অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

নিরাপদ মাতৃত্ব এখন সময়ের দাবিঃ নারী ও শিশুর স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সাংবাদিক কর্মশালা, প্রতিবেদন ৬


নিরাপদ মাতৃত্ব এখন সময়ের দাবি। এই দাবির পক্ষে যুক্তির আর অবকাশ রাখেনা। বিভিন্ন এনজিও এবং স্বাস্থ্য বিষয়ক কর্মকর্তাদের নিকট থেকে প্রাপ্ত পরিসংখ্যানে জানা যায় প্রতিবছর বাংলাদেশে ৩৫ লাখ মায়ের মধ্যে প্রায় ৬ হাজার মা-নিরাপদ মাতৃত্বের অভাবে অর্থাত্ প্রসবকালীন জটিলতায় মারা যাচ্ছে। আর একজন মা-মারা যাওয়া মানে তার সেই সন্তানের বেঁচে থাকাও দায় হয়ে পড়ে।

এসব মায়ের মৃত্যু হচ্ছে ঝুঁকিপূর্ণ প্রসব। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, বেশীর ভাগ মা-মারা যাচ্ছেন প্রধানত: দুটি কারণে। (১) হেমরাটাইজ অর্থাত্ সন্তান জন্ম নেয়ার পর অতিরিক্ত রক্তপাত (২) এ্যকলামশিয়া অর্থাত্ খিঁচুনি‘র দরুণ। এ দুটি রোগ সম্পর্কে ধারণা থাকলে অনেক মা, ঐ সময় মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে যেতে পারে। এ দুটি রোগের চিকিত্সাও অতি সহজ। হেমরাটাইজ এর জন্য মাত্র ১৪+১৪=২৮ টাকা মূল্যের দুটি বড়ি মাকে খাওয়ালে সেই রোগ থেকে পরিত্রাণ মেলে। হেমরাটাইজে ৩১ ভাগ, এ্যাকলামশিয়ায় ২০ ভাগ মা প্রান হারায় প্রতি বছর । এ দেশে ৬২ ভাগ বাড়ীতে অদক্ষ দাই‘র হতে প্রসব হচ্ছে। যা সঠিকও নয় এবং ঝুঁকিপূর্ণ।

এদিকে সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্র পরিদর্শনে দেখা যায় সেখানকার নবাজাতক শিশুদের জন্য বিশেষ ইউনিটে সেবা দেয়া হচ্ছে ‘মমতা’ প্রকল্পের আওতায়। বিগত মার্চ ২০১৩ থেকে ২৮ মে ২০১৪ পর্যন্ত এক হাজার ১৩২ টি শিশু প্রসব কালীন জটিলতার কারণে সেবা নিয়েছে। এর মধ্যে ৩৭টি শিশু মারা যায়। এফআইডি পরিচালিত মমতা প্রকল্পের আওতায় এই স্বাস্থ্য কেন্দ্রে গড়ে প্রতি মাসে ৪১টি শিশু আসে সেবা নিতে।

আমাদের করণীয়: আমরা এই মা ও শিশুদের অকালে মরতে দিতে পারিনা। গণ মাধ্যমে আমাদের লিখতে হবে বা প্রচার করতে হবে – মা ও শিশুর যত্ন সম্পর্কে এবং প্রসবের আগে ও পরে মা ও শিশুর স্বাস্থ্য কি ভাবে রক্ষা হয় সে বিষয়ে জানাতে হবে। সরকার বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে কোথায় কোন এলাকায় গর্ভবতী মায়েদের সুচিকিত্সার অভাব রয়েছে।

একই সঙ্গে আবার স্থানীয় মানুষকেও জানিয়ে দিতে হবে নিকটস্থ কোন হাসপাতাল বা সেবা কেন্দ্রে নিরাপদ মাতৃত্বের সুবিধাদি রয়েছে। যা জানতে পারলে মানুষ সেই সব সেবা কেন্দ্র থেকে দ্রুত সেবা নিতে পারবে।

হুমায়ূন রশিদ চৌধূরী

স্টাফ রিপোর্টার, দৈনিক ইত্তেফাক, সিলেটে অফিস

XS
SM
MD
LG