অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

নি:শব্দ ঘাতকঃ ক্যান্সার


শরীফ উল হক
ঢাকা রিপোর্টিং সেন্টার
সহযোগিতায়- ইউএসএআইডি এবং ভয়েস অফ আমেরিকা

ক্যান্সার। মানব জাতির নীরব ঘাতক। অনিয়ন্ত্রিত কোষ বিভাজন সংক্রান্ত রোগসমূহের সমষ্টি যা কর্কটরোগ নামেও পরিচিত। বিশ্বব্যাপী প্রায় ২শ রকমের ক্যান্সার শনাক্ত হয়েছে। রক্ত, চামড়া, হাড়, অস্থিমজ্জা, প্রোস্টেট, স্তন, জরায়ু, পাকস্থলী, কন্ঠ, যকৃত, ফুসফুস সহ আরো বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার দেখা যায়। ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি ফর রিসার্চ অন ক্যান্সার এর তথ্য মতে বর্তমানে বাংলাদেশে ক্যান্সার রোগীর সংখ্যা ১২ থেকে ১৪ লাখের মধ্যে প্রতিবছর ৯১ হাজার রোগী মারা যায়। আর বছর প্রতি আক্রান্তের হার ১লাখ ২২ হাজার।

জীবনযাপন প্রণালী, পরিবেশ, খাদ্যাভ্যাস, ভৌগলিক অবস্থান, বয়স, বংশানুক্রম ইত্যাদি বিষয় ক্যান্সার সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখে বলে জানালেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের রক্ত ও ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ ডা.আতিকুর রহমান। সাধারণত জীবাণু থেকে ক্যান্সার হয় না, তবে পরিপাকতন্ত্রের ক্যান্সারসহ কিছু ক্ষেত্রে জীবাণুর প্রভাব রয়েছে বলেও অবগত করলেন ডা.আতিকুর রহমান।

খুব ক্লান্তি, ক্ষুধা কমে যাওয়া, শরীরের কোথাও অস্বাভাবিক চাকা বা দলা, দীর্ঘস্থায়ী কাশি বা গলা ভাঙ্গা ক্যান্সারের প্রচলিত লক্ষণ। এছাড়াও রক্তের ক্যান্সারে শরীরে দাগ পড়তে পারে। ফুসফুসের ক্যান্সারে পেটে পানি চলে আসতে পারে এবং গলার ক্যান্সারে কাশির সাথে রক্ত আসতে পারে।

প্রতিকারের চেয়ে উত্তম প্রতিরোধ। যদিও ক্যান্সারের কোন ওষুধ এখনো আবিষ্কৃত হয়নি তবু কিছু নিয়ম মেনে চলা যেমন খাদ্যাভাসে পরিবর্তন, শরীরের ওজন ঠিক রাখা, ধুমপান, মদ্যপান মোটকথা সচেতনতাই পারে এই মরণব্যাধির ঝুঁকি থেকে দূরে রাখতে। যে সব শাকসবজি এবং ফলমূলে এন্টি অক্সিডেন্ট আছে যেমন টমেটো, বাধাকপি বিশেষ করে আঁশ জাতীয় সবজি প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রাখলে সম্ভব প্রতিরোধ গড়ে তোলা ক্যান্সারের বিরুদ্ধে। আর যদি কেউ ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েই যায় তাহলে যত দ্রুত সম্ভব প্রাথমিক অবস্থায় চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

২০০৮ থেকে ২০১০ এই তিন বছর জাতীয় ক্যান্সার ইন্সটিটিউট ও হাসপাতালে আসা রোগীদের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায় জরায়ুর ক্যান্সারে আক্রান্তের হার ২১ শতাংশ, ফুসফুসের ক্যান্সারে ২৮ শতাংশ এবং কণ্ঠনালির ক্যান্সারে আক্রান্ত ৬ শতাংশ মানুষ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যানুযায়ী, ২০১২ সালে বিশ্বে ক্যান্সার রোগী ছিল ১ কোটি ৪০ লাখ। ২০১৫ সাল নাগাদ যা পৌঁছাবে প্রায় দুই কোটিতে। এমনি ভয়াবহ পরিস্থিতিতে ৪ ফেব্রুয়ারী বিশ্বজুড়ে পালিত হবে ‘বিশ্ব ক্যান্সার দিবস’। বাংলাদেশেও নানা আয়োজন ও সচেতনতামুলক কর্মকান্ডের মাধ্যমে দিবসটি পালিত হবে। সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রনালয়সহ ক্যান্সার নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন এনজিও এ উপলক্ষ্যে হাতে নিয়েছে নানা কর্মসূচী।

ক্যান্সারকে ভয় নয় জয় করতে হবে। দরকার সঠিক তথ্য জানা-জানানো পাশাপাশি সচেতনতা।

please wait

No media source currently available

0:00 0:03:00 0:00

XS
SM
MD
LG