অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

কক্সবাজারের আশ্রয়শিবির থেকে পালানোর সময় ১৩৬ জন রোহিঙ্গা আটক


কক্সবাজারের উখিয়ার আশ্রয়শিবির থেকে পালানোর সময় আটক একদল রোহিঙ্গা।
কক্সবাজারের উখিয়ার আশ্রয়শিবির থেকে পালানোর সময় আটক একদল রোহিঙ্গা।

বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলার উখিয়া থানার পুলিশ সোমবার (৪ এপ্রিল) উখিয়া উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজার ও আশপাশের গ্রামে অভিযান চালিয়ে ১৩৬ জন রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আটক করেছে। তারা সবাই উখিয়ার কুতুপালং আশ্রয়শিবিরের শরণার্থী।

এ বিষয়ে উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহমেদ সনজুর মোরশেদ ভয়েস অফ আমেরিকার এই প্রতিবেদককে বলেন, “কাজের সন্ধানে শরণার্থীরা আশ্রয়শিবির ছেড়ে দেশের বিভিন্ন এলাকায় আত্মগোপন করছেন। যদিও আশ্রয়শিবিরে শরণার্থীদের জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য ও ত্রাণসামগ্রী বরাদ্দ রয়েছে”।

সনজুর মোরশেদ জানান, ১৩৬ জন রোহিঙ্গার সবাই পুরুষ এবং বয়সে তরুণ-যুবক। বাড়তি আয়–রোজগারের জন্য এই শরণার্থীরা আশ্রয়শিবির ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছিলেন।

বিকেলে আটক শরণার্থীদের কক্সবাজারের শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) কার্যালয়ের কর্মকর্তা ও কুতুপালং আশ্রয়শিবিরের ইনচার্জের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তিনি শরণার্থীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিশ্চিত করবেন।

উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা প্রতিরোধ কমিটির নেতারা বলেন, প্রতিদিন সকালে উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন আশ্রয়শিবির থেকে হাজার হাজার রোহিঙ্গা পুরুষ কাজের সন্ধানে বেরিয়ে পড়েন। তারা উখিয়া, টেকনাফ, রামু ও কক্সবাজার সদরের বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে কাজ করে বাড়তি টাকা উপার্জন করেন। কেউ কেউ উপার্জনের টাকা জমিয়ে নানা উপায়ে বিদেশে পাড়ি জমান। অনেক রোহিঙ্গা নারী–শিশু মানব পাচারকারীর খপ্পড়ে পড়ে পাচার হয়ে যাচ্ছেন।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি মহেশখালী ও টেকনাফ সমুদ্র উপকূল থেকে ট্রলার বোঝাই করে মালয়েশিয়া পাচারের সময় তিন শতাধিক রোহিঙ্গা নারী–পুরুষ–শিশুকে উদ্ধার করেছে আইনশৃংখলা বাহিনী।

কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয়শিবিরগুলো কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে ঘেরা। আশ্রয়শিবিরের ভেতর থেকে কোনো শরণার্থী যেন পালিয়ে কোথাও যেতে না পারেন, সে জন্য রয়েছে পুলিশসহ আইনশৃংখলা বাহিনীর কঠোর নজরদারি। এরপরও প্রতিদিন রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবির থেকে রোহিঙ্গারা পালিয়ে কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, ঢাকাসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ছেন। তাদের কেউ কেউ মানব পাচারকারী চক্রের দালালদের খপ্পড়েও পড়ছেন।

বর্তমানে উখিয়া ও টেকনাফের ৩৪টি আশ্রয়শিবিরে নিবন্ধিত রোহিঙ্গার সংখ্যা সাড়ে ১১ লাখ। এর মধ্যে ৮ লাখ এসেছেন ২০১৭ সালের ২৫ অগাষ্টের পরের কয়েক মাসে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সে দেশের সেনাবাহিনীর নিপীড়ন ও গণহত্যার শিকার হয়ে।

XS
SM
MD
LG