অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

সকলকেই খাদ্যের অপচয় বন্ধ করতে হবে: শেখ হাসিনা 


বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকায় 'বিশ্ব খাদ্য দিবস-২০২১’ উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখছেন।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকায় 'বিশ্ব খাদ্য দিবস-২০২১’ উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখছেন।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন বিশ্বের অনেক দেশ খাদ্যের অভাবে যখন দুর্ভিক্ষ অবস্থার দিকে চলে যাচ্ছে তখন সকলকেই খাদ্যের অপচয় বন্ধ করতে হবে।

শনিবার ঢাকায় 'বিশ্ব খাদ্য দিবস-২০২১’ উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এমন মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন ও পুষ্টি চাহিদা পূরণে সবাইকে সচেতন হতে হবে এবং একই সাথে খাদ্যের অপচয় যেন না হয় সে দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। ‘আমাদের কর্মই আমাদের ভবিষ্যৎ- ভালো উৎপাদনে ভালো পুষ্টি, আর ভালো পরিবেশেই উন্নত জীবন’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে নিয়ে আজ বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে পালিত হয়েছে বিশ্ব খাদ্য দিবস।এ উপলক্ষে দেশে আলোচনা, কারিগরি সেশন, জনসচেতনতা বৃদ্ধি কার্যক্রমসহ নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন বিশ্বে একদিকে খাদ্যাভাব চলছে অপরদিকে প্রচুর খাদ্য অপচয় হচ্ছে। তিনি বলেন যে খাবারগুলো অতিরিক্ত থাকে সেটাকে অপচয় না করে আবার কিভাবে ব্যবহার করা যায় সেই ব্যবস্থার উদ্ভাবন করতে হবে। নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন ও পুষ্টি চাহিদা পূরণে সবাইকে সচেতন থাকার তাগিদ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে মানুষের খাদ্য চাহিদা নিশ্চিতে বাংলাদেশের এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদী না থাকে সে বিষয়ে সকলকে সচেতন থাকতে হবে। কৃষি ও খাদ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সফলতার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন বাংলাদেশ তার চাহিদার উদ্বৃত্ত খাদ্য উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন আয়তনের দিক থেকে বিশ্বের ৯৪তম দেশ হলেও বাংলাদেশ বর্তমানে খাদ্য উৎপাদনে বিশ্বে ১১তম স্থানে উঠে এসেছে। গত ১২ বছরে প্রাণীজ আমিষ যেমন দুধ, মাংস, ও ডিমের উৎপাদন যথাক্রমে ৫ গুণ, ৭ গুণ এবং ৪ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন বিশ্বে বাংলাদেশ এখন ধান উৎপাদনে তৃতীয়, শাকসবজি উৎপাদনে তৃতীয়, চা উৎপাদনে চতুর্থ,আম ও আলু উৎপাদনে সপ্তম এবং পেয়ারা উৎপাদনে অষ্টম অবস্থানে রয়েছে। এছাড়া অভ্যন্তরীণ মুক্ত জলাশয়ে মাছ উৎপাদনে তৃতীয় এবং ইলিশ মাছ উৎপাদনে প্রথম স্থান অর্জনে দেশের সাফল্যের কথাও তিনি তুলে ধরেন।

হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টলে বিশ্ব খাদ্য দিবসের মুল অনুষ্ঠানে কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, খাদ‌্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমসহ ঊর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা বা এফএও বিশ্ব খাদ্য দিবস উপলক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছে বিশ্বব্যাপী তিন শ’ কোটির বেশি মানুষ স্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণের সুযোগ থেকে বঞ্চিত। এছাড়া করোনাভাইরাস মহামারির কারণে যে অর্থনৈতিক মন্দা সৃষ্টি হয়েছে তাতে ইতিমধ্যে ৯০ কোটি ক্ষুধার্ত মানুষের সাথে নতুন করে ১৩ কোটির বেশি মানুষকে যোগ করার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

বাংলাদেশে এফএও এর প্রতিনিধি রবার্ট সিম্পসন বিশ্ব খাদ্য দিবসের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন করোনা মহামারির কারণে অনেক ক্ষেত্রে সামগ্রিক খাদ্য ব্যবস্থাকে ব্যাহত হয়েছে।তিনি কৃষক, মৎস্যজীবী, খাদ্য পরিবহনকারী এবং বাজারের বিক্রেতা প্রত্যেককেই যারা এই মহামারির সময়েও মানুষকে খাদ্য সরবরাহের জন্য কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছেন, তাদেরকে ধন্যবাদ জানান ও প্রশংসা করেন। পাশাপাশি নিরাপদ পরিবেশে সবাই যাতে স্বাস্থ্যকর এবং নিরাপদ খাবার পেতে পারে তা নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন রবার্ট সিম্পসন।

XS
SM
MD
LG