অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

আফগানিস্তানের মধ্যাঞ্চলে প্রচন্ড লড়াই চলছে


ধুন্দুমার লড়াই চলছে আফগানিস্তানের মধ্যাঞ্চলে। সরকারী কর্মকর্তারা ব’লছেন- ইসলামপন্থী তালেবানরা সেখানে গুরুত্বপুর্ণ দু’টি জেলা সদর কব্জা করে নিয়েছে এবং আশপাশের সরকারী চৌকিগুলো, অবস্থানসমুহের ওপর জোরেশোরে আঘাত হানছে তারা।

দূর্বৃত্তরা আজ রবিবার ভোরে ঘোর প্রদেশের তেওয়ারা অঞ্চলে প্রচন্ড শক্তিতে অভিযান চালিয়েছে – এর আগে তারা পার্শ্ববর্তী উত্তরাঞ্চলের ফারিয়াব প্রদেশের সীমান্ত সংলগ্ন কোহিস্তান জেলা দখল ক‘রে নেয় বলে জানা গিয়েছে আফগান সূত্রে এবং তালেবান দলের পক্ষেও সরকারী সূত্রে বলা হয়েছে ওই একই কথা।

ঘোর প্রদেশের গভর্ণর নাসীর খাযে ভয়েস অফ এ্যামেরিকাকে জানান-তেয়ারায় কাক ভোরের হামলা অভিযানে যোগ দেয় তালেবান পক্ষের হাজার হাজার লড়াকূ এবং পরাস্ত হবার আগে সরকারী বাহিনী প্রচন্ড শক্তিতে প্রতিরোধ গড়ে তোলে।

ফারিয়াবে জনৈক সরকারী মূখপাত্র ভয়েস অফ এ্যামেরিকাকে জানান- প্রায় সাত শ’র মতো তালেবান দূর্বৃত্ত কোহিস্তানের ওপর রাতভরের ঐ হামলা অভিযানে অংশ নেয় এবং কাল বিলম্ব না ক‘রেই পুলিশ সদর কার্যালয়সহ গুরুত্বনপূর্ণ স্থাপনাগুলো তারা কব্জা করে নেয় এবং তামাম এলাকাজুড়ে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ কায়েম করে ফেলে।

আব্দুল করিম ইউরেশ বলেন- লে’লাশ নামেও পরিচিত একটি এলাকায়, প্রত্যন্ত অঞ্চলবর্তী একটি গ্রামে শ’ দু’য়ের মতো আফগান নিরাপত্তা রক্ষি কোনঠাশা হয়ে পড়েছে এবং জরূরী ভিত্তিতে তাদের বাড়তি সৈন্যের সহায়তার প্রয়োজন হ’চ্ছে।

আফগান সংবাদ মাধ্যমের খবরাখবরে প্রকাশ ফারিয়াবের অপর আট অঞ্চলেও দূর্বৃত্তরা সরকারী অবস্থানগুলোর ওপর আঘাত হেনে চলেছে।

তালেবান মূখপাত্র যাবিউল্লাহ মুজাহীদ দাবি করেছেন- বিদ্রোহি লড়াকুরা বিপুল সংখ্যায় সরকারী বাহিনীর লোকক্ষয় ঘটিয়েছে এবং দু’টি অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ কব্জার লড়াইয়ে কয়েক ডজন সরকারী সৈন্যকে হত্যা করেছে তারা।

নিরপেক্ষ কোনো সূত্র থেকে এ দাবির যাথার্থ যাচাই করার কোনো উপায় নেই এবং আফগান কর্তারাও হতাহতের সংখ্যা নিয়ে মুখ খুলছেন না – শুধু এটুকুই বলছেন যে, ঐ অঞ্চলে সংঘাত বন্ধ হয়নি, চলছে এখনো।

