বাংলাদেশে বুয়েট ছাত্র আবরার হত্যাকান্ড বিষয়ে জাতিসংঘ এবং বিভিন্ন দেশ যে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে, বাংলাদেশ সরকার তাতে ক্ষুব্ধ এবং হতাশ হয়েছে।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেনের এ বিষয়ে মন্তব্য করেন।
এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়েছেন ঢাকা থেকে মতিউর রহমান চৌধুরী।
বুয়েট ছাত্র আবরার হত্যাকান্ড নিয়ে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন দেশের প্রতিক্রিয়ায় বাংলাদেশ সরকার ক্ষুব্ধ এবং হতাশ। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেনের প্রতিক্রিয়া থেকে এটাই স্পষ্ট। চারদিনে দু’দফা প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করলো দেশটি। মঙ্গলবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে বিদেশীদের প্রতিক্রিয়া অপ্রয়োজনীয়। কূটনীতিকরা রীতি-নীতির বাইরে চলে যাচ্ছেন। এটা বন্ধ হওয়া উচিত। তার ভাষায়, সরকার বসে নেই। তাৎক্ষণিক ব্যবস্থাও নিয়েছে। এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রেরও কড়া সমালোচনা করেন। বলেন, তাদের দেশে হরহামেশাই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে। অতিসম্প্রতি ব্রুকলিনে ৪ জনকে হত্যা করা হয়েছে। কই, তারা তো একজনকেও ধরতে পারলো না। চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন জাতিসংঘ, বৃটেন, ফ্রান্স, জার্মানি, সুইজারল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা। বাংলাদেশে নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী মিয়া সেপ্পো উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দেন। এতে বলা হয়, অবাধ মতপ্রকাশের অভিযোগে বুয়েটের এক তরুণ শিক্ষার্থী হত্যার ঘটনায় জাতিসংঘ নিন্দা জানাচ্ছে। এতে আরও বলা হয়, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা একটি মানবাধিকার। রোববার সকালে মিয়া সেপ্পোকে পররাষ্ট্র দপ্তরে ডেকে অসন্তোষ প্রকাশ করা হয়। বৃটিশ হাই কমিশনারকে ডেকেও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করা হয়। ছাত্রলীগের নির্মম নির্যাতনে নিহত বুয়েট ছাত্র আবরার ফাহাদের ছোট ভাই আবরার ফায়াজ ঢাকা কলেজ ছেড়ে কুষ্টিয়া চলে গেছেন। ফায়াজ সাংবাদিকদের বলেন, যে শহরে তার ভাইকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে সে শহরে থাকার ইচ্ছা নেই তার। আবরারের বাবা বরকতউল্লাহ বলেন, ছাড়পত্র নেয়ার কাজ শেষ হয়েছে। ফায়াজ এখন কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে ভর্তি হবে।
ওদিকে দুই দিন বিরতির পর মঙ্গলবার ফের আন্দোলন শুরু করেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা। সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে সন্ত্রাস-সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে বুধবার গণশপথ গ্রহণের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। এর মাধ্যমে মাঠের কর্মসূচির ইতি টানার কথা জানিয়েছেন আন্দোলনরতরা।
আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের স্থায়ী বহিষ্কারের আগ পর্যন্ত ক্লাশ-পরীক্ষা বর্জনেরও ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।