অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

কর্মী ভিসা বন্ধে ট্রাম্প প্রশাসনের ঘোষণার সমালোচনা


বিদেশীদের যুক্তরাষ্ট্রে কাজ করার সাময়িক অনুমতি দেয়া সম্পর্কিত যে সকল ভিসা কর্মসূচী রয়েছে তা বাতিলের বিষয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের ঘোষণা নিয়ে নানা সমালোচনা শুরু হয়েছে।

please wait

No media source currently available

0:00 0:07:54 0:00

সোমবার ট্রাম্প প্রশাসন বলেছেন কোভিড-১৯ এর এই সময়ে নানা সীমাবদ্ধতা ও লকডাউনের কারনে যুক্তরাস্ট্রের অর্থনীতিতে যে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে এবং আমেরিকানরা যে মাত্রায় বেকার হয়ে পড়েছেন; তা সামাল দেয়ার জন্যে বিদেশীদের কর্ম ভিসা বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

সাময়িক ভিসা বন্ধের এই সিদ্ধান্তের মধ্যে আছে কিছু গেস্ট-ওয়ার্কার প্রোগ্রাম। রয়েছে এইচ-১বি কর্মসূচী, যার আওতায় কিছু বিশেষায়িত খাত, যেমন প্রযুক্তি খাতে দক্ষ কর্মী সাময়িক কাজের জন্য বিদেশ থেকে যুক্তরাস্ট্রে আনার অনুমতি দেয়া হতো।


এছাড়া আছে এইচ-২বি কর্মসূচী যাতে অকৃষি খাতে মৌসুমী কর্মী আনা হতো। রয়েছে সংস্কৃতি বিনিময়ের ভিসা জে-১ এবং শর্ট-টার্ম ওয়ার্কার বা ক্ষুদ্র-সময়ের জন্যে কর্মী আনার ভিসা, এইচ-১বি এবং এইচ-২বি ভিসা ধারীদের স্ত্রীর জন্যে ভিসা এবং যুক্তরাষ্ট্রে থাকা বিদেশী ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্যে কর্মী আনার ভিসা।

তবে শিক্ষা খাতের ভিসা যেমন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, অধ্যাপক, গবেষক, স্কলার, যারা সাধারণত জে-১ ভিসায় আসেন তারা এর বাইরে থাকবেন। একইভাবে এইচ-২বি এর আওতায় খাদ্য প্রস্তুতকারী কর্মীরা এর বাইরে থাকবেন।

শ্রম বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, করোনা ভাইরাস মহামারীর শুরু থেকে এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে ২০ মিলিয়ন মানুষ বেকার ভাতা নিচ্ছেন। যুক্তরাষ্ট্রে ডাইভার্সিটি গ্রীন কার্ড লটারী বন্ধসহ গত এপ্রিলে সাময়িকভাবে আরো কিছু ভিসা বন্ধের কথা বলা হয়েছিল।

হোয়াইট হাউজ বলছে এই ভিসা বন্ধের পরিকল্পনা কার্যকর হলে বছর শেষে ৫ লাখ ২৫ হাজার চাকুরীর সংস্থান হবে। আর non-partisan Migration Policy Institute এর মতে এই সিদ্ধান্তের কারনে ৩ লাখ ২৫ হাজার, যাদের অভিবাসি বা সামসয়িক কর্মী হয়ে আসার কথা ছিল তারা সে সুযোগ থেকে বাদ পড়বেন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন এই সিদ্ধান্তের কারনে সবচেয়ে ক্ষতি হবে প্রযুক্তি খাতের। বিশ্বের প্রযুক্তি রাজধানী খ্যাত সিলিকন ভ্যালির বড় বড় প্রতিষ্ঠানের নির্বাহীরা এই পরিকল্পনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা বলছেন যেখানে আরো লোক আনা দরকার সেখানে ভিসা বন্ধ করার বিপুল নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।

সিলিকন ভ্যালির একটি ড্যাটা প্রাইভেসী ফার্মের প্রধান নির্বাহী অংশু শর্মা এক টুইট বার্তায় বলেন, “এইচ-১বি ভিসার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ মানে হচ্ছে আমার মতো যারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সিইও তাদেরকে ক্যানাডার মতো যেসব দেশ অভিবাসন দিতে চায় সেখানে গিয়ে অফিস খোলা এবং সেখানে লোকজন নিয়োগ করা”।

গুগল প্রধান সুন্দার পিচাই টুইট করে বলেন, “আমেরিকার অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পেছনে অভিবাসন বড় একটি কারন। এরই মাধ্যমে প্রযুক্তি খাতে বিশ্বের নেতৃত্ব আমেরিকার কাছে। গুগল কোম্পাপনীও তারই অবদান। তবে আজকের এই ঘোষণায় আমরা আশাহত হয়েছি”।

নিউইয়র্কে বসবাসকারী বাংলাদেশি আমেরিকান প্রযুক্তিবিদ মুশফিকুর রহমান বরলেন, এর প্রভাব ইতিবাচক নেতিবাচক দুটোই, তবে হতাশ হবার কিছু নেই।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি খাত অনেকাংশেই নির্ভরশীল বিদেশী কর্মীদের ওপর। এবং বিশেষজ্ঞরা বলেন এই সাফল্যের পেছনেও তাদের অবদান। বছরে ৮৫ হাজার বিদেশী কর্মী যুক্তরাস্ট্রে আসেন এই ভিসায়।

সিলিকন ভ্যালির বেশিরভাগ কর্মির মধ্যে বিশাল একটি অংশ আসেন ভারত ও চীন থেকে। বলা যায় সিলিকন ভ্যালির কম্পিউটার, অংক ও প্রকৌশল খাতের ৬০ শতাংশই বিদেশ থেকে আসা কর্মী।

বিশেষজ্ঞরা বলেন তাদের আসা বন্ধ হওয়া মানেই হচ্ছে প্রযুক্তি বানিজ্যের ক্ষতি করা। তবে তারা আশা করছেন এটি যেহেতু সাময়িক সময়ের জন্যে করা হযেছে তাই মহামারী চলে যাবার পর হয়তো আবারো আগের অবস্থায় ফিরবে সবকিছু, এটুকুই ভরসা।

XS
SM
MD
LG