গতকাল সারারাত রাজ্য প্রশাসনের সদর দপ্তর নবান্নে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেনা প্রত্যাহারের দাবিতে অনড় তিনি। রাজ্যের পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজখবর নিতে তাঁর সঙ্গে ফোনে কথা বলেন কংগ্রেস নেতা আহমেদ পটেল। ডিজি এবং কলকাতার পুলিশ কমিশনারও মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন। রাত ১টা ৪৮ মিনিটে নবান্ন ছাড়েন ডিজি সুরজিৎ কর পুরকায়স্থ। রাত ৩টে নাগাদ মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে আসেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার। রাজ্যের টোল প্লাজায় সেনা মোতায়েন নিয়ে মমতা বন্দোপাধ্যায় বলেন, রাজ্যের ৮০ শতাংশ জেলায় সেনা নেমেছে। সেনা অভ্যুত্থান। প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত নবান্ন ছাড়ব না।সেনাবাহিনীর বক্তব্য, এটা তাদের রুটিন কর্মসূচি। কখনও যুদ্ধের পরিস্থিতি হলে রসদ ও পানীয় জল বিভিন্ন ছাউনিতে পৌঁছনোর জন্য প্রচুর মালবাহী গাড়ির প্রয়োজন হয়। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে জওয়ানরা কত গাড়ি নিতে সক্ষম, দু’দিন ধরে পূর্ব ভারতের সব রাজ্যে সমীক্ষার মাধ্যমে তারই হিসেবনিকেশ চলছে। পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি অসম, অরুণাচলপ্রদেশ, মণিপুর, নাগাল্যান্ড, মিজোরাম— সর্বত্রই একাধিক জায়গায় সেনার এই কর্মসূচি চলছে। প্রতিটি দলে ৫ থেকে ১০ জন নিরস্ত্র জওয়ান রয়েছেন। সেনার দাবি, কলকাতা ও পশ্চিমবঙ্গ পুলিশকে জানিয়েই তারা এই সমীক্ষা চালাচ্ছে। প্রথমে তারা ২৮ নভেম্বর পশ্চিমবঙ্গে এই সমীক্ষা চালানোর অনুমতি নিয়েছিল। পরে পুলিশের অনুরোধেই সেই তারিখ পিছিয়ে ১ ডিসেম্বর করা হয় বলে সেনা জানিয়েছে।সেনা মোতায়েন ইস্যুতে সংসদে সরব হয় তৃণমূল। সমর্থন ছিল কংগ্রেসের। রাজ্য সরকারকে না জানিয়ে কেন সেনা মোতায়েন হয়েছে, প্রশ্ন করেন তৃণমূলের লোকসভার নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়।এদিকে তৃণমূলকে পাল্টা আক্রমণ করে কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী মনোহর পর্রীকরের দাবি, এটা রুটিন কর্মসূচী, এব্যাপারে রাজ্যকে আগে থেকে জানিয়েছিল সেনা। পরে পুলিশের অনুরোধে দিন বদল হয়। তিনি বলেন, এখন যা হচ্ছে তা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। পাশাপাশি সংসদের দুই কক্ষে রাজ্যে সেনা মোতায়েন নিয়ে সরব তৃণমূল। এই ইস্যুতে তৃণমূলের পাশে দাঁড়িয়ে কেন্দ্রের থেকে জবাবদিহি দাবি করেছে অন্যান্য বিরোধী দলগুলোও।