বিশ্বের বৃহৎ অর্থনীতির দেশ সমূহ সম্প্রতি বাণিজ্য যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার ফলে বাংলাদেশের মত ছোট অর্থনীতির দেশগুলোতে এর প্রভাব এই মুহূর্তে না পড়লেও আগামিদিনগুলোতে পড়ারা বিষয়ে আশংকা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
ঢাকা থেকে বিস্তারিত জানিয়েছেন সংবাদদাতা জহুরুল আলম।
বিশেষজ্ঞরা বলেছেন শুল্কারোপ এবং পাল্টা পদক্ষেপের ফলে বিদ্যমান স্থিতিশীল বাণিজ্য ব্যবস্থাকেই শুধু ক্ষতিগ্রস্থ করবেনা, বরঞ্চ গোটা বিশ্ব বাণিজ্যের ওপর এর নেতিবাচক প্রভাবও পড়বে। বৃহৎ অর্থনীতির দেশ সমূহের পাল্টাপাল্টি শুল্কারোপকে দেশি
বিদেশি বিশেষজ্ঞরা এবং গণমাধ্যমবিশ্বের সর্ববৃহৎ বাণিজ্য যুদ্ধ বলে আখ্যায়িত করেছেন।তাঁরা তাঁদের মন্তব্যে এবং নিবন্ধে এই বাণিজ্য যুদ্ধের কারনে এখন পর্যন্ত বৈশ্বিক বাণিজ্যের শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ এবং বৈশ্বিক দেশজ উৎপাদনে শূন্য দশমিক ১
শতাংশ প্রভাব পড়ার পূর্বাভাষ দিয়েছেন।
এই প্রভাবের শিকার গোটা বিশ্বকেই হতে হবে বলে বলে উল্লেখ করে তাঁরা আশংকা প্রকাশ করছেন যে বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধির হার এ বছরেই কমে যেতে পারে যার ফলে কর্মসংস্থানের ওপর এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন দীর্ঘ মেয়াদে এই বাণিজ্য যুদ্ধ চলতে থাকলে বিশ্ব বাণিজ্যে বাংলাদেশের মত দেশগুলোর ক্রম বর্ধমান হিস্যার গতি বিঘ্নিত হওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
বাংলাদেশ ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৩ হাজার কোট ডলাররে তৈরি পোশাক রফতানি করেছে এবং আগামী কয়েক বছরে তা ৫ হাজার কোটি ডলারে উন্নিত করার প্রয়াস অব্যাহত রেখেছে। বাংলাদেশের বস্ত্র শিল্প সমিতি এবং তৈরি পোশাক খাতের নেতারা বলেছেন যুক্তরাষ্ট্র থেকে সবচেয়ে বড় তুলা আমদানি কারক দেশ চিন তাদের তুলা আমদানির ক্ষেত্র পরিবর্তন করে ভারত এবং অন্যান্য দেশের ওপর নির্ভর করারা সম্ভাবনা দেখা দেয়ায় ভারতীয় ব্যবসায়ীরা ইতিমধ্যেই তুলা এবং সুতার দাম কিছুটা বাড়িয়েছে। তুলা এবং সুতা আমদানিতে ভারতের ওপর নির্ভরশীল বাংলাদেশকে এখন থেকে বেশি দামে তুলা আমদানি করতে হবে বলে উল্লেখ করে তারা বলেছেন এর ফলে বাংলাদেশের বিকাশমান বস্ত্র এবং পোশাক শিল্পে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। এর ফলে তৈরি পোশাকের রফতানির ওপরও এর প্রভাব পড়তে পারে বলে তারা আশংকা প্রকাশ করেছেন।
বাণিজ্য যুদ্ধ নিয়ে ভয়েস অফ অ্যামেরিকার সাথে কথা বলেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক শফিক উজ জামান। তিনি বলেন বাংলাদেশকে তার বিদ্যমান রফতানি বাজার ধরে রাখার জন্য এখন থেকেই পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে এবং সর্বোপরি বিশ্ব বাণিজ্যের ক্ষেত্রে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে তা গভীর ভাবে পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে।