সংঘাত সহিংসতা ও নানা ঘটনার মধ্যে দিয়ে ৩০শে ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হলো বাংলাদেশের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এসব সহিংসতায় ২২ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
১৬ কোটি ৫০ লক্ষ মানুষের বাংলাদেশে রবিবারের নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতির হার কম হলেও নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। এই নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ জয়লাভ করলে শেখ হাসিনা তৃতীয়বার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হবেন বলে ধারনা করা হচ্ছে।
নির্বাচনের দিন বিভিন্ন গনমাধ্যমে দেয়া সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর জয়ের ব্যাপারে দৃঢ় আশাবাদ ব্যাক্ত করেন। তিনি বলেন, “আমি বিশ্বাস করি বাংলাদেশের মানুষ আওয়ামী লীগের প্রতীক নৌকার পক্ষে ভোট দেবে এবং আমাদেরকে উন্নয়নের ধারা অব্যহত রাখার সুযোগ দেবে”।
প্রধান বিরোধী দল বিএনপির চেয়ারপার্সন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া দুর্নীতির দায়ে জেলে রয়েছেন এবং আদালতের নির্দেশে নির্বাচনে নিষিদ্ধ হয়েছেন।
খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে বিরোধীদলীয় রাজনৈতিক দলগুলো শেখ হাসিনার দল আওয়ামীলীগের সাবেক নেতা অক্সফোর্ডের ডিগ্রিধারী আইনজীবি ৮২ বছর বয়সী ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে একটি জোট করে নির্বাচনে অংশ নেয়।
নির্বাচনের দিন ঢাকার রাস্তায় মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ করা হয়। যানবাহন চলাচলে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়। নেয়া হয় কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
নির্বাচন শেষে ভোট গননা চলছে। বিরোধী দলীয় জোটের নেতারা ইতিমধ্যেই নির্বাচন নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
ঘটনাবহুল নির্বাচনের সমাপ্তি হলো নানা অভিযোগের মধ্য দিয়ে। প্রার্থীদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া, এজেন্ট বিতাড়ন আর রাতে বাক্স ভরে রাখার অভিযোগ ছিল। রাজধানী ঢাকার চিত্রও তাই। নির্বাচন কমিশন বলেছে, ভাল ভোট হয়েছে। ৪৯ জন প্রার্থী এসব অভিযোগে ভোট চলাকালে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান। এর মধ্যে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী ৪৭ জন। এজেন্টকে বের করে দেয়া কিংবা গ্রেপ্তার করা ছিল এবারের নির্বাচনে অনেক অনিয়মের একটি। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে. এম নূরুল হুদা বলেছেন, এজেন্ট না এলে কমিশনের কি করার আছে। পরিবেশ তুলনামূলক শান্ত হলেও ১৮টি জেলায় ২২ জন প্রাণ হারিয়েছেন। আহত হয়েছেন কয়েকশত। সেনাবাহিনী টহল দিয়েছে। পুলিশ, র্যাব, বিজিবি ও আনসারের উপস্থিতি ছিল লক্ষ্যণীয়। ভোট না দিতে পেরে ভোটারদের আহাজারি ছিল উল্লেখ করার মতো। ২৯৯ আসনে প্রার্থী দিয়ে চমক সৃষ্টি করেছিলেন চরমোনাইর পীর সৈয়দ রেজাউল করিম। তার দলের পক্ষ থেকে এক সংবাদ সম্মেলনে বলা হয় উৎসবের নির্বাচন শেষ পর্যন্ত আতঙ্কের নির্বাচনে পরিণত হয়েছে। নির্বাচন বর্জন করার মধ্যে সিরাজগঞ্জ-১ আসনের প্রার্থী কণ্ঠশিল্পী কনকচাঁপাও রয়েছেন। তার ভাষায়, এমন নির্বাচনতো দেখতে চাইনি।