে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে প্রয়োজন সুনির্দিষ্ট আইন প্রণয়ন ও সেই আইনের কঠোর বাস্তবায়ন। বেসরকারি সংস্থা একশন এইড বাংলাদেশের উদ্যোগে ‘কম্প্রিহেনসিভ ল এন্ড পলিসি অন সেক্সুয়াল হ্যারাজমেন্ট ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক কর্মশালায় এই অভিমত উঠে আসে।

গত বৃহস্পতিবার সংস্থার নাসরিন মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় আলোচকরা বলেন, উন্নত বিশ্বে যৌন হয়রানিকে অপরাধ হিসেবে দেখা হয়। সেসব দেশে যে কোন যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে কঠোর আইনী ব্যবস্থাও রয়েছে। বাংলাদেশে ঘরে বাইরে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানির ঘটনা ঘটলেও এর বিরুদ্ধে এখনও নেই কোন সুনির্দিষ্ট আইন। ২০১০ সালে উচ্চ আদালতের দেয়া যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধে নির্দেশনাটির বাস্তবায়নও নগণ্য৷ বিভিন্ন আইন ও নীতিতে নারীর প্রতি সহিংসতা গুরুত্ব পেলেও অবহেলিত থেকে গেছে যৌন হয়রানির মতো গুরুতর সমস্যাটি।

এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পপুলেশন সায়েন্স বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. কামরুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে সুনির্দিষ্ট কোন আইন নেই। অথচ এই আইনটি খুবই প্রয়োজন। এই আইন প্রণয়ন ও কঠোর বাস্তবায়নের মাধ্যমে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ করা সম্ভব। ব্যক্তি পর্যায়ে, সামাজিকভাবে, সরকারিভাবে ও সমাজের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সম্মিলিত প্রয়াসে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ ও প্রতিকার করা সম্ভব।

সম্প্রতি জাতিসংঘের প্রতিষ্ঠান ইউএন-উইমেনের এক জরিপে দেখা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে ৭৬ ভাগ ছাত্রীই কোনো না কোনোভাবে যৌন হয়রানির শিকার হন। সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে এ হার ৮৭ শতাংশ। ফলে অনেক নারী শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও নিরাপদ পরিবেশের অভাবে তারা উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করতে পারছে না। ফলে সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে ক্ষমতায়নেও পিছিয়ে পড়ছে নারীরা। এই জরিপ যৌন হয়রানির ঘটনা কতটা ভয়াবহ তা আমাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়।

একশন এইড বাংলাদেশের পরিচালক ড. শাহনাজ আরেফিন নারীর জন্য নিরাপদ শহর তৈরীর লক্ষ্যে সংস্থাটি ‘নিরাপদ নগরী নির্ভয় নারী’ শীর্ষক প্রচারণা চালাচ্ছে জানিয়ে বলেন, এ প্রচারণার আওতায় আমরা শহরের নারীদের নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করছি। সেক্ষেত্রে তিনটি বিষয়ের উপর গুরুত্ব দিচ্ছি। প্রথমত, নারী-পুরুষের মানসিকতার পরিবর্তন, দ্বিতীয়ত নিরাপদ ও নারীবান্ধব যাতায়াত ব্যবস্থা এবং যৌন হয়রানি প্রতিরোধে আইনী ঘাটতিগুলো সনাক্ত করা।

কর্মশালায় কঠোর আইন প্রণয়নের পাশাপাশি হাইকোর্টের যুগান্তকারী রায় বাস্তবায়নের উপর গুরুত্ব দেয়া হয়। এছাড়া সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি নাগরিক সমাজ, গণমাধ্যম ও বেসরকারি সংস্থাসহ সকলকে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য একযোগে কাজ করতে হবে বলেও অভিমত প্রকাশ করা হয়।

please wait

No media source currently available

0:00 0:03:13 0:00

XS
SM
MD
LG