পঁচিশ বছরে এশিয়ান অমেরিকান ভোটদাতারার সংখ্যা দ্বিগুণ হবে । ২০৪০ সাল নাগাদ প্রতি দশ জন আমেরিকানের প্রায় একজন হবে এশিয়ান আমেরিকান ।কিন্তু রাজনীতিকরা ভোটের জন্য ঠিক এশিয়ান আমেরিকানদের কাছে যাচ্ছেন না।
অনেকেই বলেন যে এশিয়ান আমেরকানদের কাছে পৌঁছুনো খুব সহজ ব্যাপার নয় কারণ তারা যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য অভিবাসী গোষ্ঠি থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। অনেকেই ছেলেমেয়েদের তাদের জীবনের কঠিন দিকগুলো শেখান না কিন্তু ভিয়েৎনামি আমেরিকান হিউজ ট্রা’র বাবা ভিন্ন ভাবে সচেতন করেছেন তাঁর সন্তানকে। হিউজ তাই বলেন “রাতে শোবার সময়ে যে গল্প আমরা শুনতাম , সেটা কোন রূপ কথার গল্প নয় , ডিসনীর কাহিনি ও নয় , রীতিমতো যুদ্ধের কথা , যুদ্ধের প্রতিক্রিয়া ও প্রভাবের কথা”।
ভিয়েৎনাম যুদ্ধ থেকে রক্ষা পাওয়া অন্যদের মতো অন্যদের মতো ঠিক নয় , ট্রার বাবা তার অভিজ্ঞতার কথা তার ছেলেকে বলেন , যে মাত্র দু বছর বয়সে যুক্তরাষ্ট্রে আসে। তার বাবা তখন পরিবারের যে সব সদস্যকে যুদ্ধে হারিয়েছেন , সেই করুণ অভিজ্ঞতার কথা বর্ণনা করেন যা কীনা হিউজ ট্রার মনে দারুণ দাগ কাটে । যুদ্ধের সেই পারিবারিক ইতিহাস এবং ১১ই সেপ্টেম্বরের সন্ত্রাসী আক্রমণ ট্রা কে যেন বাধ্য করে রাজনৈতিক ভাবে সক্রিয় হতে ।
ট্রা বলছেন “আমি পররাষ্ট্র বিষয় সম্পর্কে , যুক্তরাষ্ট্র সরকার ঠিক কি সিদ্ধান্ত নিচ্ছে এ সব ব্যাপারে আমি এখন খুব মনোযোগ দিই। আমি সত্যি সত্যিই চাই আমাদের সরকার কোন রকম সিদ্ধান্ত বা কোন সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ার আগে যেন অন্য সমাজের ইতিহাস ও সংস্কৃতির দিকে লক্ষ্য রাখেন”।
ট্রা হচ্ছেন সেই ক্রমবর্ধমান সংখ্যক এশিয়ান আমেরিকানদেরই অংশ যারা ক্রমশই রাজনৈতিক কর্মকান্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত হচ্ছেন । এমনি একজন এশিয়ান আমেরিকান সক্রিয়বাদী হচ্ছেন ড্যান ইচিনোস । তিনি বলেন, “ ২০০২ সাল থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত , ভোট দিতে নিবন্ধনকৃত এশিয়ান আমেরিকানের সংখ্যা বেড়েছে ষাট শতাংশ । আর তা যে কেবল ক্যালিফোর্নিয়া বা নিউ ইয়র্কে বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতো নয় , দক্ষিণে , মধ্য-পশ্চিমাঞ্চলে ও এই সংখ্যা বাড়ছে। প্রতিদ্বিন্দ্বতা যেখানে তীব্র , সেখানে এশীয় আমেরিকান ভোট বিশেষ তাৎপর্য বহন করে। এশিয়া থেকে আসা লোকজন নানান সংস্কৃতি, ভাষা ও ধর্মের অনুসারী । সেজন্যেই , অন্যান্য গোষ্ঠির মতো এশিয়ান আমেরিকানরা রাজনৈতিক ভাবে সুসংহত নন মোটেই। এদের প্রায় অর্ধেক জনই কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত নন। হিউজ ট্রা বলেন , “আমার মনে হয় , একান দলের পক্ষ থেকেই এশীয় আমেরিকানদের কাছে পৌঁছুনোর তেমন চেষ্টা করা হয়নি। উভয় দলকেই অবশ্য সক্রিয় হয়ে আমাদের কাছে আসতে হবে।
একই রকম অনুভূতি প্রকাশ করলেন ম্যারিল্যান্ডের বসবাসরত লেখক ও বিজ্ঞানি ড সৈয়দ আশরাফ আহমেদ । তিনি মনে করেন এশিয়ান আমেরিকান ভোটারদের প্রতি মনোযোগ দেওয়ার প্রয়োজন আছে । ড সৈয়দ আশরাফ কারও কারও মধ্যে মুসলিম আমেরিকানদের পৃথক করে দেখার প্রবণতা প্রসঙ্গটিও উল্লেখ করেন
এবারকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে যেমন হিউজ ট্রা , তেমনি সৈয়দ আশরাফ আহমেদও চেয়ে আছেন কি ভাবে পার্থীরা অভিবাসন নীতি, আয়ের অসাম্য , ছোট ব্যবসায়ীদের স্বার্থ এবং সকল আমেরিকানকে একত্রিত করার পক্ষে কাজ করেন।