আঙ্গুর নাহার মন্টি
ঢাকা রিপোর্টিং সেন্টার
সহযোগিতায় - ইউএসএআইডি ও ভয়েস অফ আমেরিকা
যক্ষ্মা এখনো বিশ্বের অন্যতম প্রধান জনস্বাস্থ্য সমস্যা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুসারে, বিশ্বে প্রতিবছর ১৫ লাখ মানুষ যক্ষ্মা রোগে মারা যাচ্ছে। প্রতি বছর ৯০ লাখ মানুষ নতুন করে যক্ষ্মায় আক্রান্ত হচ্ছে, যাদের এক-তৃতীয়াংশই (৩০ লাখ)চিকিতসা সেবার বাইরে থেকে যাচ্ছে।
জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির তথ্যমতে, বাংলাদেশে প্রতি লাখ মানুষের মধ্যে ৪০২ জন যক্ষ্মায় আক্রান্ত। আর যক্ষ্মার কারণে মৃত্যু হচ্ছে প্রতি লাখে ৫১ জনের। ব্র্যাকের যক্ষ্মা কর্মসূচি বলছে, ২০১৪ সালে দেশে এক লাখ ৯১ হাজার ১৫৫ জন যক্ষ্মার নতুন রোগী শনাক্ত করা হয়। এর বাইরে অ-শনাক্ত আরও অনেক যক্ষ্মা রোগী রয়েছেন। এই চিত্র স্পষ্টই বলে দেয় যক্ষ্মায় প্রাণহানি ঘটলেও রোগটি নিয়ে এখনো ব্যাপক সচেতনতা গড়ে উঠেনি। এই বাস্তবতায় গত ২৪ মার্চ যক্ষ্মা রোগকে নির্মূল করার লক্ষ্য নিয়ে অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও বিশ্ব যক্ষ্মা দিবস পালিত হয়। এবারের প্রতিপাদ্য ছিল ‘যক্ষ্মা খুঁজব ঘরে ঘরে, সুস্থ করব চিকিতসা করে।’
যক্ষ্মা নির্মূলে রোগীর পূর্ণ মেয়াদে চিকিতসা নিশ্চিত করা জরুরি। এজন্য সরকারি-বেসরকারি সকলের সহযোগিতায় বাংলাদেশে জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি চলছে জানিয়ে এমবিডিসি‘র পরিচালক (যক্ষ্মা) ডা. আহমেদ হোসেন খান বলেন, যক্ষ্মা রোগীর পূর্ণ চিকিতসা পেতে ৬ থেকে ৮ মাস সময় লাগে। চিকিতসা শুরুর দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে রোগীর লক্ষণগুলো আর থাকে না। সে সম্পূর্ণ সুস্থ বোধ করে। পরবর্তীতে সে আর ঔষধ চালিয়ে যেতে চায় না। ফলে ঔষধ প্রতিরোধী যক্ষ্মার ঝুকিঁ বেড়ে যায়। কাজেই পূর্ণ মেয়াদে চিকিৎসা নিশ্চিত করতে ডট প্রোভাইডার নিযুক্ত থাকে।
সামাজিক কুসংস্কারের কারণে এখনো যক্ষ্মা রোগকে লুকিয়ে রাখা হয়। তাই রোগী চিকিতসা নিতে যেতে চায় না। এ প্রসঙ্গে প্রচারণার উপর গুরুত্ব দিয়ে ডা. আহমেদ বলেন, যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণের বড় উপায় হচ্ছে প্রচার। যক্ষ্মার সামাজিক স্টিগমার কারণে এখনো রোগটি লুকিয়ে রাখে এবং প্রকাশ করতে চায় না। যা যক্ষ্মা ছড়িয়ে পড়ার জন্য মারাত্মক হুমকিস্বরূপ। কাজেই প্রচারই বড় কথা।
২০১৬ সাল থেকে ২০৩৫ সালের মধ্যে সারা বিশ্ব থেকে যক্ষ্মা রোগ নির্মূল করার ঘোষণা দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যক্ষ্মা রোগ নির্মূলে আধুনিক চিকিতসা নিশ্চিতকরণে পরিকল্পনা নেয়া হেয়েছে। আনা হয়েছে অত্যাধুনিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার যন্ত্রপাতিও। দরিদ্রদের জন্য রয়েছে বিনামূল্যে চিকিতসা সেবা। তবে যক্ষ্মা প্রতিরোধে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপক জনসচেতনতা সৃষ্টি।