তালেবান লড়াকুরা উত্তরাঞ্চলের কূনদুয প্রদেশের খানাবাদ অঞ্চলও অবরোধ করে ফেলেছে। আফগান কর্মকর্তারা ইতিমধ্যে নিশ্চিত করেই জানিয়েছেন- বিদ্রোহি লড়াকুরা উত্তরপূর্বাঞ্চলের পার্শ্ববর্তী বাদাগশাঁ প্রদেশে হামলা চালিয়ে কমসে কম ৩৫ সরকারী সৈন্যকে হত্যা করেছে শুক্রবারদিন।

দক্ষিনের সংঘাত-বিক্ষুদ্ধ হেলমান্ড প্রদেশেও সহিংসতার অন্ত নেই। এ্যামেরিকার একটি ড্রোন উড়োজাহাজ সেখানে ভুলবশত: আঘাত হেনে অন্যুন পনেরো সংখ্যক আফগান নিরাপত্তা রক্ষির প্রাণবিনাশ হটিয়েছে, শুক্রবার গেরেশেক অঞ্চলের সংঘাত চলাকালে।

গোটা দেশ জুড়েই তালেবানরা তাদের বিদ্রোহ তৎপরতা জোরেশোরে বাড়িয়ে তুলছে আর এদিকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন বহু প্রত্যাশিত তাদের আফগান নীতিমালার সর্বাত্মক পর্যালোচনার কাজ এখন সম্পন্ন করতে চলেছেন প্রায়।

নতুন নীতিমালায় যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক তৎপরতা জোরেশোরে বাড়িয়ে তোলার বিষয় শামিল হতে পারে- আরো বেশ কয়েক হাজার সৈন্য বর্তমান বাহিনীর সঙ্গে যুক্তও হতে পারে যার মদত নিয়ে আফগান নিরাপত্তা বাহিনী বিদ্রোহি লড়াকুদের অর্জিত সাফল্যকে উল্টোমুখি প্রবাহে পর্য্যবসিত করতে সক্ষম হতেও পারে হয়তোবা।

চলতি বছরের লড়াই মরশুম শুরুর আগে আফগান সরকারের হাতে ছিলো গোটা দেশের ষাইট শতাংশ পরিমান ভূখন্ড – বাকিটা ছিলো তালেবানদের দখলে বা তাদের প্রভাবাধীনেই- যুক্তরাষ্ট্রের তরফের সামরিক মূল্যায়নে বলা হয়েছে সেকথাই।

এখন ট্রাম্প প্রশাসন আফগানিস্তানের প্রতিবেশি দেশ পাকিস্তানের ব্যাপারেও বেশ কড়া দৃষ্টিভঙ্গি নিতে পারে বলেই মনে হচ্ছে- আফগানিস্তানের সামরিক অচলাবস্থার জন্যে ওয়াশিংটন হয়তোবা পাকিস্তানকেই দোষের ভাগি করতে চাইবে, তেমনটিই প্রতিয়মান হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক কর্তাব্যক্তিরা মনে করেন,তালেবান লড়াকূদের দল এবং তাদের ভয়াল মিত্রদল হাক্কানী নেটওয়ার্ক পাকিস্তানী ভূখন্ডে অবস্থিত তাদের যেসব অভয় আশ্রয় রয়েছে সেগুলো লাগাতার ব্যবহার করে চলেছে আফগান দূর্বৃত্তায়ন প্রক্রিয়া লাগাতার বহাল রাখার প্রক্রিয়ায়। ইসলামাবাদ কিন্তু এ অভিযোগের দায়ভাগের কথা নিরন্তর অস্বীকার করে চলে।

এই গেলো শুক্রবার, পরশুদিনই, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জিম ম্যাটীস সাংবাদিকদের বলেন – প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় পাঁচ কোটি ডলার পরিমান অর্থ সামরিক সহায়তা বাবদে পাকিস্তানকে প্রদান করা হতে নিবৃত্ত রয়েছে এ কারণে যে দেশটি হাক্কানীদের তৎপরতা রূখতে যথেস্ট উদ্যোগ নিচ্ছেনা।

please wait

No media source currently available

0:00 0:04:55 0:00

XS
SM
MD
LG