অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

ইউক্রেন সংকট নিরসনে রাশিয়ার প্রতি সহায়তার আহবান নেটো মহাসচিবে'র


ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর স্যাটেলাইট থেকে তোলা ছবি প্রকাশ হওয়ার পর শুক্রবার ব্রাসেলসে নেটো কর্মকর্তারা ইউক্রেনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে জরুরী বৈঠক করেন। লন্ডন থেকে এ নিয়ে এল পেসিনের করা রিপোর্ট শোনাচ্ছেন রোকেয়া হায়দার।

ইউক্রেনে রাশিয়ার দখলদারিত্ব প্রতিষ্ঠা প্রচেষ্টার ব্যাপারে সহায়তা চায় ইউক্রেন। দেশটির প্রধানমন্ত্রী বলেছেন ইউক্রেন বাহিনী রুশ-সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদীদের মোকাবেলায় সমর্থ, তবে রুশ বাহিনীর মোকাবেলা করার জন্য তারা সমর্থ নয়।

আগামী সপ্তাহে নেটো শীর্ষ সম্মেলনে ইউক্রেন বিভিন্ন মহলের কাছ থেকে সমর্থন ও সহযোগিতা পাওয়ার আশ্বাস পেয়েছে। শুক্রবারের বৈঠকের পর ইউক্রেনের দখলদারিত্বের ব্যাপারে মস্কোর দায় এড়ানোর বিষয়টিকে, নেটো মহাসচিব এ্যান্ডার্স ফগ রাসমুসেন (Anders Fogh Rasmussen, ‘অসার বক্তব্য’ বলেনাকচ করে দিয়েছেন।

রাসমুসেন বলেন, “এটি এখন স্পষ্ট যে রুশ বাহিনী এবং তাদের সামরিক সরঞ্জাম অবৈধভাবে পূর্ব ও দক্ষিনপূর্ব ইউক্রেনের সীমান্ত অতিক্রম করেছে। এটি কোনো বিচ্ছিন্ন অভিযান নয়, বরং কয়েক মাস ধরে ইউক্রেনকে সার্বভৌম জাতি হিসাবে অস্থিত করে তোলার এক বিপজ্জনক কৌশলের অংশ”।

রাসমুসেন বলেন, নেটো - ইউক্রেন বাহিনীর ওপর রুশ বাহিনীর আক্রমণের চরম নিন্দা জানায়। তিনি বলেন, ইউক্রেনের ভেতর থেকে এবং সীমান্তের বাইরে থেকেও এই আক্রমণ চালানো হয়েছে। তিনি বিচ্ছিন্নতাবাদীদেরকে রাশিয়ার পক্ষ থেকেবিভিন্ন সরঞ্জাম সরবরাহ করার এবং ইউক্রেন সীমান্তের কাছে হাজার হাজার সৈন্য প্রস্তুত রাখার বিষয়টিরও কড়া সমালোচনা করেন।

রাসমুসেন বলেন “আমরা রাশিয়ার প্রতি, অবৈধ সেনা অভিযান বন্ধ করা, সশস্ত্র বিচ্ছিন্নতাবাদীদেরকে মদদ যোগানো বন্ধ করা এবং সেখানে সৃষ্ট ভয়াবহ সংকট নিরসনে অবিলম্বে কার্যকর ব্যাবস্থা গ্রহণের আহবান জানাই”।

মস্কোয় রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সেরগেই ল্যাভ্রভ ইউক্রেনে রুশ সেনা অভিযানের অভিযোগ অস্বীকার করেন।

“সেরগেই ল্যাভ্রভ বলেন, বিচ্ছিন্নতাবাদীরা যখন ইউক্রেন বাহিনীর বিপক্ষে সফল হয় তখনই এই অভিযোগ তোলা হয়। তিনি অভিযোগ করেন, রুশ বাহিনী ইউক্রেনে অবস্থান করছে এমন মিথ্যা স্যাটেলাইট ছবি ছাপিয়ে পশ্চিমারা ভুল তথ্য তুলে ধরছে’।

এদিকে শুক্রবার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এক বিবৃতিতে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের কাছে আটক কিছু ইউক্রেনিয়ান সৈন্যকে মুক্তি দেয়ার আহবান জানান এবং ইউক্রেনের প্রতি মানবিক সহায়তা কর্মীদেরকে সীমান্ত অতিক্রম করে ইউক্রেনে প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার আহবান জানান, যারা যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্থ মানুষদের সাহায্য করবেন। তবে ইউক্রেন আশংকা করছে ঐ সহায়তা বিচ্ছিন্নতাবাদী যোদ্ধাদের কাছে চলে যেতে পারে।

ব্রাসেলসে নেটো-ইউক্রেন বৈঠকের পর মহাসচিব রাসমুসেন বলেছেন, আগামী সপ্তাহে বৃটেনে অনুষ্ঠিত নেটো শীর্ষ সম্মেলনে তারা সিদ্ধান্ত নেবেন ইউক্রেনে আরো কি ধরণের সহযোগিতা দেয়া যায়। এর মধ্যে সম্ভাব্য যা থাকবে তা হচ্ছে সেনা সামর্থ্য বাড়াতে অর্থায়ন, সাইবার সিকিউরিটি সিস্টেম এবং আহত সৈন্যদের চিকিৎসা সেবা।

রাসমুসেন বলেন ২০০৮ সালে নেটো ইউক্রেনকে সদস্য পদ দিতে সম্মত হয়। তবে সদস্যপদ নিশ্চিত করার ব্যাপারে তাদের প্রয়াস অব্যাহত রাখাটা, দেশটির সংসদের ওপর নির্ভর করছে। ওদিকে অনেকে বলছেন, রাশিয়ার সঙ্গে দ্বন্দ্ব নিরসণ না হওয়া পর্যন্ত অনেকে ইউক্রেনকে সদস্য পদ দেয়ার ব্যাপারে বিরোধিতা করবেন। কেউ কেউ আবার বলছেন রাশিয়াও চায়না ইউক্রেন নেটোর সদস্য হোক।

XS
SM
MD
LG