অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

আজকের সম্পাদকীয়: তেসরা মে’ বিশ্ব সংবাদ স্বাধীনতা দিবস


স্বাধীন-নিরপেক্ষ সংবাদ মাধ্যম ব্যতিরেকে মুক্ত-অবাধ ও গণতান্ত্রিক কোনো সমাজ ব্যবস্থার অস্তিত্ব থাকতে পারেনা ।তা সেটা সনাতনী ছাপা বা সম্প্রচার মাধ্যম অথবা ব্লগ,ওয়বেসাইট বা অন্যান্য ইন্টারনেট-ডিজিটাল মাধম্যের মতো নতুনতর সংষ্করণ- যাই হোক না কেন।সংবাদ স্বাধীনতা সর্ব সাধারণকে জ্ঞান সমৃদ্ধ রাখতে পারে এবং মানুষে মানুষে যোগাযোগের ব্যাপক ক্ষেত্রটাকে সমৃদ্ধ করতে পারে।অবাধ সংবাদ মাধ্যম দূর্নীতির মুখোশ উন্মোচিত করতে পারে,গুরুত্বপুর্ণ বিষয়াদির ইতিবাচক-নেতিবাচক দিক নিয়ে খবর দিতে পারে,আইন ও নিয়ম-নীতির ব্যাখ্যা তুল ধরতে পারে এবং ধ্যান-ধারনা,চিন্তা ভাবনার আদান প্রদান, প্রকাশ্য আলোচনায় মদত জোগাতে পারে।

এটা গুরুত্বপুর্ণ এ কারণে যে, মুক্ত স্বাধীন একটা সমাজ ব্যবস্থায় সরকার ভোটার সাধারনের রায়ের মধ্যে দিয়ে বৈধতা পেয়ে থাকে।এবং, তথ্য সমৃদ্ধ ভোটাররা সহজে প্রভাবিত হয়না- ভোট দিয়ে তারা সরকারের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে থাকে- সে কারণে।

স্পষ্টত:ই সংবাদ স্বাধীনতার সূরক্ষা বাক স্বাধীনতাকে-অভিব্যক্তির স্বাধীনতাকে নতুন তেজস্বিতায় বলিয়ান করে তোলে – যে স্বাধীনতায় বিধৃত রয়েছে তথ্যের আদান-প্রদানের অধিকার-এবং এতে করেই মানুষ তথ্য নির্ভর সিদ্ধান্ত গ্রহনে সক্ষম হয়ে থাকে।সারা বিশ্ব জুড়েই অসীম ক্ষমতার অধিকারী স্বৈরাচারীরা জানে এসব কথা আর জানে বলেই সংবাদ মাধ্যমের ওপর তারা কড়া নিয়ন্ত্রণ এঁটে রাখতে চায় – সরকারের স্বার্থ বিপদগ্রস্ত হতে পারে এমোন কোনো তথ্য ফাঁস করে দিতে পারে এরকম সাংবাদিকদের ওপর কড়াকড়ি তারা বহাল রাখতে চায়।

মে’র তিন তারিখ হলো বিশ্ব সংবাদ স্বাধীনতা দিবস।এ দিবসটির পালন প্রবর্তন করেছিলো জাতিসংঘের শিক্ষা-বিজ্ঞান ও সংষ্কৃতি সংস্থা ইউনেসকো- সংবাদ স্বাধীনতার গুরুত্ব সম্পর্কে সচতেনতা গড়ে তুলতে এবং তাবত দুনিয়ার মানুষকে স্মরণ করিযে দিতে যে,ডজন কে ডজন দেশে প্রকাশনার ওপর সেন্সর বিধিনিষেধ রয়েছে, জরিমানা করা হয়- প্র্রকাশনা বন্ধ করে দেওয়া হয়-সীল গালা লাগানো হয়- সাংবাদিকদের, সম্পাদক মন্ডলীকে, প্রকাশকদেরকে হয়রানি করা হয়, তাঁদের ওপর হামলা হয়- তাঁদের আটকিয়ে রাখা হয় এবং এমোনকি তাঁদেরকে বধও করা হয়ে থাকে।বন্ধ করা হবে বা সেন্সর করা হবে – এরকম বিপদের মুখোমুখি কোনো সংবাদ মাধ্যমের প্রতি সমর্থন প্রকাশের দিন এটি –পেশাগত দায়িত্ব পালন কালে প্রাণ দিতে হয়েছে এরকমের সাংবাদিকদের স্মরণ করার দিন এটি।এবং যে কোনো খানেরই হোক না কেন- সরকারের উদ্দেশে হূঁশিয়ারী উচ্চারণের দিন এটি- এই বলে যে, সংবাদ স্বাধীনতার সূরক্ষা নিশ্চিত করবার এবং বিশ্বজনিনভাবে স্বীকৃত বাক স্বাধীনতা নিশ্চিত করার দায়িত্ব রয়েছে তাদের।

যুক্তরাষ্ট্রের তৃতীয় প্রেসিডেন্ট এবং এ দেশের সবচেয়ে প্রভাবশালী স্থপতিদের অন্যতম টমাস জেফারসান একবার লিখিতভাবে বলেছিলেন- সংবাদপত্র বিহিন একটি সরকার না –সরকার ছাড়া সংবাদপত্র – আমাকে যদি এ দুয়ের মধ্যে একটিকে বেছে নিতে বলা হয় তবে ইত:স্তত না করেই আমি পরের বিকল্পটাকে বেছে নেবো।

আমাদের সরকারের বুনিয়াদ হলো এবং এক্ষেত্রে, সর্বাগ্রে, জনগনের মতামতের ঐ অধিকারটাকেই অক্ষুন্ন রাখা।

XS
SM
MD
LG