অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলোর জন্য সবচেয়ে বিপদজনক হয়ে উঠতে পারে আইএস-খোরাসান


আইএস-খোরাসানের সাথে যোদ্ধারা, ইসলামিক স্টেটের নতুন নেতা আবু ইব্রাহিম আল-হাশিমি আল-কুরাশির প্রতি আনুগত্যের শপথ করছে। ৫ নভেম্বর ২০১৯।
আইএস-খোরাসানের সাথে যোদ্ধারা, ইসলামিক স্টেটের নতুন নেতা আবু ইব্রাহিম আল-হাশিমি আল-কুরাশির প্রতি আনুগত্যের শপথ করছে। ৫ নভেম্বর ২০১৯।

আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সৈন্য প্রত্যাহারের পর যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলোর জন্য সবচেয়ে বড় বিপদ আসতে পারে আল-কায়েদার কাছ থেকে নয় বরং ইসলামিক স্টেট সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর আফগান সহযোগী সংগঠন থেকে, যদিও তালিবানের সঙ্গে তাদের দীর্ঘদিনের সম্পর্ক রয়েছে।

বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ সন্ত্রাস দমন কর্মকর্তা আইন প্রণেতাদের বলেছেন যে উভয় সন্ত্রাসী গোষ্ঠী তাদের আঞ্চলিক নেটওয়ার্ক বিস্তৃত করার দিকে বেশি মনোযোগ দিচ্ছে। তবে এমন ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে যে আইএস-খোরাসান বা আইসিস-কে নামে পরিচিত আইএস-এর সহযোগীদের ব্যাপারে হয়ত ‘এর পরিবর্তন ঘটছে।

যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে হুমকি বিষয়ক এক শুনানিতে ন্যাশনাল কাউন্টার টেরোরিজম সেন্টারের সেন্টারের (এনসিটিসি) পরিচালক ক্রিস্টিন আবিজাইদ বলেন, "আমার নিজের উদ্বেগ খুব বিশেষভাবে আইসিস-কে ‘কে কেন্দ্র করে এবং ২৬ আগস্টের হামলার পর আইসিস-কে যে পরিমাণ কুখ্যাতি অর্জন করছে তা নিয়ে।"

আবিজাইদ জিজ্ঞাসা করেন, “এরা কি পশ্চিমের দিকে বেশি নজর দেবে? এরা কি আগের চাইতে নিজের দেশের প্রতি বেশি মনোযোগী হয়ে উঠবে?"

কাবুলের হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ২৬শে আগস্টের আত্মঘাতী বোমা হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের উদ্ধার অভিযানের শেষ দিনগুলোতে ১৩ জন আমেরিকান সেনা সদস্য এবং ১৬০ জনেরও বেশি আফগান নাগরিক নিহত হন।

আইএস-খোরাসান দ্রুতই এই হামলার দায় স্বীকার করার পর বিমানবন্দরকে লক্ষ্য করে আরও হামলা হওয়ার বিষয়ে উপর্যুপরি হুঁশিয়ার করা হয়।

গোষ্ঠীটি চার দিন পর বিমানবন্দরকে লক্ষ্য করে একটি রকেট হামলার দাবি করে এবং আইএস-খোরাসানের আরেকটি হামলা প্রতিরোধের প্রচেষ্টায় যুক্তরাষ্ট্র কাবুলে ২৯ আগস্ট ড্রোন হামলা চালায় যেখানে সাতজন শিশুসহ ১০ জন বেসামরিক লোক নিহত হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক কর্মকর্তারা মনে করেন যে আফগানিস্তানের বিভিন্ন স্থানে আইএস-খোরাসানের কমপক্ষে ২০০০ "কট্টর" যোদ্ধা রয়েছে। তবে কিছু বিদেশী গোয়েন্দা সংস্থা মনে করে যে সংখ্যাটি আরও বেশি হতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্র এবং পশ্চিমা সন্ত্রাস দমন কর্মকর্তারাও সতর্ক করেছেন যে আইএস-খোরাসান কাবুলের মতো শহরে হামলা চালানোর ক্ষমতা সহ সারা দেশে একটি স্থায়ী তত্পরতা চালানোর আবহ বজায় রেখেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা কর্মকর্তারা এবং বিশেষজ্ঞরা কিছু প্রমাণের দিকে ইঙ্গিত করেছেন যে আইএস সমর্থকরা বিশ্বের অন্য জায়গা থেকে আফগানিস্তানে যাওয়ার চেষ্টা করছে যা যুক্তরাষ্ট্রের আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তাদের চিন্তিত করে তুলেছে।

এফবিআই-এর পরিচালক ক্রিস্টোফার রে বুধবার আইনপ্রণেতাদের বলেন,"আমরা উদ্বিগ্ন যে আইসিস-কে একটি দুর্বল নিরাপত্তা পরিবেশের সুবিধা নিতে পারে।" রে সতর্ক করে বলেন, অন্য গ্রুপগুলোও আফগানিস্তানকে "নিরাপদ আশ্রয়স্থল" হিসেবে দেখতে শুরু করতে পারে যেখানে তারা অবাধে কাজ করতে পারবে।

পররাষ্ট্র দফতরের প্রাক্তন সন্ত্রাস দমন সমন্বয়কারী সহ যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা এর আগে বিদেশে আইএস-খোরাসানের অভিযান চালানোর ক্ষমতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তবে সেই আশঙ্কাগুলি আইএস-খোরাসানের নিয়তির সাথেই কখনো বেড়েছে কখনো কমেছে ।

রে এর মতো কর্মকর্তারা সতর্ক করেছেন যে আইএস-খোরাসান এবং আল-কায়েদা দ্রুত যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে নতুন হামলা চালাতে না পারলেও এখনও বিপদ রয়েছে।

XS
SM
MD
LG